নিজস্ব প্রতিবেদক:
করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় চীনের উহান সিটিতে থাকা ৩১২ বাংলাদেশিকে নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ দেশে ফিরেছে। এর মধ্যে ৭ জনের শরীরে জ্বর থাকায় তাদের পাঠানো হয়েছে ঢাকার একটি হাসপাতালে।
অন্যদেরকে কুর্মিটোলা আশকোনো হজ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
হজ ক্যাম্পে তাদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন পুলিশ ও সেনা সদস্যরা।
এর আগে শে ফেরার পর বিমানবন্দরের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সবাইকে পরীক্ষা করা হয়। তার আগেই বাইরে প্রস্তুত রাখা হয় বিআরটিসির আটটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস এবং কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স। তাদের মালামাল নেওয়ার জন্য রাখা হয় চারটি ট্রাক।
আশকোনোয় কোয়ারেন্টাইনে রেখে পর্যবেক্ষণের এই পুরো বিষয়টিতে আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুশতাক হোসেনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাচ্ছে সরকার।
তিনি বলেন, “ফ্লাইটে ৩১৪ জন এসেছেন। আরও দুজনের আসার কথা থাকলেও শরীরে জ্বর থাকায় তারা চীনে রয়ে গেছেন।”
চীনফেরত এই বাংলাদেশিদের যে ক্যাম্পে রেখে ১৪ দিন পর্যবেক্ষণ করা হবে, সে কথা আগেই জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। পর্যবেক্ষণের এই সময় তাদের সঙ্গে দেখা করার জন্য স্বজনরা যেন ব্যাকুল না হয়ে পড়েন সেজন্য তাদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
চীনের উহান থাকা বাংলাদেশিদের দেশে আনতে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ৪১৯ জন যাত্রী বহনে সক্ষম একটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ উড়োজাহাজ ঢাকা ছেড়ে যায়। অন্যদিকে সেদেশে থাকা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন স্থান থেকে উহান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হাজির করে চীনে বাংলাদেশ দূতাবাস।
হুবেই ইউনির্ভাসিটি অব টেকনোলজির শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, আমাদের ক্যাম্পাস থেকে বাসে করে বিমানবন্দরে নিয়ে আসা হয়েছে। বিমানবন্দরে প্রবেশের আগে আমাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, উহান থেকে ফেরা ব্যক্তিরা আপাতত স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন না। বিমানবন্দর থেকে তাদের কুর্মিটোলা হজক্যাম্পে যাওয়া হয়েছে। সেখানে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআরের কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থায় তাদের রাখা হবে। স্বাস্থ্যগত পরীক্ষার জন্য ১৪ দিন পর্যন্ত তাদের সেখানে রাখা হতে পারে।
চীন থেকে ফেরত আসাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা প্রসঙ্গে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআরের পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, আমরা আশা করছি ফেরত আসা বাংলাদেশিদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত কেউ নেই। তারপরও আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। হজক্যাম্পে তাদের রাখা হবে। সেখানে আমাদের চারটি মেডিক্যাল টিম থাকবে। তাদের সেখানে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। স্বাস্থ্যগত পরীক্ষা ও নির্ধারিত ১৪ দিনের মতো পর্যবেক্ষণে রাখার পর ফেরত আসা বাংলাদেশিরা বাড়ি ফিরতে পারবেন বলে জানান তিনি।