নিজস্ব প্রতিনিধি:
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ ক্যাবল সংযোগের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এতে সড়কের ওপরে ঝুলে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ ক্যাবল কেটে দেওয়া হয়। ফলে বিভিন্ন এলাকায় ইন্টারনেট ও ডিস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এই অবস্থায় দুর্ভোগে পড়েন এলাকাবাসীরা। তবে সিটি করপোরেশন বলছে, সড়কের ওপরে এভাবে ঝুঁকিপূর্ণ ক্যাবল ঝুলিয়ে রাখা দণ্ডনীয় অপরাধ।
বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) সিটি করপোরেশনের এই অভিযানের পর বিভিন্ন এলাকায় ইন্টারনেট ও ডিস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এতে ইন্টারনেট নির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসায় বসে অফিস পরিচালনাকারীরা বিপাকে পড়েন।
হঠাৎ করেই এমন অভিযানে দুর্ভোগে পড়তে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। পাশাপাশি কয়েক কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছেন ক্যাবল ও ইন্টারনেট ব্যবসায়ীরা। বিষয়টি নিয়ে ইন্টারনেট ব্যবসায়ীরা মেয়রের কাছে আবেদনও করেছেন।
বাংলাদেশ ইন্টারনেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেন অনু বলেন, ‘আমরা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের এই উদ্যোগকে অবশ্যই স্বাগত জানাই। আমাদেরকে তো সেই সুযোগ করে দিতে হবে। ক্যাবল সংযোগ মাটির নিচে নেওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সেটি এখনো বস্তবায়ন হয়নি। তাহলে আমরা কিভাবে ক্যাবল সংযোগ দেবো?’
তিনি আরও বলেন, ‘কোনও বিকল্প ব্যবস্থা না করে হঠাৎ করেই এভাবে প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকার ক্যাবল নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। তাহলে আমরা কিভাবে চলবো? তাছাড়া করোনাকালে সবাই বাসায় বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে অফিস করছেন। এভাবে ক্যাবল কেটে দেওয়ার কারণে কেউ কাজ করতে পারবে না। আগামীকালও নাকি মতিঝিল এলাকায় ক্যাবল কাটবে। সেখানে অনেক ব্যাংক ও বীমা কোম্পানি রয়েছে। যারা সম্পূর্ণ ইন্টারনেটের ওপর নির্ভারশীল। যদি সেখানেও লাইন কেটে দেওয়া হয় তাহলে ব্যাংকগুলো তাদের সেবা দিতে পারবে না। আমরা মেয়রের কাছে আবেদন করেছি। আশা করি তিনি বিষয়টি বিবেচনা করবেন।’
ডিএসসিসি সূত্র জানিয়েছে, গত ৩০ জুলাই সংস্থার বাজেট ঘোষণা অনুষ্ঠানে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস পরবর্তী এক সপ্তাহের মধ্যে নগরীতে অবৈধ দৃষ্টিকটু ও ঝুঁকিপূর্ণ ক্যাবল অপসারণ করার ঘোষণা দেন। মেয়রের এমন ঘোষণার পর গতকাল বুধবার (৫ আগস্ট) থেকে নগরজুড়ে এসব ক্যাবলের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে ডিএসসিসির ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অভিযানের প্রথমদিন ধানমন্ডির মিরপুর রোডের সিটি কলেজ থেকে ল্যাবএইড হসপাতাল এবং জিগাতলা বাস স্ট্যান্ডের আশপাশের এলাকায় এবং নগর ভবনের চারপাশে এই উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের অভিযানে গুলিস্তানে অবস্থিত সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন উদয়ন মার্কেটের আশেপাশে এবং গোলাপ শাহ মাজার হতে গুলিস্তান আন্ডারপাস পর্যন্ত অবৈধ ক্যাবল ও স্থাপনা উচ্ছেদ পরিচালনা করা হয়।
এদিন সকাল ১০টার কিছু সময় পর ফুলবাড়িয়া মার্কেটের সামনে অবৈধ ক্যাবল সংযোগ উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করেন করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইরফান উদ্দিন আহমদ। তার নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত গুলিস্থানের উদয়ন মার্কেট এলাকায় অভিযান চালায়।
একই দিন করপোরেশনের সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মুনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরের সম্মুখ অংশসহ ধানমন্ডি ৭ নম্বর রোডে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এই সময় সড়কের ওপরে থাকা ক্যাবল সংযোগ অপসারণ করা হয়।
অভিযানের বিষয়ে ডিএসসিসি সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘ডিএসসিসি মেয়রের নির্দেশে আমরা সড়কের ওপর ঝুলে থাকা অবৈধ ডিস ও ইন্টারনেট ক্যাবল অপসারণ শুরু করি। আইন অনুযায়ী এভাবে ক্যাবল ঝুঁলিয়ে রাখা দণ্ডনীয় অপরাধ।’