নিজস্ব প্রতিনিধি: সাবেক ধর্মমন্ত্রী, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মতিউর রহমান আর নেই।
আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়া গেলেন সেনাবাহিনী প্রধান
রোববার (২৭ আগস্ট) রাত ১১ টার দিকে ময়মনসিংহের ধোপাখোলা নেক্সাস কার্ডিয়াক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃতকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এছাড়া তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ছিলেন। ২০১৪-২০১৮ সাল পর্যন্ত ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
আরও পড়ুন: লিবিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরখাস্ত
নেক্সাস কার্ডিয়াক হাসপাতালের ম্যানেজার মৃদুল কুমার সরকার জানান, বেশ কিছুদিন ধরে বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মতিউর রহমান বার্ধক্য জনিত রোগে ভুগছিলেন। সম্প্রতি তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়।
পরে সেখান থেকে ফিরে নিজ বাড়িতেই বসবাস করতেন তিনি। রোববার দুপুরে অধ্যক্ষ মতিউর রহমান গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নেক্সাস হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
আরও পড়ুন: পুলিশ জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়েছে
মতিউর রহমান ১৯৪২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আবদুর রেজ্জাক এবং মা মেহেরুন্নেসা খাতুন।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অবিচল থেকে পথ চলতে অভ্যস্ত প্রবীণ এই রাজনীতিক ১৯৫৩ সালে আকুয়া মডেল প্রাইমারি স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন। এ সময় বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলায় প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ফের জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট নানগাগওয়া
১৯৫৪ সালে তিনি ময়মনসিংহ জেলা স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হন এবং সেখানে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখা পড়া করেন। এরপর নকলা উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি সম্পন্ন করেন।
ময়মনসিংহের মৃত্যুঞ্জয় স্কুলে নবম ও দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেন এবং ১৯৫৮ সালে মেট্রিকুলেশন পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন মতিউর রহমান। ১৯৬১ সালে তিনি ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেন।
আরও পড়ুন: ইসির ১২ কর্মকর্তাকে বদলি
১৯৬৪ সালে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএসসি পাস করেন। এ সময় গফরগাঁও থানার পাঁচবাগ উচ্চ বিদ্যালয় এবং মনোহরদি হাতিরদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে বিএসসি শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
মতিউর রহমান ১৯৬৬ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগে ভর্তি হয়ে ১৯৬৭ সালে এমএসসি সম্পন্ন করেন। এমএসসি পাসের পর জামালপুর জেলার নান্দিনা কলেজ এবং ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজে প্রাণিবিদ্যার শিক্ষক হিসেবে চাকরি করেন তিনি।
আরও পড়ুন: পাহাড়ে মিলল পর্যটকের মরদেহ
এ সময় স্বল্পকালীন ময়মনসিংহ কলেজেও শিক্ষকতা করেন অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষক ও সফল সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি এবং মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ঢালু যুব শিবিরের ইনচার্জ ছিলেন তিনি। ১০ ডিসেম্বর তার নেতৃত্বে ময়মনসিংহ হানাদারমুক্ত হয়।
আরও পড়ুন: বিমান বিধ্বস্তে ৩ মার্কিন সৈন্য নিহত
মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০২২ সালে একুশে পদক পান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম এই নেতা।
সান নিউজ/এনজে