সান নিউজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। স্মার্ট সেবা, স্মার্ট শহর, স্মার্ট শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। সেখানে বাংলাদেশ পুলিশকেও স্মার্ট পুলিশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
আরও পড়ুন: সারদা একাডেমিতে প্রধানমন্ত্রী
রোববার (২৯ জানুয়ারি) রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ৩৮তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। স্মার্ট সেবা, স্মার্ট শহর, স্মার্ট শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। সেখানে বাংলাদেশ পুলিশকেও স্মার্ট পুলিশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এজন্য সরকার সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে।
তিনি বলেন, ‘পুলিশ বাহিনীর জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ দেশের মানুষের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। মানুষ এ নম্বরে কল করে দ্রুত সেবা পাচ্ছে। বিপদে তারা পুলিশের তাৎক্ষণিক সেবা পাচ্ছে। ফলে তাদের পুলিশের প্রতি আস্থা বাড়ছে। নারী নির্যাতন রোধ ও সন্ত্রাস দমনেও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা হিসেবে এ সেবা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।’
সাইবার ক্রাইম রোধে পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। মানুষ ডিজিটাল সেবা পাচ্ছে। তবে এর ভালো দিক যেমন আছে, তেমনি অনেক খারাপ দিকও রয়েছে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে একটি গোষ্ঠী সাইবার ক্রাইম, জালিয়াতি, জঙ্গিবাদ বাড়ছে। এসব প্রতিরোধে পুলিশ বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে।’
আরও পড়ুন: পেরুতে বাস খাদে, নিহত ২৪
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার টানা তিন মেয়াদে দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেছে। বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।
তবে বাংলাদেশকে পিছিয়ে দিতে একটি গোষ্ঠী উঠেপড়ে লেগে মন্তব্য করে তিনি বলেন, একটি গোষ্ঠী হত্যা, লুটপাট, অগ্নিসন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের মাধ্যমে বাংলাদেশকে এগিয়ে যাওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশ বাহিনী পেশাদারিত্বের সঙ্গে অগ্নিসন্ত্রাস, বোমাবাজ, জঙ্গিবাদে জড়িতদের প্রতিহতে কাজ করে যাচ্ছে। করোনাভাইরাসের সময়ও পুলিশ বাহিনী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের সেবা করেছে। করোনায় মৃত ব্যক্তিকে যখন তার আত্মীয়-স্বজনরাও দাফন করছিলেন না, তখন পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে গিয়েছিল।
বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। তবে সব সংকট কাটিয়ে আমরা সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। দেশের বিভিন্ন এলাকায় আমরা অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিয়েছি।
আরও পড়ুন: এইচএসসির ফল ৮ ফেব্রুয়ারি
সরকার কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ভর্তুকি দিয়ে সার, বীজ কৃষকদের দ্বারে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এখন অনাবাদী জমিতে চাষাবাদ বাড়াতে হবে। আমাদের দেশের মাটি উর্বর। এ মাটি ব্যবহার করে আমাদের খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। তাহলে আমরা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও খাদ্য রপ্তানি করতে পারবো।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া রাজশাহীর বিভিন্ন আসনের সংসদ সদস্যসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
সারদা পুলিশ একাডেমির অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী রাজশাহীর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন। আজ দুপুর আড়াইটার দিকে রাজশাহীর মহানগরীর ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠে এ জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী মহানগরীজুড়ে কয়েক ধাপে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। জনসভা শেষে আজই ঢাকায় ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: দুপুরে ২৫ প্রকল্প উদ্বোধন
এর আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে হেলিকপ্টারযোগে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে তিনি ৩৮তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। কুচকাওয়াজ পরিদর্শন শেষে তিনি প্রশিক্ষণে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী কর্মকর্তাদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। সবশেষে তিনি নবীন কর্মকর্তাদের মার্চপাস্ট উপভোগ করেন।
সান নিউজ/এসআই