স্টাফ রিপোর্টার : দেশে হাজার হাজার আইনজীবী থাকলেও ভালো আইনজীবীর সংখ্যা হাতে গোনা বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকি।
তিনি বলেন, আইন পেশায় সহজে টাকা আয়ের অনেক পথ আছে, সেক্ষেত্রে সততার আশ্রয় নিতে হবে। এ দেশে হাজার হাজার আইনজীবী থাকলেও ভালো আইনজীবীর সংখ্যা হাতে গোনা। ভালো আইনজীবী হবেন নাকি বাড়ি-গাড়ির মালিক হবেন সে সিদ্ধান্ত এখন থেকেই নিতে হবে।
আরও পড়ুন : আগুনের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে
শনিবার (৮ এপ্রিল) ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির মঞ্জুর এলাহি মিলনায়তনে আয়োজিত ল ক্লিনিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
আইন পেশার শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, যে শিক্ষার্থী বিচার বিক্রি করবে তাদের বিচারের আসনে বসানো যাবে না। যারা পরিশ্রমী নয় তাদেরও বসানো যাবেনা। বসাতে হবে অবশ্যই সৎ এবং পরিশ্রমীদের।
তিনি বলেন, যারা গ্রাম থেকে বিচার চাইতে আসে এবং বাবা-মা বয়সীদের দিকে দরদ দিয়ে তাকাবে। তাদের সঠিক বিচার দেবে। এভাবেই নিজেদের তৈরি করতে হবে। দেশকে এগিয়ে নেবে।
ফয়েজ সিদ্দিকি বলেন, আইন সততার পেশা। ভালো আইনজীবী হতে হলে ঘোড়ার মতো পরিশ্রম করতে হবে এবং সন্ন্যাসীর মতো সাধনা করতে হবে। সাধনা ছাড়া ভালো আইনজীবী হওয়া যাবেনা। যারা আইন পেশায় সর্বোচ্চ শিখরে গেছেন, এদের বেশিরভাগই নিম্নবিত্ত বা মধ্যবিত্ত পরিবার থেকেই উঠে আসা।
আরও পড়ুন : চট্টগ্রাম-৮ উপনির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২২ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ
প্রধান বিচারপতি বলেন, বর্তমানে আইন পড়েই সহজেই বাড়ি-গাড়ি করার প্রবণতা আইন পেশায় সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা। ভালো আইনজীবী হতে হলে অবশ্যই প্রচণ্ড পরিশ্রমী হতে হবে। সৎ থাকতে হবে। আইন পেশায় সহজে টাকা আয়ের অনেক পথ আছে, সেক্ষেত্রে সততার আশ্রয় নিতে হবে। এ দেশে হাজার হাজার আইনজীবী থাকলেও ভালো আইনজীবীর সংখ্যা হাতে গোনা। ভালো আইনজীবী হবেন নাকি বাড়ি-গাড়ির মালিক হবেন সে সিদ্ধান্ত এখন থেকেই নিতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগ দেশের আইন অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আগামীতেও তারা এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রধান উপদেষ্টা ও প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ফরাস উদ্দিন বলেন, আমরা আইন অনুযায়ী, প্রতি বছর পঞ্চাশজন শিক্ষার্থীকে আইন বিভাগে ভর্তি নিতে পারি। এসব শিক্ষার্থীদের কয়েক ধাপে যাচাই-বাছাই করে ভর্তি নেওয়া হয় শিক্ষার্থী ভর্তিতে অনেক তদবিরের সুপারিশ এলেও সেরা পঞ্চাশজনকে ভর্তি করা হয়।
আরও পড়ুন : আবারও বাড়ল চিনি-ব্রয়লার মুরগির দাম
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এমন একটা সময় অতিবাহিত করছে যেখানে সত্য অনুসন্ধান করা হচ্ছে; এটা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের ইউনিভার্সিটিতে আইন বিভাগে ভর্তিতে শিক্ষার্থীদের এমন আগ্রহ অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। তবে পঞ্চাশ আসনের পরিবর্তে সত্তরটি আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা গেলে ভালো হতো।
তিনি আরও বলেন, আমরা যেমন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকদের কাছে যাই তেমনি ল ক্লিনিক থেকেও শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন মাধ্যমে আইনের ব্যবহারিক দিকগুলো শিখতে পারবে। এতে শিক্ষার্থীরা আইনের সত্য অনুসন্ধান করে বিচারের উপসংহারে যেতে পারবে।
আরও পড়ুন : সীমান্তে শান্তি ছাড়া সম্পর্কের উন্নতি হবে না
অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম এম শহীদুল হাসান এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও সংসদ সদস্য এইচ এন আশিকুর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ একরামুল হকসহ বিভিন্ন ফ্যাকাল্টির ডিন এবং শিক্ষকরা।
সান নিউজ/জেএইচ