নিজস্ব প্রতিবেদক: দক্ষিণ এশিয়ায় দুর্নীতির ব্যাপকতা ও গভীরতা উদ্বেগজনক বলে জানিয়েছে বার্লিন ভিত্তিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই)। সংস্থাটির দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বিশ্বের ১৮০টি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশ ১০ম অবস্থানে রয়েছে। তার আগের বছর এ তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১২তম।
আরও পড়ুন: একই মঞ্চে আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জাপা
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে ধানমন্ডিতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর কার্যালয়ে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান জানিয়েছেন, টিআইয়ের ‘দুর্নীতির ধারণা সূচক ২০২৩’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- টিআইবির চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল, টিআইবির উপদেষ্টা (নির্বাহী ব্যবস্থাপনা) অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের, পরিচালক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) শেখ মনজুর-ই-আলম, সমন্বয়ক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: দ্বাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু
টিআই বলছে, ১০০ স্কোরের মধ্যে বাংলাদেশ পেয়েছে ২৪, যা গতবারের চেয়ে ১ পয়েন্ট কম। গতবার বাংলাদেশের পয়েন্ট ছিল ২৫। করাপশন পারসেপশনস ইনডেক্স বা সিপিআই ২০২৩ অনুযায়ী বাংলাদেশের স্কোর ২৪, যা গত ১২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ২ ধরনের স্কোরের হিসাবেই ২০২২ এর তুলনায় এ বছর বাংলাদেশের অবস্থান ২ ধাপ অবনমন হয়েছে। স্কোর প্রাপ্তির সর্বোচ্চ ক্রম অনুসারে ১৮০ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৯তম এবং নিম্নক্রম অনুসারে ১০ম স্থানে রয়েছে।
আরও পড়ুন: অপ্রয়োজনীয় ভবন নির্মাণ করা হবে না
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নিম্নক্রম অনুযায়ী বাংলাদেশের সাথে যৌথভাবে ১০ম অবস্থানে রয়েছে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, ইরান, লেবানন ও জিম্বাবুয়ে। এবারও আফগানিস্তানের পর দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
এ বছর সিপিআই অন্তর্ভুক্ত ১৮০ টি দেশের মধ্যে ৫৫ টি দেশের স্কোর গত বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পেলেও ৬৩ টি দেশের স্কোর কমেছে এবং ৬২টি দেশের স্কোর অপরিবর্তিত রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের বিচার প্রক্রিয়া অত্যন্ত স্বচ্ছ
তিনি আরও জানান, সূচকের ১০০ স্কেলে কোনো দেশই শতভাগ স্কোর অর্জন করেনি। এ বছরও বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ দেশের স্কোর ৫০’র নিচে। বিশ্বের ৮০ শতাংশ জনগোষ্ঠীই গড় স্কোর ৪৩’র চেয়ে কম স্কোর প্রাপ্ত দেশসমূহে বসবাস করে।
এ সূচকে ৯০ স্কোর পেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসাবে তালিকার শীর্ষে রয়েছে ডেনমার্ক। ৮৭ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় ফিনল্যান্ড ও ৮৫ স্কোর পেয়ে তৃতীয় নিউজিল্যান্ড।
২০২৩ সালে ১১ স্কোর পেয়ে তালিকার সর্বনিম্নে অবস্থান করছে সোমালিয়া। নিম্নক্রম অনুযায়ী ১৩ স্কোর পেয়ে যৌথভাবে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দক্ষিণ সুদান, সিরিয়া ও ভেনিজুয়েলা। ১৬ স্কোর পেয়ে তৃতীয় সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে ইয়েমেন।
আরও পড়ুন: সন্ধ্যায় বিএনপির সংবাদ সম্মেলন
ইফতেখারুজ্জামান জানান, দক্ষিণ এশিয়ায় নেপাল ও পাকিস্তানের স্কোর যথাক্রমে ১ ও ২ পয়েন্ট উন্নতি হয়েছে। অবশিষ্ট ৫ টি দেশের স্কোরই ১-৪ পয়েন্ট অবনমন হয়েছে। এর মধ্যে আফগানিস্তানের স্কোর কমেছে ৪ পয়েন্ট, শ্রীলঙ্কার ২ পয়েন্ট এবং মালদ্বীপ, ভারত ও বাংলাদেশের স্কোর কমেছে ১ পয়েন্ট করে।
ঊর্ধ্বক্রম অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শুধু পাকিস্তান ও নেপালের অবস্থানের যথাক্রমে ৭ ধাপ ও ২ ধাপ উন্নতি হয়েছে। অবশিষ্ট ৬ টি দেশের অবস্থানের ১-১৪ ধাপ পর্যন্ত অবনতি হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশের প্রয়োজনে সকল পদক্ষেপ নিচ্ছি
এর মধ্যে শ্রীলঙ্কার ১৪ ধাপ, আফগানিস্তানের ১২ ধাপ, ভারত ও মালদ্বীপের ৮ ধাপ, বাংলাদেশের ২ ধাপ এবং ভুটানের অবস্থানের ১ ধাপ অবনমন হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় একমাত্র ভুটান ছাড়া বাকি ৭ টি দেশই সূচকের গড় স্কোর ৪৩’র কম পয়েন্ট পেয়েছে।
সান নিউজ/এনজে