নিজস্ব প্রতিবেদক:
চীনের উহানে আটকে থাকা ৩৬১ বাংলাদেশিকে নিয়ে আসতে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিমান উড়াল দিল চীনের পথে।
৩১ জানুয়ারি শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৭৭-৩০০ উড়োজাহাটি ঢাকা ছাড়ে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ-উল আহসান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি ঢাকা ছাড়ার কথা নিশ্চিত করেন ।
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের নিয়ে রাতে ২টার দিকে ওই ফ্লাইট ফিরে আসার কথা। অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদেরও বিভিন্ন স্থান থেকে উহান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জড়ো করেছে চীনের বাংলাদেশ দূতাবাস। সেখানে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।দেশে ফেরার পর বাংলাদেশিদের প্রথমে কোয়ারেন্টাইনের জন্য কুর্মিটোলা হজক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোকাব্বির হোসেন বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশিদের আনতে আমাদের একটি ফ্লাইট চীনের পথে রয়েছে। সেখানে যেতে প্রায় ৪ ঘণ্টা সময় লাগবে। এরপর বাংলাদেশিদের নিয়ে ফের দেশে ফিরবে।
হুবেই ইউনির্ভাসিটি অব টেকনোলজির শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, আমাদের ক্যাম্পাস থেকে বাসে করে বিমানবন্দরে নিয়ে আসা হয়েছে। বিমানবন্দরে প্রবেশের আগে আমাদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হয়।
বিমানবন্দর থেকে তাদের স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হবে কুর্মিটোলা হজক্যাম্পে। সেখানে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এর কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থায় তাদের রাখা হবে। স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য ১৪ দিন পর্যন্ত তাদের সেখানে রাখা হতে পারে।
চীনফেরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা প্রসঙ্গে আইইডিসিআরের পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, আশা করছি, এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত কেউ নেই। এরপরও আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। হজক্যাম্পে তাদের রাখা হবে। সেখানে আমাদের চারটি মেডিক্যাল টিম থাকবে। তাদের সেখানে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।
স্বাস্থ্যপরীক্ষাসহ ১৪ দিন পর্যবেক্ষণে রাখার পর এই শিক্ষার্থীরা বাড়ি ফিরতে পারবেন বলেও জানান তিনি।
এর আগে আজ সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন সাংবাদিকদের বলেন, চীনের উহান প্রদেশ থেকে প্রায় ৩৬১ জন বাংলাদেশে ফিরে আসার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাদের অতি দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেছি আমরা। এখানে যারা ফেরত আসছে আমাদের জানামতে তারা কেউই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত নয়। তারপরও তারা পর্যবেক্ষণে থাকবেন।
মন্ত্রী বলেন, বিকেল আমাদের বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট চীনে যাবে। ৩৬১ জনকে প্রোটেক্টেড অবস্থায় বাংলাদেশে নিয়ে আসা হবে। এমনকি হজ ক্যাম্পে তাদের আলাদাভাবে নিয়ে রাখা হবে। হজ ক্যাম্পে ১৪ দিন রাখা অবস্থায় যদি কেউ অসুস্থ হয় তাহলে চিকিৎসার জন্য সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের কোয়ারেন্টাইন ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য পুলিশসহ অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী সর্বদা মোতায়েন থাকবে।
এ সময়ের মধ্যে তাদের সঙ্গে পরিবারসহ কেউই দেখা করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
সান নিউজ/সালি