নিজস্ব প্রতিবেদক:
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিমতল্লার বায়তুল সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণে দগ্ধ পাঁচজন এখনো রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে কিছুটা উন্নতির দিকে। তবে তারা শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
গত ০৪ সেপ্টেম্বর রাতের ওই বিস্ফোরণে দগ্ধ অন্তত ৪০ জনের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ৩৭ জনকে ভর্তি করা হয় শেখ হাসিনা বার্ন ইন্সটিটিউটে। তাদের মধ্যে ৩১ জন মারা গেছেন এবং একজন মামুনকে (৩০) ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
চিকিৎসাধীন বাকি পাঁচজন হচ্ছেন, ফরিদ (শ্বাসনালীসহ ৫০ শতাংশ পোড়া), মো. কেনান (শ্বাসনালীসহ ৩০ শতাংশ পোড়া), সিফাত (শ্বাসনালীসহ ২২ শতাংশ পোড়া), আবদুল আজিজ (শ্বাসনালীসহ ৪৭ শতাংশ পোড়া) এবং আমজাদ (শ্বাসনালীসহ ২৫ শতাংশ পোড়া)।
শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বেলা সোয়া ১১টার দিকে ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. পার্থ শংকর পাল জানান, আইসিইউতে থাকা পাঁচজনের কেউই শঙ্কামুক্ত নন। তবে, তাদের শারীরিক অবস্থাও আগের চেয়ে কিছুটা উন্নতির দিকে। কিন্তু শ্বাসনালী দগ্ধ হওয়ায় তাদের শঙ্কামুক্ত বলা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, ‘সারাবিশ্বে দগ্ধদের যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়, এখানেও একই ধরনের চিকিৎসা হচ্ছে। তাদের চিকিৎসার কোনো ঘাটতি হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী সব সময় দগ্ধদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতেও তিনি খোঁজ-খবর নিয়েছেন।’
গত ০৪ সেপ্টেম্বর রাতে বাইতুস সালাত জামে মসজিদে এশার নামাজের সময় হঠাৎ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে মসজিদের চারপাশে। এ সময় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট। প্রাথমিকভাবে এসি বিস্ফোরণে আগুন লাগার ধারণা করা হলেও গ্যাসের লিকেজ থেকে এই দুর্ঘটনা হতে পারে বলে জানিয়েছিল ফায়ার সার্ভিস। তারা জানিয়েছে, আগুন নেভানোর সময় জমে থাকা পানিতে বুদবুদ দেখা যায়।
ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া ৩১ জন হলেন, মসজিদের ইমাম আবদুল মালেক (৬০), মুয়াজ্জিন দেলোয়ার হোসেন (৪৮) ও তার ছেলে জুনায়েদ (১৭), আবুল বাশার মোল্লা (৫১), মনির ফরাজী (৩০), ইমরান (৩০), দুই ভাই জোবায়ের (১৮) ও সাব্বির (২১), মুন্সিগঞ্জের কুদ্দুস ব্যাপারী (৭২), ফতুল্লার আব্দুল হান্নান (৫০), চাঁদপুরের মোস্তফা কামাল (৩৪), পটুয়াখালীর গার্মেন্টসকর্মী রাশেদ (৩০), নারায়ণগঞ্জের হুমায়ুন কবির (৭২), পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর জামাল আবেদিন (৪০) ও মো. নজরুল (৫০), কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার শেখ ফরিদ (২১), চাঁদপুরের মাইনুদ্দিন (১২), ফতুল্লার জয়নাল (৩৮), লালমনিরহাটের গার্মেন্টসকর্মী নয়ন (২৭), নিজাম (৩৪), নারায়ণগঞ্জের গার্মেন্টসকর্মী ইব্রাহিম বিশ্বাস (৪৩), কলেজ শিক্ষার্থী মো. রিফাত (১৮) ও রাসেল (৩৪), খুলনার কাঞ্চন হাওলাদার (৫০), শিশু জুবায়ের (৭), বাহার উদ্দিন (৫৫), নাদিম (৪৫), শামীম (৪৫), জুলহাস, মোহাম্মদ আলী মাস্টার (৫৫) এবং আব্দুল সাত্তার (৪০)।
হতাহতরা সবাই তল্লা এলাকার বাসিন্দা।
সান নিউজ/ এআর