নিজস্ব প্রতিবেদক : সাভারের আশুলিয়ায় সিআইডি পুলিশ পরিচয়ে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে তার নিজ বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন : পটুয়াখালীতে শিশু ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ
বুধবার (২৯ মার্চ) ভোর ৪ টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আমবাগান থেকে তাকে তুলে নেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ভোর ৪ টার দিকে ৩টি গাড়িতে মোট ১৬ জন ব্যক্তি শামসুজ্জামানের বাসার সামনে যান। তাদের মধ্যে ৭-৮ জন বাসায় ঢোকেন। সেখানে ১০-১৫ মিনিট অবস্থান করার পর শামসুজ্জামানকে নিয়ে তারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় যান।
আরও পড়ুন : স্কুলছাত্রীর লাশ নিয়ে সড়ক অবরোধ
প্রত্যক্ষদর্শী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, বটতলার নুরজাহান হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন, একজন নিরাপত্তা প্রহরী, শামসুজ্জামানসহ মোট ১৯ জন সেহরি করেন। ভোর পৌনে ৫টার দিকে বটতলা থেকে তারা আবার শামসুজ্জামানের বাসায় যান।
সেখানে উপস্থিত থাকা কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী জানন, আমরা শামসুজ্জামান ভাইকে দেখে তার সাথে কথা বলতে চাই। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা আমাদের অন্য দিকে যেতে অনুরোধ করেন এবং শামসুজ্জামান পুলিশের হাতে গ্রেফতার বলেও জানান তিনি। পরবর্তীতে পুলিশের সাথে কথা বলেন তারা।
আরও পড়ুন : নূরে আলম সিদ্দিকীর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
পুলিশের এসপি পরিচয়ে এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, শামসুজ্জামানকে আমবাগান এলাকা থেকে ধরা হয়েছে।
তাকে আটকের কোনো ওয়ারেন্ট আছে কি না এমন প্রশ্নে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘ধরতে গেলে কি ওয়ারেন্ট লাগবে? আপনার মনে হয় জানা নেই ওয়ারেন্ট লাগে না।’
আরও পড়ুন : কসাইয়ের মরদেহ উদ্ধার
এর কিছুক্ষণ পরই শামসুজ্জামানকে একটি গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তাদের আরও দুটো গাড়ি দ্বিতীয়বার শামসুজ্জামানের বাসার সামনে আসে। এ সময় আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজু মন্ডল সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া শামসুজ্জামানের বাসায় ছিলেন স্থানীয় সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম।
আরও পড়ুন : শিশুর সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে করণীয়
তিনি জানান, বাসায় এসে তারা জব্দ করা মালামালের তালিকা করেন। শামসুজ্জামানকে জামাকাপড় নিতে বলা হয়। এ সময় কক্ষের ভেতরে দাঁড় করিয়ে তার ছবি তোলা হয়। ৫-৭ মিনিটের মধ্যে তারা আবার বের হয়ে যান। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন তল্লাশির সময় ২ বারই উপস্থিত ছিলেন।
শামসুজ্জামানকে তুলে নেওয়ার সময় ঐ বাসার মালিককে ডাকেন পুলিশের এক কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন : ভূমি উন্নয়ন কর শতভাগ অনলাইনে
পুলিশ তাকে বলে, শামসুজ্জামানের করা একটি প্রতিবেদনের বিষয়ে রাষ্ট্রের আপত্তি আছে। তাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে নেওয়া হচ্ছে।
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাজু মন্ডল জানান, সিআইডির একটি দল রাতে আমবাগানের একটি বাসায় অভিযান চালায়। আমি শুধু সাথে ছিলাম। তারা একজনকে আটক করে নিয়ে গেছে। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।
আরও পড়ুন : নিহত ১৩ বাংলাদেশির পরিচয় শনাক্ত
আটকের বিষয়ে সিআইডির ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুর রহমান জানান, আমাদের কোনো টিম এ ধরনের কোনো অভিযান চালায়নি।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোর অনলাইনে করা একটি প্রতিবেদন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। প্রতিবেদনটি করেছিলেন শামসুজ্জামান। তাকে বাসা থেকে তুলে নেওয়ার সাথে তার ঐ প্রতিবেদনের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সান নিউজ/এনজে