নিজস্ব প্রতিবেদক:
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলীর ওপর হামলায় তিনজন জড়িত বলে জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব-১৩। বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে গ্রেপ্তারের পর র্যাব-১৩ এর রংপুর সদর দপ্তরে নিয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা এ ঘটনায় জড়িত বলে স্বীকার করেন।
অন্যদিকে ওয়াহিদা খানম ও তার বাবার ওপর হামলা চালিয়ে গুরুতর জখম করার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত দুই যুবলীগ নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। বহিষ্কৃত দুজন হলেন, ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম ও সদস্য আসাদুল ইসলাম।
শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) ভোররাতে হাকিমপুর উপজেলা থেকে আসাদ ও ঘোড়াঘাট থেকে জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওই দুজন ছাড়াও আরও চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে র্যাব-পুলিশ। তারা হচ্ছেন, সিংড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দক্ষিণ দেবীপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফা আদুর ছেলে মাসুদ রানা (৪০), ওই বাসভবনের নৈশপ্রহরী নাহিদ হোসেন পলাশ (৩৮), চকবামুনিয়া বিশ্বনাথপুর এলাকার মৃত ফারাজ উদ্দিনের ছেলে নবীরুল ইসলাম (৩৫) ও একই এলাকার খোকার পুত্র সান্টু চন্দ্র দাস (২৮)।
শুক্রবার বিকেলে র্যাব-১৩ এর অপারেশন অফিসার আবু বক্কর সিদ্দিক সাংবাদিকদের জানান, ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ভাইয়ের করা মামলায় গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে তিনজনকে দিনাজপুর থেকে র্যাব-১৩ সদর দপ্তরে নিয়ে এসে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারা এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তবে তাদের পরিচয়, হামলার কারণসহ বিস্তারিত সন্ধ্যা ৭টার দিকে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হবে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
আর দুপুরে যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল গণমাধ্যমকে জানান, যুবলীগ একটি সুশৃঙ্খল সংগঠন। এখানে কোনো সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজদের ঠাঁই নেই। যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের নির্দেশে ঘোড়াঘাট ইউএনওর ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম ও আসাদুল ইসলামকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বুধবার (০২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটায় সরকারি বাসভবনের ভেন্টিলেটর ভেঙে বাসায় ঢুকে ইউএনও ওয়াহিদা ও তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলীর ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। ইউএনওর মাথায় গুরুতর আঘাত এবং তার বাবাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়।
পরে ইউএনও ও তার বাবাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রমেক) নিয়ে ভর্তি করা হয়। ওয়াহিদার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে আনা হয়। রাতে তার মাথায় অস্ত্রোপচারের পর থেকে বর্তমানে আইসিইউতে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে আছেন তিনি। তার অবস্থা স্থিতিশীল হলেও এখনো আশঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।