নিজস্ব প্রতিনিধি: নির্বাচন কমিশন (ইসি) আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উদ্দেশ্য যেসব বিদেশি পর্যবেক্ষক পর্যবেক্ষণ করতে চান, তাদের সহায়ক হয় এমন পর্যবেক্ষক নীতিমালা করতে চায়। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি আগামী সেপ্টেম্বরের ১ম সপ্তাহে এই নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করতে চায়।
আরও পড়ুন: গ্যাস বিস্ফোরণ দগ্ধ আরও এক মৃত্যু
বুধবার (২৩ আগস্ট) ইসি রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করে। কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথের সভাপতিত্বে বেলা ১১টায় প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠকটি হয়।
বৈঠক শেষে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ সাংবাদিকদের জানান, পর্যবেক্ষক নীতিমালা নিয়ে আজ প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। আরো সভা করতে হবে। পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, এনবিআর, তথ্য মন্ত্রণালয়সহ আজ সভা করেছি। কোন সিদ্ধান্ত আজকের সভায় আসেনি।
আরও পড়ুন: নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়
আমাদের যে নীতিমালাটি বর্তমানে আছে, সেটা পর্যালোচনা করেছি। কোন পয়েন্টগুলো যুগোপযোগী করা প্রয়োজন তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আবার আগামী সপ্তাহে আমরা বসব। আরো ২-১টি সভা করে খসড়া চূড়ান্ত করে কমিশনে উপস্থাপন করব। কমিশন অনুমোদন দিলেই তা চূড়ান্ত হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ সচিব জানান, নীতিমালাটি আমরা এমনভাবে করছি, বিদেশি পর্যবেক্ষকদের জন্য যাতে সহায়ক হয়, ব্যবহারবান্ধব হয়।
নীতিমালায় কয়টি জায়গায় পরিবর্তন আসতে পারে, জানতে চাইলে এ সচিব জানান, এখনো কোনও সিদ্ধান্ত এ বিষয়ে আসেনি। সেপ্টেম্বরের ১ম সপ্তাহের মধ্যে খসড়া চূড়ান্ত করতে পারব। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এটা চূড়ান্ত হওয়ার পরে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি গেলে তারা আবেদন করবে। যে পদ্ধতি আবেদন অনুযায়ী থাকবে, সেই হিসাবে অনুমোদন পেয়ে তারা পর্যবেক্ষক হিসেবে আসতে পারবেন।
আরও পড়ুন: নতুন অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার
জানা গেছে, সভায় ভোট পর্যবেক্ষণে আসা বিদেশিদের আবেদন সীমা, প্রয়োজনীয় কারিগরি সুযোগ-সুবিধা ও প্রাক-নির্বাচনী একটি প্রতিনিধিদলের সুপারিশ পর্যালোচনা করে নীতিমালা হালনাগাদের বিষয় আলোচনা করা হয়।
ইতোমধ্যে ইইউর প্রতিনিধিরা কমিশনের সাথে বৈঠকে পর্যবেক্ষকদের কিছু যন্ত্রপাতি আনা ও ট্যাক্স সংক্রান্ত বিষয়ে সুপারিশ করেছেন। তাদের সুবিধার্থে নীতিমালায় কী যুক্ত করা যায়, এ বিষয়ে এনবিআরের মতামত ও আবেদনের প্রক্রিয়া কবে নাগাদ শুরু করা যায়, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্রের সাথে এ নিয়ে আলোচনা হয়।
জানা গেছে, একাদশ ও ১০ম সংসদ নির্বাচনে ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্র পর্যবেক্ষক পাঠায়নি। একাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে ৮১টি দেশি পর্যবেক্ষক ২৫ হাজার ৯০০ জন প্রতিনিধি। এ ছাড়াও ৩৮ জন (ফেমবোসা, এএইএ, ওআইসি ও কমনওয়েলথ থেকে আমন্ত্রিত) বিদেশি পর্যবেক্ষক, বিভিন্ন বিদেশি মিশনের ৬৪ জন কর্মকর্তা, দূতাবাস ও বিদেশি সংস্থায় কর্মরত ৬১ জন ভোট পর্যবেক্ষণ করেন।
আরও পড়ুন: এখন থেকে ট্রানজিট ভিসায় ওমরাহ
১০ম সংসদ নির্বাচনে সব দল অংশ না নেওয়ায় পর্যবেক্ষকও কম ছিল। ঐ নির্বাচনে মাত্র ৪ জন বিদেশি ও স্থানীয় ৩৫টি সংস্থার ৮ হাজার ৮৭৪ জন ভোট পর্যবেক্ষণ করেন। ৯ম সংসদ নির্বাচনে ৫৯৩ জন বিদেশি ও ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৩ জন দেশি; ৮ম সংসদে ২২৫ জন বিদেশি ও ২ লাখ ১৮ হাজার জন দেশি; ৭ম সংসদ নির্বাচনে ২৬৫ জন বিদেশি ও প্রায় ৪০ হাজার দেশি; ৬ষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে মোট ৫৯ জন বিদেশি ও ৩০ হাজারের মতো দেশি পর্যবেক্ষক ভোট পর্যবেক্ষণ করেন।
ইসি চলতি বছরে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে বা আগামী বছরের জানুয়ারির ১ম সপ্তাহে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে চায়। তফসিল ঘোষণার আভাসও আছে।
সান নিউজ/এএ