নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানী ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি-কাম প্রহরীরা।
বেতন বৈষম্য, চাকরি জাতীয়করণ নিরসনসহ ৪ দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করছেন এসব কর্মচারীরা।
সোমবার (২৪ আগস্ট) সকালে বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্মচারী কল্যাণ সমিতির ব্যানারে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা প্রায় পাঁচ হাজার দপ্তরি-কাম প্রহরী জড়ো হন। তারা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন।
আন্দোলনকারীরা জানান, সরকারি বিদ্যালয়ে চাকরি করেও ন্যায্য বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না সারা দেশের ৩৭ হাজার দপ্তরি-কাম প্রহরী। ২০১৩ সালে এ পদে নিয়োগের পর থেকে তারা অমানবিকভাবে দিনে দাপ্তরিক কাজ ও রাতে প্রহরার দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।
আন্দোলনকারীরা আরো জানান, দপ্তরি-কাম প্রহরী পদটি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর, হাইকোর্টে দাখিলকৃত অধিদপ্তরের দেওয়া জবাব মোতাবেক কর্মঘণ্টা নির্ধারণ, বেতন বৈষম্য নিরসন, কাজের ধরন নির্ধারণ ও অবিলম্বে হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের দাবিতে সারা দেশ থেকে একত্রিত হয়ে অধিদপ্তরের সামনে কর্মসূচি পালন করছেন।
আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন জানান, তাদের কোনো সাপ্তাহিক ছুটি নেই। এ ছাড়া বিভিন্ন সমস্যার কারণে এবং চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে ২০১৭ সালে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করেন তারা। চলতি বছর ৩০ জুলাই আদালতের রায় তাদের পক্ষে আসলেও এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই আমরা বাধ্য হয়েই কর্মসূচি পালন করছি।
প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্মচারী কল্যাণ সমিতির যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন সরদার বলেন, সারা দেশে ৩৭ হাজার দপ্তরি-কাম প্রহরীদের ওপর অমানবিক নির্যাতন করা হচ্ছে। নিয়োগের পর থেকে বিদ্যালয়ের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাজ, টয়লেট পরিষ্কার, বাগান পরিষ্কার, দাপ্তরিক কাজসহ অনেককে প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে গিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। রাতে আবার বিদ্যালয় পাহারার কাজ করতে হয়। বিদ্যালয়ে চুরি হলে আমাদের জরিমানা দিতে হয়। এ পর্যন্ত অনেককে চুরি হওয়ার জন্য জরিমানা দিতে হয়েছে।
মামুন সরদার আরও বলেন, আমাদের সপ্তাহে একদিনও ছুটি নেই। দায়িত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করলেও আমাদের রাজস্ব খাতে নেওয়া হচ্ছে না। কর্মঘণ্টা নির্ধারণ না হওয়ায় প্রায় ২৪ ঘণ্টা কাজ করতে হচ্ছে। এসব কারণে বাধ্য হয়ে আমরা অধিদপ্তর ঘেরাও কর্মসূচিতে আসতে বাধ্য হয়েছি। দাবি বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
সান নিউজ/ আরএইচ