নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানী ঢাকার জাতীয় নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের শারীরিক আবস্থা আগের চেয়ে ভালো বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম।
শনিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) সকালে ওয়াহিদা খানমকে দেখে আসার পর গণমাধ্যমকে এ কথা বলেন তিনি।
খুরশিদ আলম বলেন, ‘তার মাথার ক্ষতটা যে বস্তু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে, তা জীবানুমুক্ত ছিল কি না তা আমরা জানি না, তবে এখন পর্যন্ত যতোটুকু করা দরকার তা ভালোভাবেই করা হয়েছে।’
তার দ্রুত সুস্থ হওয়ার বিষয়েও আশাবাদী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
ওয়াহিদা খানম আপাতত আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের চিকিৎসকরাও। তাকে আইসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তরের বিষয়ে সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) সিদ্ধান্ত হবে এবং ওয়াহিদার প্যারালাইজড হয়ে যাওয়া ডানপাশের এখনো কোনো ধরনের উন্নতি না হলেও নতুন করে কোনো রক্তক্ষরণ নেই বলেও জানান তারা।
শনিবার সকালে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা তার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে বৈঠকে বসেন।
বৈঠক শেষে মেডিকেল বোর্ডের প্রধান হাসপাতালের নিউরোট্রমা বিভাগের প্রধান ও নিউরোসার্জন মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘তার রক্তচাপ, পালস রেট সব স্থিতিশীল। তবে অস্ত্র দিয়ে আঘাত করায় এখনো সংক্রমণের শঙ্কামুক্ত নন তিনি। আমরা তাকে ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখার কথা বলেছি। এই ৭২ ঘণ্টা তাকে আইসিইউতে রেখে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। পরে সোমবার সকালে আমরা মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বসে সিদ্ধান্ত নেবো, তিনি আইসিউতে আরও থাকবেন কি-না।’
ডা. জাহিদ বলেন, ‘ওয়াহিদা খানমের ডান পাশ প্যারালাইজড ছিল, ওই অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি, যেমন ছিল তেমনই আছে। যেহেতু তার ব্রেনের একটা অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, হাড় ভেঙে ব্রেনে কিছুটা আঘাত করেছে, সেজন্য এটার এখনো কোনো উন্নতি হয়নি। এ ক্ষেত্রে কতোদিন লাগবে বা কতোটুকু উন্নতি হবে এ মুহূর্তে বলা কঠিন। তবে আমরা আশাবাদী, এটা উন্নতি হবে।’
তিনি বলেন, ‘এখন তার নতুন করে কোনো রক্তক্ষরণ নেই। সামান্য কিছু রক্তক্ষরণ ছিল, সেগুলো আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।’
বুধবার (০২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটায় সরকারি বাসভবনের ভেন্টিলেটর ভেঙে বাসায় ঢুকে ইউএনও ওয়াহিদা ও তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখের ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। ইউএনওর মাথায় গুরুতর আঘাত এবং তার বাবাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়।
পরে ইউএনও ও তার বাবাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। ওয়াহিদার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে আনা হয়। রাতে তার মাথায় অস্ত্রোপচারের পর থেকে বর্তমানে আইসিইউতে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে আছেন তিনি।
সান নিউজ/ আরএইচ/ এআর | Sun News