নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের নির্বাচিত পৌরসভাগুলোর মেয়াদ শেষ হয়ে আসায় একযোগে ভোটের কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ক্ষেত্রে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যভাগের মধ্যেই ভোটগ্রহণের পরিকল্পনা করছে সংস্থাটি।
ইসি সচিব মো. আলমগীর বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা হচ্ছে নভেম্বরের শেষ অথবা ডিসেম্বরের প্রথম কিংবা দ্বিতীয় সপ্তাহে পৌরসভাগুলোয় একযোগে ভোটগ্রহণ করা। কেননা, ২০১৫ সালের ডিসেম্বর সর্বশেষ একযোগে সাধারণ নির্বাচন হয়েছিল এই স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানটিতে। এ ক্ষেত্রে শপথ হয়েছিল পরের বছরের জানুয়ারিতে। সকল নির্বাচনে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণ করতে হয়।’
‘কিন্তু পৌরসভায় মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণ করতে হয়। এ হিসেবে আমাদের নভেম্বরের শেষ অথবা ডিসেম্বর প্রথম অথবা দ্বিতীয় সপ্তাহে ভোট করতেই হবে।’
তিনি বলেন, ‘এমন পরিকল্পনা নিয়েই আমরা এগোচ্ছি। তবে করোনা পরিস্থিতি যদি বর্তমানের চেয়ে ব্যাপক আকার ধারণ না করে, তবেই এই পরিকল্পনা কার্যকর করা যাবে। অন্যথায় উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশে পৌরসভা রয়েছে ৩২৮টি। এরমধ্যে নির্বাচনের উপযোগী রয়েছে ২৫৬টি। তবে এই সংখ্যা কমতে বা বাড়তে পারে। কেননা, মামলাসহ আইনি জটিলতার কারণে সংখ্যায় কিছুটা এদিক-সেদিক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
সর্বশেষ দেশের পৌরসভাগুলো একযোগে ভোটগ্রহণ হয়েছিল ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর। আর নির্বাচিত মেয়ররা শপথ নিয়ে প্রথম সভা করেছিলেন ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে। আইন অনুসারে, নির্বাচিত পৌরসভার মেয়াদ হচ্ছে প্রথম সভা থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর। আর ভোট করতে হয় সময় শেষ হওয়ার আগে নব্বই দিনের মধ্যে। এক্ষেত্রে ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে আগের ৯০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণ করতে হবে।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচন করা যাবে এমন পৌরসভাগুলোর নাম ও লিস্ট তৈরির কাজ চলছে। মাঠ পর্যায় থেকে বেশকিছু তথ্য পাঠানো হয়েছে। সেগুলো সমন্বয় করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়া কোনো পৌরসভায় নির্বাচনের ক্ষেত্রে আইনগত কোনো বাধা আছে কি-না, সে বিষয়েও মতামত চাওয়া হবে। তবে সেটা আগামী অক্টোবরের দিকে।
দলীয়ভাবে পৌরসভার মেয়র পদে নির্বাচন না হওয়া নিয়ে গুঞ্জনের বিষয়টি নিয়ে ইসি সচিব মো. আলমগীর বলেন, ‘স্থানীয় সরকারগুলোর প্রধানদের পদে দলীয়ভাবে ভোটগ্রহণ করার আইন রয়েছে। এটা আগেরবার সংশোধন করে দলীয়ভাবে সম্পন্ন করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। কাজেই এবারও পৌরসভা নির্বাচনের মেয়র পদে দলীয়ভাবেই ভোগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। কেননা, আইন যেভাবেই আছে, সেভাবেই আমাদের ভোট করতে হবে। আর আইন সংশোধন করে আবার আগে জায়গায় অর্থাৎ নিদর্লীয় নির্বাচনের দিকে ফিরে যাওয়ার কোনো আলোচনা নেই।’
২০১৫ সালের পৌর নির্বাচনে ভোট পড়ে ৭২ শতাংশ। আর প্রদত্ত ভোটের মধ্যে মেয়র পদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৫২ দশমিক ২৯ শতাংশ, বিএনপি ২৮ দশমিক ১৬ শতাংশ ও জাতীয় পার্টি ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছিলেন ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ ভোট।
এদিকে স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের বেশি ব্যবহারের লক্ষ্যে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। এ ক্ষেত্রে এবারে পৌরসভা ভোটে ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
সান নিউজ/ আরএইচ/ এআর