নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের মাথায় অস্ত্রোপচারের সেলাই কাটা হয়েছে। তার শরীরের অবশ থাকা ডানপাশেরও উন্নতি হয়েছে। শারীরিক অবস্থার উন্নতি ধারা অব্যাহত আছে উল্লেখ করে তিনি অনেকটা আশঙ্কামুক্ত বলে মনে করছেন ওয়াহিদার চিকিৎসকরা।
শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে ইউএনও ওয়াহিদার মাথায় অস্ত্রোপচারের জায়গায় সেলাইগুলো কেটে ড্রেসিং করা হয়।
হাসপাতালের নিউরোট্রমা বিভাগের প্রধান ও ওয়াহিদার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ডা. মোহাম্মদ জাহেদ হোসেন বলেন, ‘অপারেশনের জায়গাগুলো এখন ভালো আছে। তার ব্লাডপ্রেসার ও সেন্সও স্বাভাবিক রয়েছে। তার স্বাস্থ্যগত আর কোনো জটিলতা নেই। উন্নতির বাকি রয়েছে শুধু ডানহাত ও ডানপা।’
‘তার অবশ ডানহাতের কনুই পর্যন্ত অংশের উন্নতি হয়েছে। তিনি ডানহাতের কনুই পর্যন্ত তুলতে ও নাড়তে পারছেন। তবে, এখনও ডানপা নাড়াতে পারছেন না। আরও উন্নতির জন্য এখানে দিনে তিন-চারবার তার ফিজিওথেরাপি চলছে।’
ডা. জাহেদ হোসেন বলেন, ‘মোটামুটি তিনি এখন শঙ্কামুক্ত। তবে যেহেতু একজন রোগী হাসপাতালে আছেন, যেকোনো সময় তার যেকোনো জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তবে, এটা বলতে পারি, তিনি ভালো আছেন। যেহেতু তার ফিজিওথেরাপি চলছে, সেহেতু তাকে আরও কিছুদিন পর্যবেক্ষণে রাখতে হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখনও তার সব ধরনের খাবার অ্যালাও করিনি। তবে তিনি সলিড খাবার খাচ্ছেন।’
ডা. মোহাম্মদ জাহেদ হোসেন বলেন, ‘আমরা এখনও তাকে বেডে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেইনি। আপাতত কেবিনে স্থানান্তর করছি না কারণ, তাকে কেবিনে স্থানান্তরের পর অনেক বেশি ভিজিটর এখানে ভিড় করবেন। সেক্ষেত্রে তার ইনফেকশনের শঙ্কা বেড়ে যায়। সেজন্য আমরা তার শারীরিক অবস্থা বুঝে আরও দু-একদিন পরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো।’
গত ০২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত আড়াইটায় সরকারি বাসভবনের ভেন্টিলেটর ভেঙে বাসায় ঢুকে ইউএনও ওয়াহিদা ও তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখের ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। ইউএনওর মাথায় গুরুতর আঘাত এবং তার বাবাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়।
পরে ইউএনও ও তার বাবাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। ওয়াহিদার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে আনা হয়। রাতে তার মাথায় অস্ত্রোপচারের পর থেকে আইসিইউতে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে থাকার পর সোমবার দুপুরে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওয়াহিদা খানমের শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে এখন ভালো এবং স্থিতিশীল। তার বাবা ওমর আলী শেখ এখনো রমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এ ঘটনায় ইউএনওর ভাই শেখ ফরিদ অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে ঘোড়াঘাট থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেন। তিনজন মূল আসামিকে গ্রেপ্তার ও কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
সান নিউজ/ এআর