সান নিউজ ডেস্ক : প্রশিক্ষণ নিতে বিদেশে যেতে চান সরকারের ৯ জন জ্যেষ্ঠ সচিব। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা থাকায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনের জন্য পাঠালে তাঁদের নথি ফেরত পাঠিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
আরও পড়ুন : উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
গত ৯ নভেম্বর সরকারি কর্মকর্তাদের সব ধরনের বিদেশভ্রমণ স্থগিতের ঘোষণা করেছে অর্থ বিভাগ। ডলার সাশ্রয় করতে ব্যয় সংকোচন নীতির অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
এছাড়াও প্রশিক্ষণে যে ৯ সচিব বিদেশ যেতে চান তাদের মধ্যে ৬ জন চলতি বছরেই অবসরে যাবেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে, ‘বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সরকারকে শক্তিশালীকরণ প্রকল্প’-এর আওতায় গত দুই অর্থবছরে (২০২০-২১ ও ২০২১-২২) রিফ্রেশার কোর্সে বিদেশে প্রশিক্ষণের জন্য ৩০ জন জ্যেষ্ঠ সচিবকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন : দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে দায়িত্বপালন করবেন
তাদের মধ্যে ১৭ জন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রিফ্রেশার কোর্স সম্পন্ন করেছেন। নানা কারণে প্রশিক্ষণে যেতে পারেননি বাকি ১৩ জন সচিব। তাদের মধ্যে চারজন কর্মকর্তা পারিবারিক ও প্রশাসনিক কারণে প্রশিক্ষণে অংশ নেবেন না বলে প্রকল্প দপ্তরকে জানিয়েছেন। এখন বাকি ৯ জনকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিদেশে প্রশিক্ষণে পাঠানোর চেষ্টা চলছে।
সূচি অনুযায়ী চলতি মাস থেকে জুলাইয়ের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব কর্মকর্তার প্রশিক্ষণ নেওয়ার কথা। এর মধ্যে জুলাই মাসের আগেই অবসরে যাবেন দুজন এবং প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরই অবসরে যাবেন ৪ জন সচিব । বাকি ৩ জন অবসরে যাবেন এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে।
আরও পড়ুন : শুরু হচ্ছে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৩
সাত দিনের এই প্রশিক্ষণে প্রতিজন জ্যেষ্ঠ সচিবদের জন্য ১৫ লাখ টাকা করে বরাদ্দ রয়েছে । ৯ জন কর্মকর্তার জন্য মোট ব্যয় হবে এক কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীনে পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। এখন ২০২৫ সাল পর্যন্ত এই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
তবে সরকারি টাকায় বিদেশে প্রশিক্ষণ বন্ধ থাকায় প্রকল্পের সব কর্মসূচি স্থগিত রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যেই ৯ জন সচিবকে বিদেশে প্রশিক্ষণে পাঠানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : দেশবিরোধী প্রচারণায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা
প্রশিক্ষণের তালিকায় থাকা কর্মকর্তাদের মধ্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আবুল মনসুরের অবসরের তারিখ আগামী ২৯ এপ্রিল, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলমের ৩০ মে, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কে এম আব্দুস সালামের ২৬ সেপ্টেম্বর।
ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব) আবু বকর ছিদ্দিক ৩১ অক্টোবর, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এহছানে এলাহী ২৫ নভেম্বর, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব কামাল হোসেনের অবসরের তারিখ নির্ধারিত আছে ২৯ নভেম্বর।
এছাড়া ২০২৪ সালে অবসরে যাবেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ।
আরও পড়ুন : ফানুস জটিলতায় রাজস্ব কমলো ৩ লাখ
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান, যেসব কর্মকর্তা আগামী ছয় মাস বা এক বছর পর অবসরে যাবেন, তাঁদের জন্য এই প্রশিক্ষণ প্রযোজ্য হবে কি না তা নিয়ে আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি। কারণ কোর্স করলে এর ফিডব্যাক কী আসবে সেটা দেখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যাদের চাকরি অন্তত দুই বছর আছে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যে অর্থ ব্যয় হবে তার একটা ভালো রিটার্ন আসতে হবে। এভাবে কেউ কেউ গতবার গিয়েছিলেন। এবার আমরা যাঁদের সময় বেশি আছে তাঁদের পাঠাতে চাচ্ছি।
সান নিউজ/জেএইচ/এইচএন