সান নিউজ ডেস্ক: বিশ্ব ইজতেমা শুরু হতে বাকি আর একদিন এরই মধ্যে লাখো মুসল্লির পদভারে ইজতেমা ময়দান জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে, এর প্রভাব পড়েছে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে। সকাল থেকে বিমানবন্দর-উত্তরা হয়ে গাজীপুরগামী সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন: উন্নত বিশ্বের জন্য একসঙ্গে কাজ করি
ইজতেমার প্রভাব এবং গাজীপুর সড়কের একটি লেন বন্ধ থাকার কারণে শুধু উত্তরা-টঙ্গী সড়ক নয়, রাজধানীর মহাখালী, বাড্ডা, রামপুরা, মালিবাগ, মতিঝিল, গুলশান, মিরপুরের একাংশ ও তেজগাঁও এলাকার সড়কে যানবাহনের বাড়তি চাপ দেখা গেছে। চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশকে।
তীব্র যানজটের কারণে সকালে থেকেই সড়কে বের হওয়া সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়েছেন। তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় বসে থাকতে হচ্ছে।
সকালে বিমানবন্দর ও আশপাশের এলাকায় প্রথমে যানজট দেখা দেয়। পরে ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ে পুরো রাজধানীতে।
দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁও ও শিল্পাঞ্চল এলাকায় দেখা যায়, সব লেনেই অতিরিক্ত গাড়ির চাপ। দুই লেনে একসঙ্গে ডাইভারশন করে মাঝে দাঁড়িয়ে যান চলাচল অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছেন ট্রাফিক সদস্যরা। তবুও সড়কে যানবাহনের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে। বিজয় সরণিতে দেখা যায়, অতিরিক্ত সময় লাগছে একেক লেনের গাড়ি ছাড়তে।
আরও পড়ুন: রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে নেপালে বিক্ষোভ
এদিকে রাজধানীর কমলাপুর থেকে নয়াপল্টন, মতিঝিল শাপলা চত্বর থেকে প্রেস ক্লাব, গুলিস্তান গোলাপশাহ মাজার থেকে রায়সাহেব বাজার এবং রাষ্ট্রপতি ভবনের আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট দেখা গেছে। বিকল্প পথ হিসেবে ছোট রাস্তাগুলো ব্যবহার করায় সেগুলোতেও যানজট তৈরি হয়েছে।
বাদ যায়নি পুরান ঢাকার সড়কগুলোও। পুরান ঢাকার ইংলিশ রোড মোড়, বংশাল চৌরাস্তা, গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট, গোলাপশাহ মাজার থেকে পুরানা পল্টন মোড় পর্যন্ত প্রতিটি সিগনালে অতিরিক্ত সময় লাগছে। এসব এলাকায় থেমে থেমে যানবাহন চলাচল করছে। প্রতিটি সিগনালে ১০ থেকে ২০ মিনিট বসে থাকতে হচ্ছে।
বিমানবন্দর এলাকার ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, সকালে কার্যত স্থবির হয়ে পড়া সড়ক এখন সচল হয়েছে। তবে চাপ রয়ে গেছে যানবাহনের।
আরও পড়ুন: ব্রয়লার মুরগিতে ঝুঁকি নেই
রেজওয়ান আহমেদ নামে রামপুরার এক বাসিন্দা মুঠোফোনে জানান, আজকের চিত্র একদম ভিন্ন। বাসা থেকে বের হয়েছিলাম মতিঝিল যাব ভেবে। কিন্তু বাসার নিচ পর্যন্ত রিকশার চাপ। পাঁচ মিনিটের পথ আধা ঘণ্টায় পেরিয়ে পৌঁছেছি রামপুরার মূল সড়কে। তবে সড়কের পরিস্থিতি বুঝে বাসায় ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছি।
উত্তরার জসিমউদদীন এলাকার বাসিন্দা ইমরান হাসান জানান, অনেক দিন ধরেই উত্তরাবাসী ভুগছে যানজটে। আজ বের হয়ে টের পেয়েছি কপালে বাড়তি ভোগান্তি আছে। দুই ঘণ্টায় মহাখালী পৌঁছেছি। অফিসগামী বাসযাত্রীদের দশা আরও বেহাল।
ট্রাফিক উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) কামরুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে দেশ ও বিদেশে থেকে হাজার হাজার মুসল্লি তুরাগ নদীর পাড়ে এসে হাজির হচ্ছেন। এর কারণে সড়কে চাপ বেড়েছে। গাজীপুরে আবার এক লেনে চলছে দুই লেনের গাড়ি। ফলে বিমানবন্দর এলাকা থেকে উত্তরার দিকে বা গাজীপুরের দিকে চলাচলে বাড়তি সময় লাগছে।
তিনি বলেন, এখন সড়কের পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। সকালের মতো যানজট নেই। বিকেল থেকে যেন ফের যানজট পরিস্থিতি তৈরি না হয় সেজন্য আমরা মহাখালীতেই আন্তঃজেলায় চলাচল করা ছোট বড় সব বাস ঘুরিয়ে দিচ্ছি। সেগুলো কিছু মিরপুর হয়ে কিছু মহাখালী থেকেই শ্যামলী-কল্যাণপুর পাঠানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি-জামায়াত মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ
যোগাযোগ করা হলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) নাবিদ কামাল শৈবাল গণমাধ্যমকে বলেন, ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের বহনকারী পরিবহন সড়কে চাপ তৈরি করেছে। এই চাপ ইজতেমা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। সেজন্য এই সড়কে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া চলাচল না করার অনুরোধ জানান তিনি।
সান নিউজ/এসআই