নিজস্ব প্রতিবেদক: মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেছেন, এখনো যারা পাকিস্তানের প্রেমে মগ্ন, তাদের এ দেশে থাকার কোনো অধিকার নেই। তারা পাকিস্তানেই চলে যাক।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে
রোববার (২৬ মার্চ) রাজধানীর বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, যারা ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালন করে না, যারা বাংলাদেশের সংবিধান ফেলে দিতে বলে, এর মানে কী? এর মানে ৩০ লাখ শহীদ ও দু লাখ নির্যাতিত মা-বোনের সঙ্গে বেইমানি করা।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, যারা অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিশ্বাস করে না, এখনো যারা পাকিস্তানের প্রেমে মগ্ন, তাদের এ দেশে থাকার কোনো অধিকার নেই। তারা পাকিস্তানপ্রেমী তারা, পাকিস্তানেই চলে যাক।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ ভাইয়ের মৃত্যু
‘আজ একটি কথা শিশুদের জানা উচিত। সেটা হলো-যখন কোনো দেশ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন হয়, যখন কোনো দেশ রাজনৈতিক নেতার নেতৃত্বে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে লাখ লাখ প্রাণের বিনিময়ে লাখ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে স্বাধীন হয় সে দেশের স্বাধীনতা কোনো অজ্ঞাতনামা মেজরের ডাকে ঘোষণা করা হয় না। এটা পৃথিবীতে হয়নি, হবেও না। এ কথাটা তোমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনারা সন্তানদের বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাবেন। এটা আপনাদের নৈতিক দায়িত্ব। এ শিশুরাই দেশপ্রেম, স্বাধীনতার মূল্যবোধ, অসাম্প্রদায়িক চেতনার রাজকারমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। বঙ্গব্ন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলবে। আজ স্বাধীনতা দিবসে এটাই হোক শিশুদের অঙ্গীকার।
তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এমন একটি রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন, যে রাষ্ট্রে শিশুরা হবে শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত। জাতিসংঘ শিশু সনদ প্রণয়ন করে ১৯৮৯ সালে, কিন্তু এর ১৫ বছর আগেই বঙ্গবন্ধু শিশু আইন প্রণয়ন করেন। বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন শিশুরা যদি শিক্ষা, সংস্কৃতি চর্চা এবং খেলাধুলায় যথাযথ সুযোগ পায়, তাহলে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় দেশ ও মানুষকে ভালোবেসে নিজেদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।
আরও পড়ুন: ৬ বিভাগে বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা
ফজিলাতুন নেসা বলেন, শিশুরা যাতে সৃজনশীল, মননশীল ও মুক্ত মনের মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারে সেজন্য বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে ৩৬ হাজার ১৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও লক্ষাধিক শিক্ষকের চাকরি জাতীয়করণ করেছিলেন। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে বই দিয়েছিলেন। প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক ও অবৈতনিক করেছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাও তার পদাঙ্ক অনুসরণ করছে জানিয়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজকের শিশুরাই স্মার্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বিশালতা, ব্যাপকতা, আকাশচুম্বী উচ্চতা, অতলস্পর্শী গভীরতা শিশুদের হৃদয়ে উপলব্ধি ও অনুপ্রেরণা যোগাবে। তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মনে প্রাণে ধারণ করে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক আনজীর লিটন। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনাম।
আরও পড়ুন: বিএনপির মাথা খারাপ হয়ে গেছে
অনুষ্ঠানের শুরুতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও সচিব এবং মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, জাতীয় মহিলা সংস্থা, জয়িতা ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ শিশু একাডেমির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশুদের পুরস্কার প্রদান শেষে বাংলাদেশ শিশু একাডেমির শত শিশুশিল্পী পার্থ বড়ুয়া ও নিশীতা বড়ুয়াকে সঙ্গে নিয়ে ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ গানটি পরিবেশন করে।
সান নিউজ/এনকে