মাহাদী হাসান
নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজারে পুলিশের গুলিতে সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহতের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়েছে টেকনাফ থানার প্রত্যাহারকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। মামলার দ্বিতীয় আসামী হিসেবে তার নাম নথিভুক্ত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) দুপুরে ওসি প্রদীপ চট্টগ্রামের দামপাড়ায় অবস্থিত চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভাগীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তাকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়। পুলিশের কাছে তিনি স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করতে রাজি হয়েছেন। এরই অংশ হিসেবে তাকে এখন কক্সবাজার নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যেহেতু তার বিরুদ্ধে মামলাটি হয়েছে কক্সবাজারে, সেহেতু তাকে আজ সন্ধ্যায় কক্সবাজারের বিচারিক আদালতে তোলা হবে।
এর আগে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩, টেকনাফের বিজ্ঞ বিচারক তামান্না ফারহার আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। পরে আদালত সেটি টেকনাফ থানাকে নিয়মিত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি মামলাটি তদন্তে বাদী পক্ষের আবেদন অনুযায়ী কক্সবাজারস্থ র্যাব-১৫ এর অধিনায়ককে দেয়ার প্রস্তাবনাও দেয়া হয়েছে।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী কক্সবাজারের সিনিয়র অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মোস্তফা বলেন, মামলাটি রাত ১০টার দিকে থানায় নথিভুক্ত হয়েছে। আইন অনুসারে এ ধরনের মামলায় আলাদা করে গ্রেফতারি পরোয়ানা দেয়ার প্রয়োজন হয় না। হত্যার অভিযুক্ত ধারা থাকায় এসব মামলা নথিভুক্ত হলেই আসামিদের গ্রেফতারের ক্ষমতা রাখেন তদন্ত কর্মকর্তা।
মেজর সিনহার বোনের দায়ের করা মামলায় বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইন্সপেক্টর লিয়াকতকে প্রধান আসামি ও টেকনাফ থানার প্রত্যাহারকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে দ্বিতীয় আসামি করে আরও ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) টুটুল ও কনস্টেবল মোহাম্মদ মোস্তফা।
এদিকে টেকনাফে পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর রাশেদ সিনহা নিহতের ঘটনায় টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রত্যাহারের একদিন আগে নিজেকে ‘অসুস্থ’ দাবি করে ছুটি নেন তিনি। জেলা পুলিশ সেই আবেদন গ্রহণ করে তার ছুটি মনজুরও করেন।
বুধবার পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, বুধবার টেকনাফের ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রত্যাহারের কারণ উল্লেখ করা হয়নি। থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) এবিএম দোহাকে ওসির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৩১ আগস্ট (শুক্রবার) পৌনে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
সান নিউজ/ বি.এম.