নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে মেডিকেল সেক্টরে মাফিয়া চক্র কাজ করে। এই মাফিয়া চক্র ওষুধসহ মেডিকেল উপকরণ সরবরাহে রি-এজেন্ট হিসেবে কাজ করে।
আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪
রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ইউনাইটেড হাসপাতালে শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় হওয়া রিটের শুনানিতে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। এ মামলায় পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিন ধার্য করেছেন আদালত।
হাইকোর্ট বলেন, স্বাস্থ্যখাত নিয়ে সবার সচেতন হওয়া প্রয়োজন। শুধু আদেশ দিলাম, পত্রিকায় নাম আসল, এটা আমরা চাই না। ১৮ কোটি মানুষের উপকার হবে এমন কিছু করতে চাই।
শিশু আয়ানের অ্যাজমা সমস্যা থাকার কথা জানার পরও কেন চিকিৎসকরা অপারেশনের জন্য এতো তাড়াহুড়া করলেন? আয়ানের সুন্নতে খৎনা করার সময় যে পরিমাণ ওষুধ ব্যবহার করা হয়েছে, হার্টের বাইপাসেও এতো ওষুধ লাগে না।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধার বালুচরে কৃষকের সবুজ স্বপ্ন
এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। তার সাথে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ। রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাড. এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম।
এ মামলায় দেশের স্বাস্থ্যখাত নিয়ে তথ্য ও আইন তুলে ধরার জন্য অ্যাড. মোহাম্মদ শিশির মনিরকে ইন্টারভেনর হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন আদালত।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ জানুয়ারি শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আইওয়াশ ও হাস্যকর বলে মন্তব্য করেন হাইকোর্টের এই বেঞ্চ। এ সময় আদালত বলেছিলেন, দায় এড়ানোর জন্য তারা এ ধরনের রিপোর্ট দাখিল করেছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি আন্দোলন করতে ব্যর্থ
তার আগের দিন ২৮ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদফতরের দাখিল করা প্রতিবেদনের মতামত অংশে বলা হয়, ৫ বছর ৮ মাস বয়সী আয়ানের ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা ছিল। এই বয়সে অটো পিক বা এ্যালার্জিক অ্যাজমা হয়ে থাকে। ব্রঙ্কিায়াল অ্যাজমা এ্যালার্জেন (অতি সংবেদনশীলকারক) দিয়ে হয়।
অস্ত্রোপচারের আগে তাকে এনেসথেসিয়া বা সংবেদনহীন করতে প্রয়োগ করা ইনজেকশন প্রোফোফল মারাত্মক এলার্জি প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে, যা শ্বাসতন্ত্র সংকোচিত হয়ে বা শ্বাসনালীর আশপাশের পেশি শক্ত হয়ে খিঁচুনি হয়ে থাকতে পারে, যা এনেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ ম্যানেজ করেছেন।
এতে আরও বলা হয়, সিপিআর এবং ওষুধ দিয়ে (মেডিকেশন) দিয়ে আয়ানের হৃৎস্পন্দন ফিরিয়ে আনতে ১০ মিনিটের মত সময় লেগেছিল, এতে হাইপক্সিক ব্রেইন ইনজুরি (মস্তিষ্কে অক্সিজেন প্রবাহ বন্ধ হয়ে মৃত্যু) হয়ে মৃত্যু হতে পারে।
আরও পড়ুন: শীত কমার আভাস
তখন সিটি স্ক্যান বা ইসিজি করলে হাইপক্সিক ব্রেইন ইনজুরি হয়েছিল কিনা, তা জানা যেত। তাছাড়া সিপিআর কারণে পাঁজরের হাড়ও ভেঙে যেতে পারে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
মতামত অংশে আরও বলা হয়, আয়ান চাইল্ডহুড অ্যাজমা সমস্যায় ভুগছিল। শ্বাসকষ্টের জন্য তাকে মাঝে মাঝে নেবুলাইজার ও ইনহেলার দিতে লাগত। সুন্নতে খৎনার অপারেশনের আগে ওয়েটিং রুমে তাকে নেবুলাইজার ও ইনহেলার দেয়া হয়েছিল। বিষয়টি চিকিৎসকদের জানানো হয়নি। এছাড়া আয়ানের অপারেশনের সময় স্বাভাবিক রক্তপাত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
আরও পড়ুন: গাছচাপা পড়ে আ’লীগ নেতার মৃত্যু
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের পক্ষে উপ-পরিচালক (আইন) ডা. পরিমল কুমার পাল ১৫ পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদন জমা দেন।
উল্লেখ্য, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে রাজধানীর ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুন্নতে খৎনা করাতে গিয়ে ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয় শিশু আয়ানের। এ ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই সাথে প্রতিকার ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।
সান নিউজ/এনজে