নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা ধীরে ধীরে উন্নতি করছি। তাড়াহুড়া করছি না। ব্লু ইকোনমি বাস্তবায়নে বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা বিশাল সমুদ্রসীমার যথাযথ ব্যবহার করে দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে কাজে লাগাতে চাই।
আরও পড়ুন: কাল সংবাদ সম্মেলন করবেন প্রধানমন্ত্রী
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘টেরিটোরিয়াল ওয়াটারস অ্যান্ড মেরিটাইম জোনস অ্যাক্ট, ১৯৭৪ (অ্যাক্ট নং ২৬, ১৯৭৪)’ প্রণয়নের ৫০ বছর পূর্তিতে সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের তরুণ সমাজ আছে। এরা অত্যন্ত মেধাবী। তাদের পথ দেখালে বীরদর্পে সামনে এগিয়ে যাবে। আমরা সেটাই চাই। জাতির পিতা যেখানে রেখে গেছেন, বাংলাদেশ সেখানে থমকে গিয়েছিল। আমরা আবার সেখান থেকে শুরু করে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করেছি।
আমরা চাই, ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ। আধুনিক প্রযুক্তি ও জ্ঞান সম্পন্ন নাগরিক গড়ে তুলতে চাই। আমরা বিশ্বের বুকে মাথা উচু করে দাঁড়াবো, মর্যাদা নিয়ে চলবো।
আরও পড়ুন: সব বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনা
তিনি বলেন, সব পরিকল্পনা ও কর্মসূচি নিয়ে রেখেছি। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে সময়োপযোগী করে আমাদের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। খনিজ সম্পদসহ সব আমাদের উত্তোলন করতে হবে এবং কাজে লাগাতে হবে।
এজন্য যথাযথ বিনিয়োগও প্রয়োজন। এজন্য আলাপ-আলোচনা করছি। আন্তর্জাতিক টেন্ডার দিয়েছি। আমরা বিশাল সমুদ্রসীমার যথাযথ ব্যবহার করে দেশের মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে কাজে লাগাতে চাই।
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন। আমাদের ভৌগলিক অবস্থানের কারণেই বিনিয়োগ করে আপনারা লাভবান হবেন।
আরও পড়ুন: বায়ুদূষণে দ্বিতীয় ঢাকা
বিভিন্ন দেশের যুদ্ধের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, শান্তি প্রগতি ও উন্নতির পথ দেখায়। জাতিকে অগ্রগরমান করে, উন্নত জীবন দেয়। আমরা সেজন্য শান্তি চাই। যুদ্ধ চাই না। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় সেটি আছে।
আমরা কারো সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হবো না। তবে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার সামর্থ্য থাকতে হবে। ফোর্সেস গোল তৈরি করেছি। সে অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি।
সমুদ্র এলাকার উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, বিশাল সমুদ্র এলাকায় ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ চলছে। মাতারবাড়িতে ডিপ সি পোর্ট করেছি, পায়রা সি পোর্ট করছি। এটা থেকে সমুদ্র বেশি দূরে না। এর একটা ভবিষ্যৎ আছে।
আরও পড়ুন: জাবিতে ভর্তি পরীক্ষা শুরু আজ
তিনি বলেন, আমাদের ভৌগলিক কারণে নৌবাহিনী কতটা গুরুত্বপূর্ণ, জাতির পিতা তা অনুভব করেছেন। আমি এ নৌবাহিনীকে ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীতে রূপান্তর করেছি। অনেকে বলে, এটা কী দরকার ছিল। আমরা ছোট দেশ। আমরা কিন্তু জনসংখ্যার দিক থেকে অনেক বড়।
শেখ হাসিনা বলেন, ৭৫’র পরের সরকার আর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বিশাল সমুদ্রসীমায় আমাদের অধিকার নিয়ে কেউ কোনো কথা বলেনি, কোনো রকম উদ্যোগ নেয়নি।
আমাদের স্থল সীমানা চুক্তিও জাতির পিতা করে দিয়ে যান। সংবিধান সংশোধন করে সে চুক্তি বাস্তবায়ন করে দিয়ে যান। পরে সেটি আর কার্যকর হয়নি।
আরও পড়ুন: পুরানা পল্টনে আগুন
২১ বছর পর আমরা ক্ষমতায় আসি এবং এ নিয়ে কাজ করি। এটি করতে হয় গোপনীয়ভাবে। সবার সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয়, এ নীতি মেনে চলেছি। সেই সাথে আমাদের অধিকারটা আদায়েও সচেতন হই, উদ্যোগ নিই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিশাল সমুদ্রসীমা আছে। এটি দেশের অর্থনীতিতে অনেক অবদান রাখতে পারবে। আজকের দিনের এই সেমিনার আমাদের সামুদ্রিক সম্পদের ব্যবহার ও সব সংস্থার সাথে সহযোগিতা এবং সহায়ক ভূমিকা পালনে সক্ষম হবে। সমুদ্রপথ সবাই ব্যবহার করছে এবং ব্যবসা বাণিজ্য করে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ২৫
এ পর্যন্ত কোনো সংঘাত হয়নি, শান্তিপূর্ণ বাণিজ্যপথ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এটি অব্যাহত থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি। কখনোই সংঘাতপূর্ণ পরিবেশ হবে না। আমাদের পররাষ্ট্রনীতির মূলনীতি, সবার সাথে বন্ধুত্ব ধারণ করেই আমরা এগিয়ে যাবো।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এ সময় বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানসহ সরকারের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সান নিউজ/এনজে