নিজস্ব প্রতিবেদক: ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি দলকে বিএনপি জানিয়েছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবে না।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর দ্বার সবসময় খোলা
শনিবার (১৫ জুলাই) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ইইউ প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠকে নিজেদের এ অবস্থান জানায় বিএনপি।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনকে নিয়ে সারাবিশ্বের নজর কেন, এটাই হচ্ছে প্রশ্ন। কেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলকে এখানে এসে নির্বাচন নিয়ে তাদের মতামত দিতে হচ্ছে?
দক্ষিণ এশিয়ার অন্য কোনো দেশে তো তাদের যেতে হচ্ছে না। কেন বাংলাদেশে আসতে হচ্ছে? এটা সবার মনে প্রশ্ন। তাদের মনেও হয়ত একই প্রশ্ন কেন এখানে আসতে হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন যে প্রশ্নবিদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য নয় এটাই তার ভিত্তি।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকছে
আমির খসরু বলেন, তারা তাদের মতামত প্রকাশ করছে। তারা জানতে চাইছে আগামী দিনে নির্বাচন আদৌ জনগণের ভোটের মাধ্যমে হবে কি না। আর আমাদের পক্ষ থেকে যেটা সবসময় বলে আসছি, দেশের মানুষ ও বিশ্ব বলছে, এই অবৈধ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
তিনি বলেন, এখনই ডিসিদের, পুলিশ অফিসারদের পোস্টিং হচ্ছে। বিএনপি নেতাদের গ্রেফতার চলছে, বিভিন্ন জায়গায় আক্রমণ চলছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের মামলা ত্বরান্বিত করে সাজা দিচ্ছে। যাতে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে। অর্থাৎ ভোট চুরি প্রত্যেকদিন চলছে বাংলাদেশে।
আগামীতে তারা নিয়ন্ত্রণ করে ভোট চুরি করবে। স্বাভাবিক এই বিষয়গুলো আলোচনায় এসেছে। আমরা বলেছি, এই অবৈধ সরকারের অধীনে দেশের মানুষ তাদের ভোট প্রয়োগ করতে পারবে না। তাদেরকে প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারবে না। তাদের সরকার নির্বাচন করতে পারবে না। বিষয়গুলো সবার জানা আছে, কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিষয়গুলো যেহেতু আলোচনা আসছে, তাই বারবার বলতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে হতে পারে বিদ্যুৎ বিভ্রাট!
গত দুটি সংসদ নির্বাচনে ইইউ কোনো পর্যবেক্ষক পাঠায়নি, এবার তারা পাঠাবে কি না জানতে চাইলে আমির খসরু বলেন, সেটা তো তাদের সিদ্ধান্ত। পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি পাঠাবে না সেটা তাদের বিষয়। এটা তো আমি উত্তর দিতে পারবো না।
আগে তো বাংলাদেশে নির্বাচন হতে হবে বলে উল্লেখ খসরু বলেন, পর্যবেক্ষকের প্রশ্ন তখনই আসে যখন সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। দেশের জনগণ, বিশ্বের জনগণ, তারা কেউ বিশ্বাস করে না দেশে বিগত নির্বাচনগুলোতে জনগণ ভোট দিয়ে সরকার গঠন করেছে। আগামীতে করারও কোনো কারণ নেই।
তিনি আরও বলেন, দেখেন তারা তো নেপাল, ভুটান, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা কোথাও যাচ্ছে না। কেন তারা বাংলাদেশে আসছে। বিষয়টা তো দিনের আলোর মতো পরিষ্কার যে, বাংলাদেশে নির্বাচন হয় না।
আরও পড়ুন: ১০ টাকায় চোখ পরীক্ষা প্রধানমন্ত্রীর
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আক্রমণ, জেল, মিথ্যা মামলা, ডিসি-এসপি-টিএনও পোস্টিং, কর্মীদের কবজি ছিন্ন করে ফেলা, বিভিন্ন জায়গায় আক্রমণ করা, দুর্নীতি দমন কমিশনকে ব্যবহার করা, বিচার বিভাগকে ব্যবহার করা এসব তো প্রতিনিয়ত চলছে।
ইইউ প্রতিনিধি দলকে নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা আপনাদের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়ে কিছু বলেছেন কি না জানতে চাইলে আমির খসরু বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। যেখানে ডেমোক্রেটিক অর্ডার নেই, সেখানে সমান সুযোগ থাকতেই পারে না। যেটা নাই সেটা বলার তো প্রশ্ন আসে না। এটা সর্বজনবিদিত ব্যাপার।
আমির খসরু বলেন, যেখানে কোনো ডেমোক্রেটিক অর্ডার নেই। মানবাধিকার প্রশ্নবিদ্ধ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ, আইনের শাসন প্রশ্নবিদ্ধ, জীবনের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ, যেখানে ডেমোক্রেটিক অর্ডারই অনুপস্থিত সেখানে সংলাপ কিভাবে?
আরও পড়ুন: ১০ টাকায় চোখ পরীক্ষা প্রধানমন্ত্রীর
সংলাপের জন্য একটা ডেমোক্রেটিক অর্ডার লাগে, সংলাপ তো ডেমোক্রেটিক অর্ডারের অংশ। সেই পরিবেশ তো আগে ক্রিয়েট করতে হবে, তারপর তো সংলাপের প্রশ্ন আসবে।
প্রসঙ্গত, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাঈল জবিউল্যাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ এবং মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ও ফরেন অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান।
সান নিউজ/এইচএন