জেলা প্রতিনিধি: নিজের ভাগ্য গড়তে আসিনি, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তারপরও যে অপবাদ দিয়েছে, তার প্রতিবাদ করে নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করতে পেরেছি- এটাই হলো সবচেয়ে বড় কথা। সেই শক্তিটা কিন্তু আপনারা যুগিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: তেলবাহী জাহাজে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৫
শনিবার (১ জুলা্ই) গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়ায় দলের নেতাকর্মীদের সাথে পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা বিনিময় এবং আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সভায় শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আজকে সারা বিশ্বে উজ্জ্বল করতে পেরেছি। যারা বাংলাদেশের কোনো ভালো দেখে না চোখে; চোখ থাকতে যারা অন্ধ তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলার নাই। তারা দেখে না, কিন্তু ভোগ করে।
তিনি বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, আজকে সবার হাতে মোবাইল ফোন, অনলাইন। সবাই সারা দিন কথা বলে। এতোগুলো টেলিভিশন দিয়ে দিয়েছি।
আরও পড়ুন: সোমবার থেকে কমবে বৃষ্টি
সারাদিন কথাবার্তা বলে। তারপরও যদি বলে কিছুই বলতে পারি না, কথা বলার অধিকার নাই- এদের ব্যাপারে করুণা করা ছাড়া আর কিছুই নাই। আমরা তাদের করুণাই করি।
সরকারপ্রধান এ সময় বলেন, ফসল ফলানোর উপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, আমাদের ফসল আমাদেরই ফলাতে হবে। আমাদের খাদ্য চাহিদা আমরা পূরণ করবো। আর যা উদ্বৃত্ত থাকে তা বরং অন্যদের দিতে পারব। সেটাই আমরা করব।
খাদ্য সংরক্ষণের আমরা ব্যবস্থা করছি জানিয়ে তিনি বলেন, এ জন্য যা যা সহযোগিতা করার আমরা করব। আমার বাবা দেশ স্বাধীন করে গেছেন। তাঁর স্বপ্ন পূরণ করে ক্ষুধা দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়া আমার লক্ষ্য।
আরও পড়ুন: কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী
আজকে হতদরিদ্র মাত্র ৫ ভাগ। সেটাও যেন না থাকে, তার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। একজনও হতদরিদ্র বলে কেউ থাকবে না। প্রত্যেকের একটি ঘর, জমি আর জীবন জীবিকার ব্যবস্থা ইনশাল্লাহ আমরা করতে পারব।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটালীপাড়াবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আজকে আপনারাই আমার সব দায়িত্ব নিয়েছেন। আমার নির্বাচন আমার সব কিছু আপনারা দেখেন। টুঙ্গিপাড়া কোটালীপাড়ার মানুষগুলোই আমার সবচেয়ে বড় শক্তি।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় সড়ক পথে দুই দিনের সফরে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া এসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। কোটালীপাড়ায় পৌঁছানোর পর নেতা-কর্মীরা প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ও বিভিন্ন শ্লোগান দেন।
আরও পড়ুন: ২০ জেলায় ঝড়-বৃষ্টির আভাস
এ সময় প্রধানমন্ত্রী হাত নেড়ে নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানান। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আয়োজিত মত বিনিময় সভা শেষে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নতুন ভবনের ফলক উন্মোচন করেন তিনি।
এরপর দলীয় কার্যালয় ভবনের সামনে একটি আম, একটি নিম এবং একটি বকুল গাছের চারা রোপণ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
দুপুরে কোটালীপাড়ার কর্মসূচি শেষ করে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন শেখ হাসিনা। টুঙ্গিপাড়া পৌঁছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী।
রোববার (২ জুলাই) টুঙ্গিপাড়ায় জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাঁর মত বিনিময় করার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে বইছে আনন্দের বন্যা। তাঁকে এক নজর দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিলেন স্থানীয় মানুষ এবং দলীয় নেতাকর্মীরা।
তারা মনে করেন, প্রধানমন্ত্রীর এ সফর তাদের মাঝে ঈদের আনন্দ কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে কেন্দ্র করে শোভাবর্ধনের আয়োজন করা হয়েছে। সড়কের মোড়ে মোড়ে টাঙানো হয়েছে নানা ধরনের ব্যানার, ফেষ্টুন ও বিলবোর্ড।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে চায় সৌদি
শুভেচ্ছা জানিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে তোরণ। একইসঙ্গে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
প্রসঙ্গত, শনিবার (১ জুলাই) সকাল ৮ টায় গণভবন থেকে সড়ক পথে গোপালগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সান নিউজ/এইচএন