সান নিউজ ডেস্ক: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) নিয়ে এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছি না। কারণ আদৌ ইভিএম চাহিদা অনুযায়ী পাওয়া যাবে কি না। কী পরিমাণ নির্বাচন ইভিএমে করতে পারবো সে বিষয়ে কোনো নিশ্চিত সিদ্ধান্তে আমরা উপনীত হইনি।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ নিহত ১৮
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘ইভিএম সম্পর্কেও উনারা (ইউরোপীয় ইউনিয়ন) একটা প্রশ্ন করেছিলেন যে ইভিএম নিয়ে অবিশ্বাস আছে কি না। বলেছি ইভিএম নিয়ে যে অবিশ্বাস ছিল তা অনেকটা কেটে গিয়েছিল। তবে এটাও জানিয়েছি যে ইভিএম নিয়ে এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছি না। কারণ আদৌ ইভিএম চাহিদা অনুযায়ী পাওয়া যাবে কি না। কী পরিমাণ নির্বাচন ইভিএমে করতে পারবো সে বিষয়ে কোনো নিশ্চিত সিদ্ধান্তে আমরা উপনীত হইনি। উনাদের সঙ্গে আমাদের এতটুকুই আলোচনা ছিল। আমার মনে হয় যেহেতু উনারা আসছেন উনারাই ভালো করে বলতে পারবেন।’
আরও পড়ুন: চোখের চিকিৎসাকেও গুরুত্ব দিতে হবে
সিইসি বলেন, ‘উনারা এর আগেও গত বছর জুলাইতে আমাদের এখানে এসেছিলেন। তাদের সঙ্গে তখন নির্বাচন নিয়ে মতবিনিময় হয়েছে। এখন যেহেতু আমাদের ১০ মাস অতিবাহিত হয়েছে। আমরা নির্বাচন বর্ষে উপনীত হয়েছি। তাই উনারা এটাও পিরিয়ডিক্যাল বলে থাকেন, উনারা পুনরায় মতবিনিময় করতে আসছেন। মূলত আমাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি কেমন তা জানতে এসেছিলেন। আমরা উনাদের কাছ থেকে সুনির্দিষ্টভাবে জানতে চেয়েছি নির্বাচনের কোন কোন বিষয় উনারা জানতে চান। উনারা বলেছেন, আমাদের ইলেকটোরাল রোল সম্পর্কে অবহিত করেছি। সংসদীয় আসনের সীমা পুনর্নির্ধারণ, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে আমাদের কোনো উদ্যোগ আছে কি না, এই বিষয়গুলো তাদেরকে জানিয়েছি। আমাদের বর্তমান অবস্থানটা পরিষ্কার করেছি। আমরা জানিয়েছি আমরা প্রস্তুত আছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের যে রোডম্যাপ আছে, সে রোডম্যাপ অনুযায়ী আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে এবং আমরা যথাসময়ে নির্বাচন করবো। আমরা এটাও উনাদেরকে পরিষ্কার করে বলেছি। কিছু কিছু বিষয় এখনো রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো মতপার্থক্য রয়েছে। এই মতপার্থক্য থাকার কারণে এখনো নির্বাচনী পরিবেশটা এখনো সহানুভূতিসম্পন্ন (কনজেনিয়াল) নয়।’
আরও পড়ুন: আবারও বাড়ল গ্যাসের দাম
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমরা আশা করি যে অচিরেই মতপার্থক্য দূর হয়ে যাবে। শেষমেষ সব দল নির্বাচনে আসবে সে বিষয়ে আমরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছি, তবে সে বিষয়ে আমরা নিশ্চিত করে...। আমরা বলেছি যদি নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয় তাহলে চমৎকার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। সেই লক্ষ্যে আমাদের পুরো প্রস্তুতি রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশন থেকে একাধিকবার বলেছি যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনার প্রয়োজন। ব্যাপক অর্থে তাদের মধ্যে সমঝোতা প্রয়োজন, যাতে নির্বাচন সুষ্ঠু পরিবেশে সম্পন্ন হয়। প্রথম থেকেই আমরা এই আবেদন করে আসছি, এখনো করে যাচ্ছি। মতপার্থক্যগুলো রাজনৈতিক ইস্যু, আমাদের জন্য ইস্যু নয়। কাজেই রাজনৈতিক ইস্যুগুলো, যেগুলো নির্বাচনের জন্য অন্তরায় হতে পারে, সেগুলোর সুরাহা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলো সেটা অনুধাবন করতে হবে এবং বুঝতে হবে। তাদেরকেই সেটা নিরাময় (সমাধান) করতে হবে। তাহলেই নির্বাচনটা প্রত্যাশিত মাত্রায় অংশগ্রহণমূলক হবে। সুন্দর, সুষ্ঠু হবে এবং গণতান্ত্রিক চেতনায় যে নির্বাচন প্রত্যাশিত সে নির্বাচনটা ওভাবেই অনুষ্ঠিত হবে।’
সান নিউজ/এমআর