নিজস্ব প্রতিবেদক:
বন্ধ হয়ে যাওয়া করোনা তথা কোভিড-১৯ বিষয়ক স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিন চালু রাখার পক্ষে মত দিয়েছে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটি। একইসঙ্গে সপ্তাহে একবার গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে প্রশ্নোত্তর পর্ব থাকা উচিত বলেও জানিয়েছে কমিটি।
বুধবার (১৯ আগস্ট) জাতীয় পরামর্শক কমিটির ১৭তম অনলাইন সভায় তারা এ প্রস্তাব করেছে। কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লার পক্ষে রাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একথা জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে করোনাভাইরাস ইস্যুতে প্রথম ব্রিফিং আয়োজন করে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা তখন করোনা বিষয়ক সব তথ্য দিতেন।
এরপর মার্চে আইইডিসিআর থেকে ব্রিফিং করতে থাকে স্বাস্থ্য অধিদফতর। কিন্তু গত ১১ আগস্ট শেষবারের মতো বুলেটিন প্রচার হয়, ১২ আগস্ট থেকে নিয়মিত বুলেটিনের পরিবর্তে অধিদফতর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পাঠিয়ে করোনা বিষয়ক তথ্য দিচ্ছে।
এর আগে গত সাত এপ্রিল করোনা বিষয়ক ব্রিফিং এ সাংবাদিকদের থেকে প্রশ্ন নেওয়া বাদ দিয়ে এর নাম দেওয়া হয় বুলেটিন। সেদিন ব্রিফিং এ যুক্ত হয়ে অধিদফতরের তৎকালীন মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছিলেন, নিয়মিত ব্রিফিং হিসেবে প্রচার না করে তারা একে স্বাস্থ্য বুলেটিন হিসেবে প্রচার করবেন। সবার সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘এরপর আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্ব থাকবে না।’
এরপর গত ১২ আগস্ট নিয়মিত করোনা বুলেটিন একেবারে বন্ধ না করে সপ্তাহে দুই দিন প্রচারের জন্য আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ, মৃত্যুসহ বিভিন্ন তথ্য নিয়ে প্রতিদিন স্বাস্থ্য বিভাগের আপডেট বন্ধ হলে সংক্রমণ বিস্তারে মানুষের মাঝে শৈথিল্য দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি গুজব বিস্তারের আশঙ্কাও থেকে যাবে। তাই বিষয়টি বাস্তবতার নিরিখে বিবেচনায় নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানাই।’
বুলেটিন বন্ধের খবরে একাধিক জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ তখন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, কোনওভাবেই বুলেটিন প্রচার বন্ধ করা ঠিক হয়নি। এর ফলে জনগণের মধ্যে অসচেতনতা আসবে, তারা স্বাস্থ্যবিধি মানবে না, দেশ আরও ঝুঁকিতে পড়বে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কমিটি আরও জানায়, সরকারিভাবে করোনা টেস্টের জন্য বর্তমানে ধার্যকৃত মূল্য পরিবর্তন করা প্রয়োজন। করোনা সন্দেহে বুথে এসে টেস্টের জন্য নমুনা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিনামূল্যে এবং বাসায় স্বাস্থ্যকর্মী গিয়ে নমুনা সংগ্রহের ক্ষেত্রে ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৩০০ টাকা করার পরামর্শ দেন তারা।
কমিটি তাদের আরেক প্রস্তাবে বলেছে, হাসপাতালে দায়িত্ব পালনের পর চিকিৎসকসহ অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের বিভিন্ন হোটেলে কোয়ারেন্টিনে থাকার ব্যবস্থা হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছেন। স্বাস্থ্যকর্মীদের হাসপাতালে দায়িত্ব পালনের পর মানসম্মত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। অন্যথায় শুধু স্বাস্থ্যকর্মীরাই নন, তাদের পরিবার পরিজনও করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়বেন।
সান নিউজ / বি.এম.