সান নিউজ ডেস্ক : দীর্ঘ পাঁচ বছর পর রাজশাহী আসছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলীয় জনসভায় বক্তব্য দেবেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তার দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ শুনতে অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছেন। তাকে বরণ করে নিতে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে।
আরও পড়ুন : শিশুরা স্মার্ট দেশ গঠনে ভূমিকা রাখবে
রোববার (২৯ জানুয়ারি) সকালে প্রধানমন্ত্রী রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে যাবেন নবীন বিসিএস পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শনে।
এদিন দুপুরে রাজশাহীর মাদরাসা ময়দানে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের জনসভায় অংশ নিয়ে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এই জনসভায় রাজশাহী ও আশপাশের জেলাগুলো থেকে প্রায় সাত লাখ নেতাকর্মীর উপস্থিতি আশা করছেন। ইতিমধ্যে দলের কেন্দ্রীয় অনেক নেতা ও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী রাজশাহীতে এসে পৌঁছেছেন।
আরও পড়ুন : রোববার রাজশাহীতে ২৫ প্রকল্প উদ্বোধন
রাজশাহী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে নতুন সাজে সেজেছে। নেতৃবৃন্দের ব্যানার-ফেস্টুন ও তোরণে ভরে গেছে সারা নগর। শহরটিকে আরও দৃষ্টিনন্দনভাবে সাজানো হয়েছে। সড়ক বিভাজকগুলোকে নতুন করে রাঙানো হয়েছে।
পদ্মাপাড়ের দৃষ্টিনন্দন রাজশাহী শহরটির বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকার দেখা মিলছে।
গত শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে সভার মঞ্চ তৈরির কাজ সমাপ্ত হয়েছে। জনসভার মাঠও প্রস্তুত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ প্রচার করতে শহরজুড়ে লাগানো হয়েছে মাইক। মাঠের পরিধি বড় করতে দক্ষিণ পাশের সীমানা প্রাচীরটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ পাশের ঈদগাহ ময়দানেও নেতাকর্মীরা অবস্থান নেবেন।
আরও পড়ুন : বার কাউন্সিলের সভায় আইনজীবীদের হট্টগোল
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের পক্ষ থেকে মাঠের পাশে অস্থায়ী টয়লেট বসানো হয়েছে। রাজশাহী ওয়াসা পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করছে। মাঠের চারপাশে ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। শহরজুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর টহল চলছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদরাসা ময়দান থেকে রাজশাহীতে বাস্তবায়িত ২৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। এছাড়া ছয়টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। তিনি আয়োজিত জনসভা থেকে উত্তরাঞ্চলের উন্নয়নে নিজের চিন্তার কথা প্রকাশ করবেন বলে ধারণা করছেন দলীয় নেতৃবৃন্দ।
এদিকে রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের যাতায়াত সুবিধায় পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সাতটি বিশেষ ট্রেন ভাড়া দিয়েছে। বিভিন্ন রুট থেকে এসব ট্রেন নেতাকর্মীদের নিয়ে আসবে এবং যাবে।
আরও পড়ুন : ইউনিয়ন পরিষদে কাঙ্ক্ষিত সেবা নিশ্চিতে ৪ প্রস্তাবনা
প্রধানমন্ত্রীর যাতায়াত সুবিধায় আরও একটি ট্রেন ভাড়া দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার।
অসীম কুমার জানান, আমাদের কাছে ১৫দিন আগে ট্রেন চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকটি সিটের যাওয়া-আসা ভাড়া হিসাব করে আগাম টাকা নিয়ে ট্রেন ভাড়া দিয়েছি।
এ পর্যন্ত সাতটি ট্রেন ভাড়া দিয়েছে। আরও একটি ট্রেন দেওয়া হতে পারে। আমরা প্রায় ৩০ হাজার লোক আনা-নেওয়া করবো বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন : পুলিশ দুই ধাপ এগিয়ে থাকার চেষ্টায়
গত শনিবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা উপলক্ষে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে দলের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, এক মাসেরও কম সময়ের প্রস্তুতিতে এই জনসভা হচ্ছে। তারপরও মাদরাসা ময়দানে নেতাকর্মীদের জায়গা দেওয়া সম্ভব হবে না। সে জন্য ময়দানের সঙ্গে ঈদগাহ ময়দানও মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই জনসভায় পাঁচ থেকে সাত লাখ নেতাকর্মী যোগ দেবেন।
তিনি আরও বলেন, মাঠে জায়গা সংকুলান সম্ভব হবে না বলে আশপাশের সব সড়কেও নেতাকর্মীরা থাকবেন। এ জন্য ২০০টি মাইক লাগানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে যেন তারা দেখতে পান, সেজন্য ১২টি এলইডি স্ক্রিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : আমিও খামারি হয়ে গিয়েছি
লিটন আরও জানান, দেড় লাখ পানির বোতল সরবরাহ করা হবে মাঠে। রাজশাহী ওয়াসাও দুটি গাড়িতে পানি নিয়ে প্রস্তুত থাকবে। সকাল ৯টা থেকেই নেতাকর্মীরা মাঠে প্রবেশ করতে শুরু করবেন।
অপরদিকে বিএনপির নেতৃবৃন্দ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই জনসভাতেও মাঠ ভরবে না।
বিএনপি নেতৃবৃন্দের বক্তব্য প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির যেসব নেতারা এসব বলছেন, তাদের রাজশাহীতে আমন্ত্রণ জানাই। দরকার হলে তাদের হেলিকপ্টার ব্যবস্থা করে দেব। তারা এসে দেখবেন।
সান নিউজ/এইচএন