ছবি: সংগৃহীত
জাতীয়
তথ্য ফাঁস

যেসব ঝুঁকিতে পড়তে পারেন নাগরিকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ সরকারের একটি ওয়েবসাইটে নাগরিকদের পূর্ণ নাম, ফোন নম্বর, ইমেল ঠিকানা এবং জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরসহ ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস করা হয়েছে বলে দাবি করছেন বিটক্র্যাক সাইবার সিকিউরিটির গবেষক ভিক্টর মার্কোপোলোস।

আরও পড়ুন : ডেঙ্গুতে ২ পুলিশ সদস্যের মৃত্যু

শনিবার (৮ জুলাই) এ বিষয়টি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর অনেকে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। মনে একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, তথ্য ফাঁস হলে কী কী ঝুঁকিতে পড়তে পারেন তারা।

এ বিষয়ে ৩ জন সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হলে একজন নাগরিক যেকোনো সময় আর্থিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।

আরও পড়ুন : ৭ অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টির আভাস

ভুয়া সিম রেজিস্ট্রেশন, অবৈধ লেনদেনের শঙ্কা :

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির সহকারী অধ্যাপক ও সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা জানান, নাগরিকের ফাঁস হওয়া যেকোনো তথ্যই অপব্যবহার হতে পারে। এসব তথ্য দিয়ে কোনো অপরাধী অন্য কারও নামে ভার্চুয়াল অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলতে পারে অথবা সিম রেজিস্ট্রেশন করে সেগুলো দিয়ে অপরাধ করতে পারে।

তখন অপরাধীকে শনাক্ত করতে গেলে ঐ নিরীহ সাধারণ নাগরিক ফেঁসে যেতে পারেন। এছাড়া আরএনএ এবং ফিঙ্গারপ্রিন্টের মতো ডেটা ফাঁস হলে, এটা উদ্বেগের ব্যাপার। এভাবে নাগরিকদের ডিজিটাল আইডেন্টিটিগুলো ফাঁস হলে অবৈধ লেনদেনেরও আশঙ্কা থাকে।

আরও পড়ুন : নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি

খালি হতে পারে ব্যাংক :

সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস (সিসিএ) ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা মুশফিকুর রহমান জানান, যে ধরনের ডেটা গিয়েছে বলে আমরা জেনেছি, এগুলো একজন মানুষের পার্সোনালি আইডেন্টিফাইয়েবল ইনফরমেশন। যেমন- কারও বাসার ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, ফোন নম্বর ইত্যাদি দিয়ে সহজেই তাকে এবং তার অবস্থানকে নিশ্চিত করা যায়।

যেহেতু আইডেন্টিফাইয়েবল বিভিন্ন তথ্য আছে, সেক্ষেত্রে এসব ডেটা নিয়ে অপরাধীরা ঐ ব্যক্তিকে নানাভাবে ব্ল্যাকমেইল করতে পারে। ফোনের মাধ্যমে হুমকি দিতে পারে, চাঁদা চাইতে পারে। অনেক সময় এসব তথ্য ব্যাংকে দিয়ে কোনো ব্যক্তির আর্থিক অবস্থা জানতে পারে।

আরও পড়ুন : খুলনায় বাড়ছে ডেঙ্গু

মুশফিকুর রহমান বলেন, যেসব তথ্য ফাঁস হয়েছে, এগুলো ব্যাংকের লেনদেনের জন্যও অনেক সময় লাগে। আমরা ফোনের মাধ্যমে ব্যাংকে কোনো ধরনের সহযোগিতা নিতে গেলে কাস্টমার কেয়ার থেকে আমাদের কাছে মায়ের নাম, বাবার নাম, জন্ম তারিখের মতো তথ্য চেয়ে অথেনটিসিটি নিশ্চিত করা হয়।

এসব তথ্য অপরাধীদের হাতে গেলে সে ব্যাংকের তথ্য জেনে অবৈধভাবে লেনদেনের মাধ্যমে নাগরিককে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

