সান নিউজ ডেস্ক : করোনা মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি তেল, খাদ্যসামগ্রী ও পরিবহন ব্যয় আকাশচুম্বী হওয়ায় উন্নয়নশীল দেশগুলো সমস্যায় পড়েছে। সংকট কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রগুলোকে সহায়তা করার জন্য বিশ্ব ব্যাংক এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন : হাসপাতালে ভর্তি পরিকল্পনামন্ত্রী
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে বিশ্ব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ তার কার্যালয়ে (পিএমও) প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎকালে বর্তমান সংকট মোকাবিলায় বৈশ্বিক সহায়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
ট্রটসেনবার্গের সাথে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য লেখক মো. নজরুল ইসলাম।
আরও পড়ুন : কুলিরাও এ ধরনের ভাষা ব্যবহার করে না
বিশ্ব ব্যাংকের পরিচালক বাংলাদেশের উন্নয়নকে বর্ণনা করেন ‘অবিশ্বাস্য’ হিসেবে। উন্নয়নের এ ধারায় ঢাকার পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশের পাশে আছি এবং দেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় আমাদের সমর্থন অব্যাহত রাখব।’
বিশ্ব ব্যাংকের পরিচালক বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ।
শেখ হাসিনা তাকে জানান, বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৫০ মার্কিন ডলার, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮২৪ মার্কিন ডলারে।
আরও পড়ুন : ইভিএম কেনার প্রকল্প স্থগিত
প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশগুলোই মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের জন্য দায়ী। কিন্তু উন্নত দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি যথাযথভাবে পালন করছে না। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে তার সরকার কী করছে তাও সংক্ষেপে বর্ণনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, তার সরকার ব্যাপক বনায়ন, গ্রিন বেল্ট নির্মাণ, দুর্বল মানুষের জন্য টেকসই আবাসন ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পরবর্তী প্রজন্মকে উন্নত জীবন দিতে ‘ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’ বাস্তবায়নের পাশাপাশি নিজস্ব অর্থায়নে জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকার কারণে তার সরকার বিগত ১৪ বছরে দ্রুত বাংলাদেশের উন্নয়ন করতে পেরেছে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন অনুযায়ী দেশবাসীকে একটি সুন্দর ও উন্নত জীবন দিতে অক্লান্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন : ত্রিশালের ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড
সরকার প্রধান বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির আগে জিডিপিতে ক্রমাগত ৮ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন অব্যাহত ছিল বাংলাদেশের। কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি তেল, খাদ্যসামগ্রী ও পরিবহন ব্যয় আকাশচুম্বী হওয়ায় উন্নয়নশীল দেশগুলো সমস্যায় পড়েছে।
মহামারি থেকে বেরিয়ে আসার পর জিডিপি প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেয়েছে এবং এটি বাংলাদেশের উন্নয়নে বাধার সৃষ্টি করেছে যা এখন পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বিশ্ব ব্যাংকের পরিচালক ট্রটসেনবার্গ বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে।
আরও পড়ুন : ব্যাখ্যা দিতে হাইকোর্টে ২১ আইনজীবী
তিনি আরও বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর উচিত নতুন প্রজন্মের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (২১ জানুয়ারি) বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অপারেশনস) অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ তিন দিনের জন্য আনুষ্ঠানিক সফরে বাংলাদেশে আসেন।
সান নিউজ/জেএইচ/এইচএন