সান নিউজ ডেস্ক:
শিশুদেরকে স্কুলমুখী করতে প্রাথমিক শিক্ষাকে বিনামূল্যে বাধ্যতামূলক করা, বছরের প্রথম দিনেই কয়েক কোটি নতুন বই বিনামুল্যে ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে পৌঁছে দেয়াসহ সরকারের বেশকিছু উদ্যোগের পরও শিশুদের একটি বড় অংশ এখনও শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত।
সারাবিশ্বে প্রাথমিক শিক্ষাবঞ্চিত প্রায় ১০ শতাংশ শিশুই বাংলাদেশের। সম্প্রতি জাতিসংঘ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের সঙ্গে বাংলাদেশের নিজস্ব এক প্রতিবেদনের তুলনামূলক চিত্রে এই তথ্য উঠে এসেছে।
সারাবিশ্বে শিক্ষাবঞ্চিত শিশু-কিশোরের সংখ্যা ২৬ কোটি। এর মধ্যে ৬-১১ বছর বয়সী ৬ কোটি ১০ লাখ শিশু প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস উপলক্ষে গত শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ২০৩০ সালের ‘অ্যাজেন্ডা ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’ প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ হয়।
আর বাংলাদেশর ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে শিশু-কিশোর রয়েছে প্রায় ৬ কোটি। এর মধ্যে ৬-১১ বছর বয়সী শিশুর সংখ্যা ২ কোটি ৬০ লাখ, যাদের মধ্যে ৫৬ লাখ শিশুই শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। ২০১৭ সালের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
এই হিসেবে সারাবিশ্বে প্রাথমিক শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত শিশুর মধ্যে কেবল বাংলাদেশেই রয়েছে ৯ দশমিক ১৮ শতাংশ। শিশুদের শিক্ষার এই অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ১২-১৪ বছর বয়সীদের মধ্যে ৬ কোটি শিশু মাধ্যমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। আর উচ্চমাধ্যমিকে ১৫- ১৭ বছর বয়সী ১৪ কোটি ২০ লাখ শিশু শিক্ষার সুযোগ পায় না ।
বিশ্বে প্রাপ্ত বয়স্ক নিরক্ষর মানুষের সংখ্যা ৭৭ কোটি । যাদের বেশির ভাগ নারী। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো ২০১০-২০১৫ সালে ১২৮টি দেশের তথ্যে দেখা যায়, ১২ বছরের নিচে ৪০ কোটির বেশি শিশু স্কুল ছেড়ে দিচ্ছে। আর ৮০ কোটি শিশু যোগ্যতা ছাড়াই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করছে বলে জানাচ্ছে প্রতিবেদনটি।
প্রতিবেদন আনুযায়ী ৪০টি দেশের ৪ জনের ১ জনের কম শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করতে পেরেছে। আর ৬০টি দেশের ২ জনের ১ জনের কম শিক্ষার্থী উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন। উচ্চমাধ্যমিক শেষ করেছে ১৪টি দেশের ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী।
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে সংস্থার উপ-মহাসচিব আমিনা মোহাম্মদ বলেন, লাখ লাখ মানুষ যারা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে না বা করেননি শুধু তাদের জন্যই নয়, যারা শিক্ষা গ্রহণ করছে কিন্তু শিখছে না তাদের জন্যও উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের শিক্ষা আন্দোলনের ডাক দিতে হবে, যাতে সবার জন্য মানসম্মত শিক্ষা ভবিষ্যতের লক্ষ্য না হয়ে বাস্তবে রূপান্তরিত হয়।