নিজস্ব প্রতিবেদক:
ন্যাশনাল ইন্সটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হসপিটালের নিউরোট্রমা বিভাগের প্রধান ডা. জাহিদ হাসান জানিয়েছেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের অস্ত্রোপচার পরবর্তী সিটি স্ক্যান ফলাফল খুব ভালো, এক্সিলেন্ট, অপারেশন সাকসেসফুল। তবে তিনি এখনও শঙ্কামুক্ত নন।
শুক্রবার (০৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গণমাধ্যমকে তিনি আরও জানান, বর্তমানে আইসিইউতে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে থাকা ওয়াহিদা দায়িত্বরত চিকিৎসক ও তার স্বামীর সঙ্গে কথা বলেছেন।
দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের ইউএনও ওয়াহিদা খানমের মাথায় অস্ত্রোপচার শেষ হয় বৃহস্পতিবার (০৩ সেপ্টেম্বর) রাত সোয়া বারটায়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচার শেষে রাতেই তার জ্ঞান ফিরেছে। তিনি বর্তমানে আইসিইউতে পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। তার হৃদস্পন্দন ও রক্তচাপ স্বাভাবিক আছে। শারিরীক অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও তাকে এখনও শঙ্কামুক্ত বলার মতো পর্যায়ে আসেনি।
ওয়াহিদার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড প্রধান নিউরোসার্জন মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত তার সব প্যারামিটার খুবই ভালো। সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট কেমন আসে, সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তা ছিল। তবে ভালো খবর, তার সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট শতভাগ ভালো এসেছে।
জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে তিনি এখন ভালো আছেন। আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ওনার জ্ঞান পুরোমাত্রায় আছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওনার মাথায় নয়টি আঘাত ছিল। আমরা ঠিকঠাক করে দিয়েছি। শরীরের একপাশ অবশ আছে, সে অবস্থা থেকে মুক্ত হতে সময় লাগবে।’
হাসপাতালের যুগ্ম-পরিচালক অধ্যাপক ডা. বদরুল আলম বলেন, এখনই তার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আসেনি। শনিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে আমাদের মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা বসবেন, এরপর এ বিষয়ে চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে তার শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে।
বুধবার (০২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটায় সরকারি বাসভবনের ভেন্টিলেটর ভেঙে বাসায় ঢুকে ইউএনও ওয়াহিদা ও তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলীর ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। ইউএনওর মাথায় গুরুতর আঘাত এবং তার বাবাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়।
পরে ইউএনও ও তার বাবাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রমেক) নিয়ে ভর্তি করা হয়। ওয়াহিদার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে আনা হয়।
রাত ৯টার দিকে তাকে অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার আগে তার সিটি স্ক্যান করা হয়। প্রেশার চেক করে অবস্থা স্বাভাবিক পেয়ে তার অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। ওয়াহিদার মাথার বাদিকটা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাথার কিছু অংশ ভেঙে মস্তিষ্কে প্রেসার তৈরি করছে। সেটি অপসারণ করা গেলে অবস্থার উন্নতি হবে, এমন আশা থেকে তার অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত হয়। পরে ৬ সদস্যের চিকিৎসক দল প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় ইউএনও ওয়াহিদার মাথায় জটিল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেন।
সান নিউজ/ আরএইচ/ এআর | Sun News