হারুন উর রশিদ সোহেল, রংপুর:
করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাবে লোকসান দেখা দিয়েছে পশ্চিমাঞ্চলীয় রেল বিভাগে। গত ছয়মাসে রেলের এই বিভাগে আয় কমেছে ২৩০ কোটি টাকা।
পশ্চিমাঞ্চলীয় রেলের বাণিজ্যিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির আগে আন্ত:নগর, লোকালসহ ট্রেন চলতো ১০২টি। এখন চলছে মাত্র ২০টি। যাত্রীও কমেছে অর্ধেকের মতো। এতে করে প্রতি মাসে কমছে আয়। ফলে দিন দিন বাড়ছে লোকসানের পাল্লা। সব ট্রেন চালু না থাকায় রেলের অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও আলস সময় কাটাতে হচ্ছে।
করোনার আগে রংপুর এক্সপ্রেস, লালমনি এক্সপ্রেস, কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, একতা, দ্রুতযান, দোলনচাঁপা, করতোয়া এক্সপ্রেসসহ ৫২টি আন্ত:নগর ট্রেন ঢাকাসহ বিভিন্ন রুটে চলাচল করতো। লোকাল ট্রেন চলতো ৫০টি। এসব ট্রেনে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতেন। কিন্তু করোনা প্রকোপের প্রথম দিকে সড়ক পরিবহনের পাশাপাশি রেলে যাত্রী পরিবহনও বন্ধ হয় যায়। ফলে যাত্রীরা রেলভ্রমণের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন। সেই সঙ্গে রেল বিভাগের শত শত কর্মী অলস সময় কাটাতে শুরু করেন। ট্রেন বন্ধ থাকায় অনেক কর্মকর্তা ও র্কর্মচারীর চোখে-মুখে অনিশ্চয়তার ছায়া নেমেছে।
প্রতিমাসে এ অঞ্চলে রেলের আয় হতো গড়ে ৪২ থেকে ৪৩ কোটি টাকা। এখন হয় মাত্র চার কোটি টাকা। করোনায় প্রতিমাসে এ অঞ্চলের রেলে আয় কমেছে ৩৮ কোটি টাকা। সে হিসেবে করোনার ছয়মাসে রেলের আয় কমেছে ২৩০ কোটি টাকা।
সূত্র জানায়, করোনার কারণে বন্ধ হয়ে গেলেও কিছু কিছু ট্রেন সীমিত আকারে চালু করা হয়। রোববার (১৬ আগস্ট) থেকে আরও ছয়টি আন্ত:নগরসহ এখন আন্ত:নগর ও লোকাল মিলে ২৬টি ট্রেন পশ্চিমাঞ্চলে চলছে। তবে যাত্রীসংখ্যা অর্ধেকের কম বলে দাবি করছে রেল বিভাগ।
রেলপথে ভ্রমণকারী জাহিদ হাসান ও হাদিউজ্জামান হাদিসহ বেশকয়েক জন যাত্রী মনে করেন, করোনার প্রকোপ কিছুটা কমেছে। এজন্য সরকার সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটা স্বাভাবিক করেছে। রেলপথের যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হলে হাজার হাজার যাত্রী রেলপথে যাতায়াতের সুবিধা পেতেন। দ্রুততম সময়ে সকল রুটের ট্রেন চালুর দাবি জানান তারা।
আমিনুল হক, জামাল মিয়াসহ কয়েকজন রেলকর্মী জানান, করোনার কারণে ট্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা বাড়িতে অলস সময় কাটাচ্ছেন। পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, কবে নাগাদ সব ট্রেন আগের মতো চলবে এ বিষয়ে তারা চিন্তিত। অনেকের ঘরে খাবার নেই। আছে শুধুই দুশ্চিন্তা।
পশ্চিমাঞ্চলীয় রেলের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার (সিসিএম) আহসান উল্লাহ ভুঁইয়া জানান, করোনার কারণে রেলের আয় অস্বাভাবিক কমে গেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পশ্চিমাঞ্চলীয় রেল আবারও ঘুরে দাঁড়াবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।
সান নিউজ/ এআর