নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্যাংক ঋণ পরিশোধের জন্য বিনা সুদে ঋণ সহায়তা চেয়ে ও একই স্থানে পুনরায় ব্যবসা পরিচালনার ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন : সৌরবিদ্যুকেন্দ্র স্থানান্তরের দাবিতে কৃষকদের বিক্ষোভ
বুধবার (৫ এপ্রিল) পুড়ে যাওয়া বঙ্গবাজার মার্কেটের সামনে এ আহ্বান জানান ব্যবসায়ীরা।
গত রোববারও যেখানে রঙিন কাপড়গুলো মোড়ানো ছিল স্বচ্ছ পলিব্যাগে, আজ সেসব ছাই হয়ে পড়ে রয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁক ডাকে যে বাজার ছিল জমজমাট, আজ সেখানে ধ্বংসস্তূপ আর হাহাকার।
আরও পড়ুন : ঝালকাঠি রুটে যাত্রী সংকটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ
পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ব্যবসায়ী দিদার মিয়া জানান, আমার বাড়ির জমি দেখিয়ে ঈদের আগে ব্যাংক থেকে ১৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। অন্যান্য মালের সাথে আগুনে আমার ৩টি দোকানের মালামাল পুড়েছে। আমি এখন নিঃস্ব, পথের ফকির।
ব্যাংকের কিস্তি দেব, তার কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই সরকারে কাছে ব্যাংক ঋণ পরিশোধের জন্য বিনা সুদে ঋণ সহায়তা চাচ্ছি। সেই সাথে একই স্থানে প্রয়োজনে তাঁবু টাঙিয়ে পুনরায় দোকান বসানোর অনুমতি দেওয়া হোক। যাতে করে যেসব ব্যবসায়ীর গুদামে কাপড় আছে তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারেন।
আরও পড়ুন : মার্চে সড়কে ঝড়ল ৫৯২ প্রাণ
১৯৯৭ সাল থেকে বঙ্গবাজারে ব্যবসা করে আসা জুয়েল হোসেন জানান, জীবনের সবকিছু দোকানে বিনিয়োগ করেছি। সব পুড়ে ছাই। এখন চলব কীভাবে জানি না। জমি বন্দক রেখে ২৮ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলাম, সেই টাকা দিতে না পারলে জেলে যেতে হবে। তাই সরকারের কাছে অনুরোধ বিনা সুদে ঋণ দেওয়ার জন্য।
ব্যবসায়ী নূর আলম জানান, বঙ্গবাজার ও ইসলামপুর মার্কেট মিলে আমার ৪ টি দোকান রয়েছে। এখানে ২ টি দোকানে রয়েছে। ঈদকে কেন্দ্র করে ৪৫ লাখ টাকার মালামাল কিনেছি। এর মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংক থেকে ১১ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছি। ঘরে চাল নেই, এখন ঋণের এক টাকা দেওয়ার মতো অবস্থা নেই। সরকারে সহায়তা ছাড়া এখন আমাকে জেলে যেতে হবে।
আরও পড়ুন : ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট চিহ্নিত করে ব্যবস্থা
রাফা গার্মেন্টসের মালিক ফারুক দিদার জানান, আমার দোকানে ১০ লাখ টাকার বেশি মালামাল ছিল। ক্যাশে ছিল নগদ ১ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। সব পুড়ে ছাই হয়েছে। ব্যবসায়ীদের বাঁচাতে সরকারকে এগিয়ে আসার বিকল্প কোনো পথ নেই।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন জানান, বঙ্গবাজারের আগুনে ব্যবসায়ীদের দেড় হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। সরকারের কাছে আমরা সহায়তা চেয়েছি। সরকার আমাদের আশ্বাস দিয়েছে। আশা করছি ক্ষতিপূরণ পাব।
আরও পড়ুন : ক্ষতিগ্রস্তদের কান্না সহ্য করা যায় না
প্রসঙ্গত, মলবার (৪ এপ্রিল) সকাল ৬ টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজার মার্কেটে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের আরও কয়েকটি মার্কেটে। সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ৫ হাজার ব্যবসায়ী।
সান নিউজ/এনজে