নিজস্ব প্রতিবেদক: রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার নিয়ে বাংলাদেশি কূটনীতিকদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি বলতে চাই যে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের কাছে অপপ্রচার সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ করা। যদি এটা করা হয়, তাহলে মিথ্যা রটনাকারীরা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার কোনো সুযোগ পাবে না।
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরে ডিজিটাল আইন সংশোধন
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) ইতালির রোমে প্রধানমন্ত্রীর সফরকালীন আবাসস্থল পারকো ডেই প্রিনসিপি গ্র্যান্ড হোটেলে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতদের সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
আরও পড়ুন: নির্বাচন পরিস্থিতি নজরে রাখবে ইইউ
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব জায়গায় আন্তর্জাতিক সংস্থা রয়েছে, সেই জায়গাগুলোতে আমাদের আরও সক্রিয় হওয়া উচিত, যাতে তারাও অপপ্রচার এবং ভুল তথ্যের শিকার হয়ে বিভ্রান্ত না হয়।
তিনি বলেন, কিছু লোক আছে, যারা কখনোই দেশকে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যেতে পারেনি। এমন কিছু লোক এবং কিছু অপরাধী, যারা অপরাধ করে বিদেশে আশ্রয় নিয়েছে, তারা দেশের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
আরও পড়ুন: বিএনপিকে সায় দেয়নি বিদেশিরা
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা দেশ থেকে বিপুল অর্থ পাচার করেছে। তাই তারা হাজার কোটি টাকা দেশের বিরুদ্ধে ব্যয় করতে সক্ষম। তাদের কত আছে! তারা বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে, মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করছে।
তিনি বলেন, এমন কিছু মানুষ আছেন, যারা দুর্নীতি বা অপরাধ করার মতো নানা কারণে চাকরি হারিয়েছেন। তারা এখন বিদেশে বসে সরকারের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। আমি জানি না, তারা এতো টাকা কোথায় পায়।
আরও পড়ুন: কাল রাজধানীতে আ.লীগের সমাবেশ
শেখ হাসিনা বলেন, কেউ খোঁজ করলে খুব পরিচিত কিছু মুখ দেখতে পাবেন, তারা সর্বত্র মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছেন ও অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
তিনি বলেন, অনেক সময় বিদেশিরা ভুল তথ্যের কারণে বিভ্রান্ত হয়। প্রতি নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগকে কীভাবে সরিয়ে দেওয়া যায়, তা নিয়ে ২/১ টি দেশ ব্যস্ত থাকে। এছাড়া যারা খুনিদের আশ্রয় দেয় এবং অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের সাথে জড়িত, তাদের কাছ থেকে আমাদের মানবাধিকারের কথা শুনতে হয়।
আরও পড়ুন: বিএনপি সংঘাতের অজুহাত খুঁজছে
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা অগ্নিসংযোগের অভিযোগে অভিযুক্ত, তাদের মানবাধিকার রক্ষায় তারা ব্যস্ত। কিন্তু তারা নিহত, আত্মীয়-স্বজন বা যারা দগ্ধ হয়েছেন, তাদের কোনো পরোয়া করেন না।
র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যবশত যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে নিয়োজিত, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। ফলে তারা আস্থা হারিয়ে ফেলে। এটি মানুষকে তাদের অপরাধ প্রবণতা বাড়াতে উৎসাহিত করে।
আরও পড়ুন: সংঘাতের আশঙ্কা নেই
যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে প্রতিরোধ করেছিল, তাদের ওপরই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। কিসের জন্য এটা করা হলো?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা একদিকে মানবাধিকার সুরক্ষার জন্য আওয়াজ তুলছেন, অন্যদিকে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের পক্ষে কথা বলছেন। এই দ্বিচারিতা বিশ্বময় চলছে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়
এ সময় প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের বিষয়ে তার সরকারের অবস্থানের কথাও উল্লেখ করেন।
মানবাধিকারের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, মানবাধিকার রক্ষা কেউ করলে, সেটা আওয়ামী লীগই করে। আর যারা মানবাধিকারের কথা বলে, তারা মানুষ হত্যা করে।
আরও পড়ুন: চলতি বছরে ৫১৬ জনের মৃত্যু!
দেশের নাম উল্লেখ না করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা তার বাবা-মা, ভাই, আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের গুলি করে হত্যা করেছে, তারা এখনো সে দেশে পলাতক রয়েছে। বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তারা খুনিদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠায়নি।
মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের সুরক্ষা দেওয়া এবং যারা মানবাধিকার রক্ষা করে, তাদের বিরুদ্ধে যাওয়া- এটিকে আমি একটি খেলা হিসেবে দেখি।
আরও পড়ুন: ১২ অঞ্চলে ঝড়ের আভাস
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যদি মানবাধিকারে বিশ্বাস না করি এবং আমাদের মধ্যে যদি মানবিক দিকগুলো না-ই থাকে, তাহলে কীভাবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। সূত্র: বাসস।
সান নিউজ/এনজে