স্টাফ রিপোর্টার: আগামী সাধারণ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের কথা পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আপনাদের একটি জিনিস মাথায় রাখতে হবে যে শেখ হাসিনাকে চাপ দিতে পারে এমন কোনো চাপ নেই। কারণ আমার শক্তি একমাত্র আমার জনগণ।”
আরও পড়ুন : মানবসেবা একটি স্বর্গীয় গুণ
সোমবার (১৩ মার্চ) বিকেলে প্রধানমন্ত্রী গণভবনে তার সাম্প্রতিক কাতার সফর নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, এটা মাথায় রাখতে হবে। কারণ আমার শক্তি একমাত্র আমার জনগণ, আর উপরে আল্লাহ আছেন। আর আমার বাবার আশির্বাদের হাত আমার মাথায় আছে। কাজেই কে কী চাপ দিলো, না দিলো- এতে আমাদের কিছু আসে যায় না। জনগণের স্বার্থে যেটা করার আমরা সেটাই করবো। জনগণের কল্যাণে যে কাজ করার সেটাই করবো।
সরকার প্রধান বলেন, এরকম বহু চাপ তো ছিলই। পদ্মা সেতুর আগে তো কম চাপ দেয়া হয়নি। কোনো একটা দেশের রাষ্ট্রদূত এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে শুরু করে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে টেলিফোনের পর টেলিফোন এসেছে। হেনো তেনো কারণেও টেলিফোন। একজন ভদ্রলোক একটি ব্যাংকের এমডি, তাকে এমডি পদে রাখতে হবে। আর এই এমডি পদে কী মধু, তাতো আমি জানি না।
আরও পড়ুন : রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বস্তিতে আগুন
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইনে নেই, তবু ৭০ বছর বয়স হয়ে গেলেও, এমডি পদে তাকে থাকতে হবে। এতে একটাই হয় যে, এমডি পদে থাকলে বোধ হয় মানি লন্ডারিং করা যায়, এটাই সুবিধা। পয়সা বানানো যায়, পয়সা মারা যায়, গরিবের রক্ত চুষে খাওয়া যায়। তো সেই চাপও কিন্তু শেখ হাসিনা সহ্য করে চলে এসেছে এবং তারপরেও নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু করে দেখালাম সেই চাপে আমাদের কিছু আসে যায় না।
তিনি বলেন, দেশে কতগুলো আইন আছে। সে আইন অনুযায়ী সব চলবে এবং সেটা চলে। আমাদের বিচার বিভাগ স্বাধীন। শ্রমিকদের অধিকার আমরা রক্ষা করি, ট্যাক্স বিভাগ আছে আলাদা। তারা সেটি আদায় করে। কেউ যদি আইন ভঙ্গ করে, শ্রমিকের অধিকার কেড়ে নেয়, শ্রম আদালত আছে। এই ক্ষেত্রে আমার তো কিছু করার নেই সরকার প্রধান হিসেবে। পদ্মা সেতু কিন্তু করে ফেলেছি, এটুকুই সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিলাম।
আরও পড়ুন : বাবুল আক্তারসহ ৭ জনের বিচার শুরু
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ড. ইউনূসের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, এটা বিবৃতি না, এটা একটা বিজ্ঞাপন। যে ৪০ জনের নাম ব্যবহার করা হয়েছে একজন বিশেষ ব্যক্তির পক্ষে, এর উত্তর কী দেবো, জানি না। আমার একটা প্রশ্ন আছে, যিনি এত নামিদামি নোবেল প্রাইজপ্রাপ্ত, তার জন্য এই ৪০ জনের নাম খয়রাত করে এনে বিজ্ঞাপন দিতে হবে কেন? তাও আবার বিদেশী পত্রিকায়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টিরও চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু আমি মনে করি, আমি বিশ্বাস করি, এটা কেউ কিছু করতে পারবে না। হয়তো সাময়িক কিছু একটা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু সেটা মোকাবেলা করবে আমাদের দেশের জনগণই।
আরও পড়ুন : কেএনএ’র গুলিতে সেনাসদস্য নিহত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী এই সংবাদ সম্মেলনে কাতার সফরের বিষয়বস্তু ছাড়াও আগামী নির্বাচন, সংলাপ, কূটনৈতিক সম্প্রদায়ের দৌঁড়ঝাপ, নানামুখী অপতৎরতা, গুজব রটানো, দেশকে অস্থিতিশীল করার প্রচেষ্টা এবং দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে স্থিতিশীল গণতন্ত্রের প্রয়োজনীয়তাসহ সাংবাদিকদের নানামুখি প্রশ্নের জবাব দেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমের সঞ্চালনায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন এবং বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। সূত্র : বাসস।
সান নিউজ/এইচএন