নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার একটাই লক্ষ্য ছিল, ক্ষমতা হবে জনগণের কল্যাণ সাধন করার। জাতির পিতা যেভাবে চেয়েছেন, সেভাবেই দেশকে গড়ে তোলা।
সেই প্রচেষ্টাই আমি চালিয়ে যাচ্ছি। জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে পথ চলায় আজকে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীজুড়ে পুলিশের কড়া নিরাপত্তা
রোববার (২৯ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আয়োজিত বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক ত্যাগের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে। এ স্বাধীনতার সুফল প্রতিটি ঘরে ঘরে আমরা পৌঁছে দেব। ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলাম, সেটি বাস্তবায়ন করেছি।
এখন আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব। দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে যা যা করার আমরা করে যাচ্ছি।
আরও পড়ুন: আজ লোডশেডিং হবে যেসব এলাকায়
তিনি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে আমরা ক্ষমতায় আছি। ২০০৯ সাল থেকে আজকে ২০২৩। এটি এখন এক বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আজকের ছাত্রছাত্রীরা উপলব্ধি করতে পারবে না, ২০ বছর আগে কেমন বাংলাদেশ ছিল।
সেখানে ছিল ক্ষুধা-দারিদ্র, বৈজ্ঞানিক কোনো কিছু ছিল না। আমরা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে বিজ্ঞান ও কম্পিউটার শিক্ষা চালু করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমন চেয়েছিলেন, তেমন বাংলাদেশ গড়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য। আমার কাছে প্রধানমন্ত্রীত্ব কিছু না। প্রধানমন্ত্রী হলে বহু আগেই হতে পারতাম। কিন্তু আমি সেভাবে চাইনি।
আরও পড়ুন: পুলিশ হত্যার বিচার ত্বরিত গতিতে হবে
তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা আমরা পেয়েছি, যা বাস্তবায়ন হবে ২০২৬ সাল থেকে। জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা হলে এ বাংলাদেশ আর পেছনে ফিরে তাকাবে না।
অনেক দেশই আমাদের সাথে হয়েছিল। অনেকেই পিছিয়ে গেছে। আমরা কিন্তু পিছিয়ে যাইনি।
দীর্ঘ ২১ বছর আমাদের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল এবং অনেক ইতিহাস মুছে ফেলা হয়েছিল। আমরা ক্ষমতায় আসার পর প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরা শুরু করি।
১৫ আগস্টের পর থেকে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেই ভাষণ বাঁজিয়েছিল, তা মানুষকে শুনিয়েছিল।
আমি জানি না, পৃথিবীর কোনো দেশে কোনো ভাষণ এতবার শোনা হয়েছে কি না। আজকে সেই ভাষণ ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃতি পেয়েছে।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আগুন
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বিশ্ব প্রামাণ্য দলিলে মানুষকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, যা বাঙালি জাতির ভাবমূর্তি বিশ্বে উজ্জ্বল করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি চাই আমাদের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক সবাই আমাদের এ অর্জনগুলো ধরে রাখেন। এর মাধ্যমেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। জাতির পিতা এ বাংলাদেশের জন্য যে মহান আত্মত্যাগ করে গেছেন, সেটি আমাদের ভুললে চলবে না।
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ২০১০ সালের ১৪ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধুর প্রতি যে বহিষ্কারাদেশ ছিল, প্রত্যাহার করে নেয়।
আরও পড়ুন: ‘ডক্টর অব লজ’ গ্রহণ করলেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতাকে আজকে ‘ডক্টর অব লজ’ এ ভূষিত করেছেন। আমি জানি না, আপনাদেরকে কীভাবে ধন্যবাদ জানাবো। আমি তার কন্যা হিসেবে কৃতজ্ঞতা জানাই।
জাতির পিতার এ জাতিকে নিয়ে সবসময় একটা স্বপ্ন ছিল। তিনি নিজের জন্য কিছু চাননি, এ জাতির জন্য চেয়েছেন সব সময়।
তিনি বলেন, অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়লে তার সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যাবে। আমি চাই, সকল শিক্ষার্থী যেন এ বইগুলো ভালোভাবে পড়ে। এ বইগুলো পড়লে একদিন আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও আমাদের দেশের অবস্থান জানতে পারবেন।
এ বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মরণোত্তর সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব লজ’ ডিগ্রি প্রদান করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সমাবর্তনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বঙ্গবন্ধুকন্যা ও সমাবর্তন বক্তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এ ডিগ্রি তুলে দেন।
সান নিউজ/এনজে