নিজস্ব প্রতিনিধি: হেমন্ত বিদায় নিয়ে আজ শীত ঋতুর প্রথম দিন। পৌষকে বলা হয় শীতের মাস। পৌষে ঘাসের ডগায় শিশির বিন্দুতে সূর্যের হাসি প্রকৃতির নিয়মিত ছবি হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: আজ মহান বিজয় দিবস
পৌষ আর মাঘ মাস শীতকাল। পৌষের শুরু থেকেই কুয়াশার হালকা স্তর গভীর ও ধূমায়িত হয়ে আচ্ছন্ন করে তোলে দিক চক্রবাল। রাতভর ঝরে শিশির, ভিজে ওঠে ঘাস, লতাপাতা, ঘরবাড়ির টিনের ছাউনি।
ঘাসের ডগায়, পাতার কিনারে জমে থাকা শিশির বিন্দুতে ভোরের সোনালি রোদের স্পর্শ ছড়িয়ে দেয় বড়ই মনোহর দ্যুতি। বহুকাল থেকে মুক্তোদানা বা হীরার কুচির সাথে লোকে তার শোভার তুলনা করে আসছে। শীতের এই রোদ কতই না আদরণীয়। ‘মিঠে রোদ’, ‘সোনা রোদ’ ভালবেসে দেয়া এমন সব তার নাম।
আরও পড়ুন: আজও ঢাকার বায়ু ‘দুর্যোগপূর্ণ’
পঞ্জিকার হিসেবে, আজ শীতের শুরু হলেও গত কয়েকদিন ধরেই হিমেল হাওয়ার ঝাপটা ও ঘন কুয়াশা জানান দিচ্ছিল শীতের আগমনী বার্তা। তারও আগে থেকে প্রবল শীত থেকে জীবন বাঁচাতে অতিথি পাখিরা বাংলাদেশে আসতে শুরু করেছে।
বাংলা সাহিত্যে শীত নিয়ে নানা বন্দনা রয়েছে। কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন, ‘শীতের হাওয়ার লাগল নাচন আম্লকির এই ডালে ডালে, পৌষ তোদের ডাক দিয়েছে, আয় রে চলে আয় আয় আয়’।
শীতকালে ফোটে বহু বাহারি ফুল। শীতের বিবর্ণ পরিবেশে এসব ফুল বর্ণিল রঙ ছড়িয়ে মানুষের কাছ থেকে বিশেষ সমাদর আদায় করে নেয়।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে বইছে শৈত্য প্রবাহ
এ সময় মাঠের পর মাঠ ভরা শিম, কপি, গাজর, টমেটো, মটরশুঁটি, বরবটি, বেগুন, টমেটো প্রভৃতির আবাদ। সরিষার কথা বলতে হবে আলাদা করেই। এছাড়া পিঠাপুলি, অতিথি আপ্যায়ন ও যাত্রাপালায় গ্রামীণ জনপদে নির্ভার আনন্দের তরঙ্গ বয়ে যায়।
আমাদের দেশে তুষার না পড়লেও শীতের শুষ্ক রুক্ষতা দেখার মতো। গাছে গাছে মলিন ও বিবর্ণ হয়ে আসে পাতা, ফেটে ঝরে পড়ে বাকল। এ রুক্ষ প্রকৃতিই আবার ফুটিয়ে তোলে রক্তলাল গোলাপ, গাঁদা, ডালিয়া, মল্লিকাদের।
পৌষের প্রথম দিনে মৃদু শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে দেশের উত্তরাঞ্চল। এ দিন দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রার পারদ নেমেছে ৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
আরও পড়ুন: উত্তরা এক্সপ্রেসে দুর্বৃত্তদের আগুন
আবাহাওয়া অধিদফতর বলছে, দেশের ঐ অঞ্চল দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ (৮-১০ ডিগ্রি সে. মধ্যে) বইছে।
শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়, আজ ভোর ৬ টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়ায় ৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় সর্ব দক্ষিণের উপজেলা টেকনাফে ৩০.৬ ডিগ্রি সে.।
আরও পড়ুন: স্মৃতিসৌধে লাখো মানুষের ঢল
এ দিন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে তাপমাত্রা ১১.৪ ও কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ১১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজকের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, শনিবার সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। মধ্য রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চল ও নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।
এছাড়া দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
সান নিউজ/এনজে