আরও পড়ুন : স্পেনে যাওয়ার পথে নিখোঁজ ৩০০

তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ পুলিশের কাছে ভাড়াটিয়া ও বাড়িওয়ালাদের তথ্য রয়েছে। সেসব তথ্য দেখলে সহজেই বোঝা যায়, কার আর্থিক অবস্থা কেমন, তিনি বিত্তশালী কি না। এসব তথ্য অপরাধীদের কাছে গেলে তারা খুব সহজে নানা কায়দায় নাগরিকদের হুমকি দিয়ে চাঁদা চাইতে পারে। অনেকেই এমন চাঁদাবাজির ফোন পায় বলে শুনেছি।

উচ্চ মূল্যে ডাটা কেনে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান :

সাইবার বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রায়ই বিভিন্ন ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড বা লোন দিতে বা হাউজিং প্রতিষ্ঠান ফ্ল্যাট-জমি বিক্রির জন্য নাগরিকদের ফোন করে। অনেক নাগরিকই জানে না, তাদের নম্বর ঐ প্রতিষ্ঠান কীভাবে পেল। মূলত, আন্তর্জাতিকভাবে এসব তথ্য মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বিক্রি হয়ে থাকে।

তথ্য ও সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ডিকোডস ল্যাবের এমডি ও সিইও এবং আইটি বিশেষজ্ঞ আরিফ মঈনুদ্দিন জানান, এসব তথ্য অনেক সময় মার্কেটিং বা ক্যাম্পেইন রিলেটেড কাজের জন্য উচ্চ মূল্যের বিনিময়ে বিক্রি করা হয়। ব্যবসার স্বার্থে বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান এসব তথ্য কিনে থাকে।

আরও পড়ুন : ছাত্রলীগ নেতা শামীম গাজী গ্রেফতার

নাগরিকরা ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করতে পারবেন :

সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া জানান, তথ্য সুরক্ষা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো আইন নেই। আমরা আইনের একটি ড্রাফট হাতে নিয়েছি। তবে এটা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

তিনি জানান, সংবিধানে ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার কথা বলা হয়েছে। সংরক্ষিত তথ্য ফাঁস করা হলে, নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করা হয়। কেউ যদি মনে করেন তিনি ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, সেক্ষেত্রে তিনি সুপ্রিম কোর্টের সাইবার বিভাগে এসে মামলা করে ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারবেন।

আরও পড়ুন : সড়কে প্রাণ গেল ২ বন্ধুর

আসছে ডেটা সিকিউরিটি অ্যাক্ট :

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানিয়েছেন, নাগরিকদের তথ্য-উপাত্ত সুরক্ষিত রাখতে খুব শিগগিরই তথ্য সুরক্ষা আইন আসছে।

রোববার (৯ জুলােই) তিনি সাংবাদিকদের বলেন, খুব শিগগিরই ডেটা সিকিউরিটি অ্যাক্ট আসছে। এ আইনের খসড়া চূড়ান্ত পর্যায়ে।

তিনি জানান, তথ্য সুরক্ষার জন্য দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সুপারিশ অস্ট্রেলিয়া, কানাডার সাম্প্রতিক সময়ের আইন এবং ইউএসএ ও জাতিসংঘের সিভিপিআর এগুলো সব স্টাডি করে সবার মতামতের ভিত্তিতে এ আইনের খসড়া তৈরি হয়েছে। শিগগিরই ডেটা সিকিউরিটি অ্যাক্ট সংসদে উপস্থাপন করতে পারবো।

সান নিউজ/এনজে

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ঈদের পরে পর্যটন কেন্দ্রের হালহাকিকাত

বিনোদন প্রতিবেদক: রমজান মাসে দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ছিল প্রায় সুনসান নীরব...

বিমসটেক সম্মেলনের পথে প্রধান উপদেষ্টা

সান ডেস্ক: এশিয়ার শীর্ষ নেতাদের অংশগ্রহণে বিমসটেকের ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ...

সমাজে এখনও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা যায়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের উদ্দেশ্য ছিল এ...

শপথ নিলেন আপিল বিভাগের দুই বিচারপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসে...

স্বাধীনতা পুরস্কার তুলে দিলেন ড. ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অ...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা