নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ শহীদ ডা. মিলন দিবস। ১৯৯০ সালে এরশাদের স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলনের উত্তাল মুহূর্তে ওই বছরে ২৭ নভেম্বর আন্দোলনের সংগঠক ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম মহাসচিব ডা. শামসুল আলম খান মিলন সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন।
আরও পড়ুন: দলের প্রয়োজনে স্বতন্ত্র প্রার্থী
এই দিন তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের একটি সভায় যোগ দিতে রিকশায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় যাচ্ছিলেন। যাত্রাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় সন্ত্রাসীরা তার ওপর গুলি চালায়। ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিক তার মৃত্যু হয়।
সেই সময় দেশব্যাপী রাজপথ-রেলপথ অবরোধ আন্দোলন চলছিল। মিলনের আত্মদানের মধ্য দিয়ে সে দিনের স্বৈরাচার এরশাদ-বিরোধী আন্দোলনে নতুন গতি সঞ্চারিত হয়।
পরে ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এরশাদের স্বৈরশাসনের পতন হয়। সেই থেকে প্রতি বছরের ২৭ নভেম্বর শহিদ ডা. মিলন দিবস পালন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক অনাকাঙ্ক্ষিত
সোমবার (২৭ নভেম্বর) রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডা. মিলনের ৩৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন।
স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ডা. মিলনের আত্মত্যাগ নতুন গতি সঞ্চারিত করে। ওই দিনই দেশে জরুরি আইন ঘোষণা করা হয়। কিন্তু জরুরি আইন ও কারফিউ উপেক্ষা করে ছাত্র-জনতা বারবার মিছিল নিয়ে রাজপথে নেমে আসে। পরে স্বৈরশাসকের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, আমি শহীদ ডা. মিলনসহ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আত্মোৎসর্গকারী সব শহীদকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। দেশের প্রতিটি গণতন্ত্রকামী মানুষ ডা. মিলনসহ সব বীর শহীদের অবদান চিরদিন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘৯০ সালের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা ডা. শামসুল আলম খান মিলনের ৩৩তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।
আরও পড়ুন: আদালতে ড. ইউনূস
আজ সকাল ৯টায় ডা. মিলন দিবস উপলক্ষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ চত্বরে ডা. শামসুল আলম খান মিলনের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতের কর্মসূচি পালন করা হবে।
জাসদের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সকাল সাড়ে ৭টা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন ঢাকা মেডিকেল কলেজের গেটে, সকাল ৮টায় মেডিকেল কলেজে ডা. মিলনের সমাধিতে এবং সাড়ে ৮টা টিএসসি সংলগ্ন ডা. মিলন সৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন, বিকাল ৩টায় জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে তাহের মিলনায়তনে আলোচনা সভা এবং দলের জেলা ও কমিটিসমূহ শহীদ ডা. মিলন দিবস উপলক্ষে শহীদ ডা. মিলনের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান ও আলোচনা সভার কর্মসূচি গ্রহণ করবে।
আজ এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলন দিবস-এর কর্মসূচি পালনের জন্য সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: জাপার প্রার্থী ঘোষণা বিকেলে
এছাড়া জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার বরাবরের মত যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালনের জন্য সকল জেলা, মহানগর ও উপজেলা কমিটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৫৭ সালের ২১ আগস্ট ঢাকা হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে ডা. মিলনের জন্ম হয়। তিনি ১৯৭৩ সালে সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে শিল্পকলা (ইন্ডাস্ট্রিয়াল আর্টস) বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে এসএসসি পাস করেন।
ডা. মিলন ১৯৭৫ সালে এইচএসসি পাস করেন নটর ডেম কলেজ থেকে। এরপর তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন এবং ১৯৮৩ সালে তিনি এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন ও ডাক্তারি পেশায় যোগ দেন।
সান নিউজে/এসকে/এনজে