নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে না পারাটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন্য ‘গ্লানির’ বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
বুধবার (১৯ আগস্ট) রাতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আয়োজনে ‘৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশ: বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুনর্বাসন’ শীর্ষক এক ওয়েবনিয়ারে এই মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে নিজেকে কখনোই সফল পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী দাবি করতে পারব না যত দিন না পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর শেষ খুনিটিকে আইনের মুখোমুখি করিয়ে দিতে না পারবো। এসময় এটা যে কত বড় গ্লানি জাতি হিসেবে… তার চেয়ে অনেক বড় গ্লানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইনস্টিটিউশন হিসেবে বলেও জানান তিনি।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানান, রাশেদ চৌধুরী ও নূর চৌধুরী ছাড়া বাকিরা পাকিস্তান, লিবিয়া অথবা মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিগ্রহ লেগে থাকা দেশগুলোতেই লুকিয়ে আছেন। আমরা আমাদের আন্তর্জাতিক কূটনীতি জোরদার করেছি এদেরকে খুঁজে বের করার জন্য। আশা করছি, তাদের অবস্থান আমরা চিহ্নিত করতে পারব। তবে একটি বড়, একটি টেকনিক্যাল ইস্যু আছে, বিশেষ করে তিনজন, নূর ও রাশেদ চৌধুরী ছাড়া বাকি তিনজন তারা নাম পাল্টে ফেলেছেন। তারা পাকিস্তানি বা অন্য দেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করেছেন, সে তথ্য আমরা একটা সময় পর্যন্ত পেয়েছিলাম। তারপর সরকারের ধারাবাহিকতার অভাবের কারণে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারিনি। তবে আমরা এগিয়ে যাব।
শাহরিয়ার আলম বলেন, খুনিরা রাষ্ট্রদূতের ভূমিকায় দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছেন বলে কম বলা হবে। তারা বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন। তারা যেসব দেশে গিয়েছিলেন সেসব দেশের সরকার ও জনগণ জানত, তারা খুনি। তারা এমন একটি দেশ থেকে এসেছে যে দেশের জাতির জনককেই তারা খুন করে এসেছেন। তো বাংলাদেশ সমন্ধে সে দেশের জনগণের কত নিচু বা খারাপ ধারণা হয়ে থাকতে পারে?
শাহরিয়ার আলম আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরই তাদের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিলো। জিয়া ও এরশাদের শাসনামলে বহু সেনা সদস্য হত্যায় যুক্ত থাকার পর তাদের দেশে আসতেও বাধা দেওয়া হয়েছিলো। পরে গাদ্দাফির মধ্যস্ততায় তারা দেশে আসতে পারেন। ফ্রিডম পার্টি গঠনের মাধ্যমেই তাদের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা প্রকাশ পেয়ে যায়।
তিনি জানান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কথা ধোপে টেকে না। তার দলের সাংসদরা, নেতারা জাতীয় সংসদে ও টিভি টকশোতে আরেকটি ১৫ আগস্ট ঘটানোর হুমকি দিয়েছেন। তারা বলেছেন, শেখ হাসিনাকে সপরিবার নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী শাহ আলী ফরহাদের উপস্থাপনায় এ অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে ছিলেন গবেষক ও কলামনিস্ট সৈয়দ বদরুল আহসান, সাংবাদিক ও কলামনিস্ট সুভাষ সিংহ রায়, অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের আরএমআইটির অধ্যাপক শামস রহমান এবং লেখক-গবেষক হাসান মোরশেদ।
সান নিউজ/ আরএইচ