নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাধীনতার পর ১৯৭১ সালে মাত্র ৪৯৮৫ কোটি টাকার অর্থনীতি নিয়ে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ। পরের বছর ১৯৭২ সালে প্রথম ১৯৭২-৭৩ অর্থ বছরের জন্য ৭৮৬ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন : উলিপুরে অবাধে বালু উত্তোলনের অভিযোগ
উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় আজ স্বাধীনতার ৫২ বছরের ব্যবধানে ৯৬৯ গুণ বড় বাজেট নিয়ে জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ সরকার ও অর্থমন্ত্রী হিসেবে মুস্তফা কামালের পঞ্চম বাজেট উপস্থাপন এটি।
আরও পড়ুন : বিদেশ যেতে পারবেন সম্রাট
বৃহস্পতিবার (১ জুন) জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে এবারের বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী।
তার আগে মন্ত্রিসভার অনুমোদন হবে। পরে ঐ প্রস্তাবে সই করবেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন অর্থ বছর শুরু হবে।
এবার অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তব্যের প্রতিপাদ্য ধরা হচ্ছে ‘উন্নয়নের দেড় দশক : স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে।’
আরও পড়ুন : দুর্নীতির দায়ে অধ্যক্ষ ওএসডি
অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, বাংলাদেশের প্রথম বাজেটের আকার ছিল ৭৮৬ কোটি টাকা। ১৯৭২ সালে (১৯৭২-৭৩) অর্থ বছরে ঐ বাজেট দিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রথম অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন।পরের ২ টি বাজেটও তিনি দিয়েছিলেন।
স্বাধীনতার ৫২ বছর পর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাংলাদেশের ৫২ তম যে বাজেট দেবেন, তার আকার ধরা হচ্ছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন : দেশের ৫২তম বাজেট ঘোষণা আজ
এ হিসাবে স্বাধীনতার পর প্রথম বাজেটের চেয়ে আসন্ন নতুন বাজেটের আকার বাড়ে দাঁড়াবে ৯৬৯.১৯ গুণ বেশি।
এবার টানা পঞ্চমবারের মতো বাজেট দেবেন আ হ ম মুস্তফা কামাল। এর আগে টানা ১০ বার বাজেট দিয়ে রেকর্ড করছিলেন প্রয়াত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তার আগে বাংলাদেশে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া টানা ৬ টি বাজেট দিয়েছেন।
তবে আবদুল মুহিত টানা ১০ বাজেট ছাড়াও এরশাদ সরকারের সময় (১৯৮২-৮৩ এবং ১৯৮৩-৮৪ অর্থবছর) ২ টি বাজেট দিয়েছিলেন। এ হিসেবে মুহিতের স্থাপনকারী বাজেটের সংখ্যা ১২ টি। এছাড়া প্রয়াত অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানেরও ১২ টি বাজেট দেওয়ার রেকর্ড রয়েছে।
আরও পড়ুন : নামিবিয়ায় পোরিজ খেয়ে ১৩ জনের মৃত্যু
স্বাধীনতার পর বাজেট এবং অর্থমন্ত্রীর তালিকা :
১৯৭২-৭৩ অর্থ বছর, তাজউদ্দীন আহমদ ৭৮৬ কোটি টাকা।
১৯৭৩-৭৪ অর্থ বছর, তাজউদ্দীন আহমদ ৯৯৫ কোটি টাকা।
১৯৭৪-৭৫ অর্থবছর, তাজউদ্দীন আহমদ ১০৮৪.৩৭ কোটি টাকা।
১৯৭৫-৭৬ অর্থ বছর, ড. আজিজুর রহমান ১৫৪৯.১৯ কোটি টাকা।
১৯৭৬-৭৭ অর্থ বছর, মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ১৯৮৯.৮৭ কোটি টাকা।
১৯৭৭-৭৮ অর্থ বছর, লে. জেনারেল জিয়াউর রহমান ২১৮৪ কোটি টাকা।
১৯৭৮-৭৯ অর্থ বছর, রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ২৪৯৯ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন : প্রধানমন্ত্রীকে এরদোয়ানের ফোন
১৯৭৯-৮০ অর্থ বছর, ড. এম এন হুদা ৩৩১৭ কোটি টাকা।
১৯৮০-৮১ অর্থ বছর, এম সাইফুর রহমান ৪১০৮ কোটি টাকা।
১৯৮১-৮২ অর্থ বছর, এম সাইফুর রহমান ৪৬৭৭ কোটি টাকা।
১৯৮২-৮৩ অর্থ বছর, আবুল মাল আবদুল মুহিত ৪৭৩৮ কোটি টাকা।
১৯৮৩-৮৪ অর্থ বছর, আবুল মাল আবদুল মুহিত ৫৮৯৬ কোটি টাকা।
১৯৮৪-৮৫ অর্থ বছর, এম সাইদুজ্জামান ৬৬৯৯ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন : ফেনীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩
১৯৮৫-৮৬ অর্থ বছর, এম সাইদুজ্জামান ৭১৩৮ কোটি টাকা।
১৯৮৬-৮৭ অর্থ বছর, এম সাইদুজ্জামান ৮৫০৪ কোটি টাকা।
১৯৮৭-৮৮ অর্থ বছর, এম সাইদুজ্জামান ৮৫২৭ কোটি টাকা।
১৯৮৮-৮৯ অর্থ বছর, মেজর জেনারেল (অব.) মুনিম ১০৫৬৫ কোটি টাকা।
১৯৮৯-৯০ অর্থ বছর, ড. ওয়াহিদুল হক ১২৭০৩ কোটি টাকা।
১৯৯০-৯১ অর্থ বছর, মেজর জেনারেল (অব.) মুনিম ১২৯৬০ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন : জাতিসংঘের এজেন্ডায় একাত্তরের গণহত্যা
