নিজস্ব প্রতিবেদক:
মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যখন সারা দেশ উত্তাল। সেই সময়ে অস্ত্র হাতে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন কণ্ঠ যোদ্ধারা। তাদের বলিষ্ঠ কণ্ঠের চড়ম পত্র, কবিতা আর গানে দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হন মুক্তিযোদ্ধারা। সরাসরি মাঠের যুদ্ধে অংশ না নিলেও দেশের জন্য নিজের কণ্ঠে চালিয়ে গেছেন কণ্ঠযুদ্ধ। তারাই আমাদের শব্দ সৈনিক।
দেশের আপামর সু-নাগরিকদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এই শব্দ সৈনিকদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দানের। অবশেষে ২০১৫ সালে এই শব্দ সৈনিকদের দেয়া হয় সে স্বীকৃতি।এরই ধারাবাহিকতায় মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় গড়ে ওঠা স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের আরো ১১ শব্দ সৈনিককে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিলো সরকার।
সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত ২৮৬ জন শব্দসৈনিক মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেলেন।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের ৬৫তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই ১১ জনকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়ে সম্প্রতি গেজেট জারি করা হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ১১ শব্দসৈনিকরা হলেন মোশাদ আলী, মো. জামিরুল মূলক, লায়লা আনজুমান্দ বানু, মৃত আব্দুল ওহাব পাইক, কাঞ্চন বিকাশ তালুকদার, সুরেশ চন্দ্র দাস, তাহের সুলতান, রজ্জব আলী দেওয়ান, মো. সিরাজুল ইসলাম, মো. আশরাফ হোসেন ও কৃষ্ণ সাহা।
এর আগে ৮৭ জন শব্দসৈনিককে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট জারি করে সরকার। গত বছরের ১৫ নভেম্বর ১০৮ জন শব্দ সৈনিক মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পান। ২০১৭ সালের ১০ জুলাই ৫৮ জনকে দেয়া হয় মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি।
১৯৭১ এর ২৫ মার্চ কালরাতে দশজন সাহসী সৈনিকের উদ্যোগে চট্টগ্রামের কালুরঘাটে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্রের কাজ শুরু হয়। ৩০ মার্চ সেখান থেকেই প্রথমবারের মতো শোনা যায় ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়।’ ওইদিন দুপুরে পাকিস্তানি বাহিনীর হামলায় এ বেতার কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
কালুরঘাটের পতনের পর শব্দযোদ্ধাদের দুটি দলের চেষ্টায় আগরতলা ও ত্রিপুরার বিভিন্ন জায়গা থেকে বেতার কেন্দ্রের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া হয়।
ভারত সরকারের সহায়তায় ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠিত হওয়ার পর ২৫ মে মুক্তিযুদ্ধের প্রচারণায় কলকাতার বালিগঞ্জ সার্কুলার রোড থেকে সম্প্রচার শুরু করে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র। অস্ত্র হাতে মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি একাধারে স্বাধীন বাংলা বেতারের শব্দসৈনিকদের কণ্ঠযুদ্ধও চলে স্বাধীনতার আগ পর্যন্ত।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের পরও বেতার কেন্দ্র ১৯৭২ সালের ২ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রচার কার্যক্রম অব্যাহত রাখে।
সান নিউজ/সালি