নিজস্ব প্রতিবেদক:
এ বছর পবিত্র ঈদ-উল আযহায় সীমিত আকারে যাতায়াত হলেও সড়ক দুর্ঘটনা কমেনি। দেশের সড়ক-মহাসড়কে ২০১টি দুর্ঘটনায় ২৪২ জন নিহত ও ৩৩১ জন আহত হয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে মোট ২৩৮টি দুর্ঘটনায় ৩১৭ জন নিহত ও ৩৭০ জন আহত হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
এবারের ঈদযাত্রায় সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪ আগস্ট। ওইদিনে ২৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে, ৩২ জন নিহত হন। একদিনে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয় গত ৩১ জুলাই, ওইদিন ৫৫ জন আহত হন।
রোববার (৯ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন-২০২০ প্রকাশ করেন। দুর্ঘটনার কারণ বলতে গিয়ে সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর গণপরিবহন সীমিত আকারে চালু থাকায় ঈদযাত্রায় ব্যক্তিগত পরিবহন ও ছোট যানবাহনে যাতায়াত বেড়েছে। এ কারণেই ব্যক্তিগত পরিবহনের দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বেড়েছে।
মোট হতাহতের তথ্যে জানানো হয়, ২৬ জুলাই থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত ১৩ দিনে ২০১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৪২ জন নিহত ও ৩৩১ জন আহত হন। এই সময়কালে রেলপথে ৪টি ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। একই সময়ে নৌপথে ৩৩টি ছোট-বড় বিচ্ছিন্ন দুর্ঘটনায় ৭৪ জন নিহত ও ৩৯ জন আহত এবং ১৭ জন নিখোঁজ হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় ২০১টি সড়ক দুর্ঘটনার ৮৮টি ঘটেছে মোটরসাইকেলের সঙ্গে অন্যান্য যানবাহনের সংঘর্ষে। যা মোট দুর্ঘটনার ৪৩.৭৮ শতাংশ। অন্যদিকে গাড়িচাপা দেওয়ার ঘটনা ৫২.২৩ শতাংশ।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের সদস্যরা বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় দৈনিক, আঞ্চলিক দৈনিক ও অনলাইন দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ মনিটরিং করে এ প্রতিবেদন তৈরি করে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মোট দুর্ঘটনার ৩২.৩৩ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৪৯.২৫ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ১৩.৪৩ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৩.৯৮ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ০.৯৯ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে সংঘটিত হয়েছে।
সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘মাত্র ১৫ থেকে ২০ শতাংশ যাত্রীর যাতায়াত হলেও সেই তুলনায় এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের মতো ছোট দেশের সীমিত রাস্তায় ছোট যানবাহনের আমদানি জরুরি ভিত্তিতে বন্ধ করে বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ব্যক্তিগত যানবাহন চালকদের প্রশিক্ষণ, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএসহ ট্রাফিক বিভাগের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা, ছোট যানবাহন নিয়ন্ত্রণ ও গণপরিবহনকে বিকশিত করাও জরুরি।’
সান নিউজ/ এআর