১৯৯১-৯২ অর্থ বছর, এম সাইফুর রহমান ১৫৫৮৪ কোটি টাকা।
১৯৯২-৯৩ অর্থ বছর, এম সাইফুর রহমান ১৭৬০৭ কোটি টাকা।
১৯৯৩-৯৪ অর্থ বছর, এম সাইফুর রহমান ১৯০৫০ কোটি টাকা।
১৯৯৪-৯৫ অর্থ বছর, এম সাইফুর রহমান ২০৯৪৮ কোটি টাকা।
১৯৯৫-৯৬ অর্থ বছর, এম সাইফুর রহমান ২৩১৭০ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন : কানাডায় দাবানল নিয়ন্ত্রণের বাইরে
১৯৯৬-৯৭ অর্থ বছর, এসএএমএস কিবরিয়া ২৪৬০৩ কোটি টাকা।
১৯৯৭-৯৮ অর্থ বছর, এসএএমএস কিবরিয়া ২৭৭৮৬ কোটি টাকা।
১৯৯৮-৯৯ অর্থ বছর, এসএএমএস কিবরিয়া ২৯৫৩৭ কোটি টাকা।
১৯৯৯-০০ অর্থ বছর, এসএএমএস কিবরিয়া ৩৪২৫২ কোটি টাকা।
২০০০-০১ অর্থ বছর, এসএএমএস কিবরিয়া ৩৮৫২৪ কোটি টাকা।
২০০১-০২ অর্থ বছর, এসএএমএস কিবরিয়া ৪২৩০৬ কোটি টাকা।
২০০২-০৩ অর্থ বছর, এম সাইফুর রহমান ৪৪৮৫৪ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন : জিএমপি কমিশনার হলেন মাহবুব আলম
২০০৩-০৪ অর্থবছর, এম সাইফুর রহমান ৫১৯৮০ কোটি টাকা।
২০০৪-০৫ অর্থ বছর, এম সাইফুর রহমান ৫৭২৪৮ কোটি টাকা।
২০০৫-০৬ অর্থ বছর, এম সাইফুর রহমান ৬১০৫৮ কোটি টাকা।
২০০৬-০৭ অর্থ বছর, এম সাইফুর রহমান ৬৯৭৪০ কোটি টাকা।
২০০৭-০৮ অর্থ বছর, এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম ৯৯৯৬২ কোটি টাকা।
২০০৮-০৯ অর্থ বছর, এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম ৯৯৯৬২ কোটি টাকা।
২০০৯-১০ অর্থ বছর, আবুল মাল আবদুল মুহিত ১১৩,৮১৫ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন : ভারত-চীন বৈঠক অনুষ্ঠিত
২০১০-১১ অর্থ বছর, আবুল মাল আবদুল মুহিত ১৩২,১৭০ কোটি টাকা।
২০১১-১২ অর্থ বছর, আবুল মাল আবদুল মুহিত ১৬৫,০০০ কোটি টাকা।
২০১২-১৩ অর্থ বছর, আবুল মাল আবদুল মুহিত ১৯১,৭৩৮ কোটি টাকা।
২০১৩-১৪ অর্থ বছর, আবুল মাল আবদুল মুহিত ২ লাখ ২২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা।
২০১৪-১৫ অর্থ বছর, আবুল মাল আবদুল মুহিত ২ লাখ ৫০ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন : ঢাকাসহ ৪ বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস
২০১৫-১৬ অর্থ বছর, আবুল মাল আবদুল মুহিত ২ লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
২০১৬-১৭ অর্থ বছর, আবুল মাল আবদুল মুহিত, ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা।
২০১৭-১৮ অর্থ বছর, আবুল মাল আবদুল মুহিত, ৪ লাখ ২৭০ কোটি টাকা।
২০১৮-১৯ অর্থ বছর, আবুল মাল আবদুল মুহিত, ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা।
২০১৯-২০ অর্থ বছর, আ হ ম মুস্তফা কামাল, ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা।
২০২০-২১ অর্থ বছর, আ হ ম মুস্তফা কামাল, ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা।
২০২১-২২ অর্থ বছর, আ হ ম মুস্তফা কামাল, ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন : পঞ্চগড়ে রিকশা পেলেন ৪০ জন
২০২২-২৩ অর্থ বছর, আ হ ম মুস্তফা কামাল, ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা।
২০২৩-২৪ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা।
বিশাল বড় এ বাজেটের ঘাটতি ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ৫.২ শতাংশ।
এবার বাজেটের আয়-ব্যয়ের বিশাল ঘাটতি পূরণে প্রধান ভরসাস্থল হিসাবে ব্যাংক খাত বেছে নিয়েছে সরকার। ফলে ঘাটতি পূরণে ব্যাংক খাত থেকে ১ লাখ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা নিচ্ছে সরকার।
আরও পড়ুন : কানাডায় দাবানল নিয়ন্ত্রণের বাইরে
আসন্ন বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্য মাত্রা হচ্ছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। কর বহির্ভূত ও অন্যান্য আয়ের লক্ষ্য মাত্রা হচ্ছে ২০ হাজার কোটি টাকা।
কর ছাড়া প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। আর বৈদেশিক অনুদান থেকে সংগ্রহের লক্ষ্য মাত্রা রাখা হয়েছে ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।
চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের বাজেটের আকার ছিল ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। যদিও সংশোধিত বাজেটের এই আকার কমে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৬০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা।
সান নিউজ/এনজে