সান নিউজ ডেস্ক: এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) কামরুল হাসান জানিয়েছেন, ধর্মের ভুল ব্যাখ্যায় পথভ্রষ্ট হয়ে কথিত হিজরতের নামে গত ২২ ডিসেম্বর ঘর ছাড়েন চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধার হওয়া ৯ তরুণ-তরুণী। তারা নিজেদের ভুল বুঝতে পারার পর পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছে পোষণ করেন। এরপরই পুলিশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) তাদের নিজ নিজ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি নেয়।
আরও পড়ুন: বিদায়ী বছরে সড়কে ঝড়ল ৯৯৫১ প্রাণ
সোমবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলায় র্যাব সদরদপ্তরে কথিত হিজরতের নামে ঘরছাড়া ৯ তরুণ-তরুণীকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এসব তথ্য জানান।
কামরুল হাসান আরও বলেন, গত ২২ ডিসেম্বর ৯ তরুণ-তরুণী কথিত হিজরতের নামে ঘর ছেড়েছিল। তাদের অনেকের পরিবার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন। অনেকে র্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। বিভিন্ন তথ্যের মাধ্যমে আমরা চট্টগ্রাম থেকে নয়জনকে আমাদের হেফাজতে নিই। তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তাদের আমরা কাউন্সিলিং করেছি। পরে সবাই ভুল বুঝতে পেরে পরিবারের কাছে ফেরত যাবার জন্য ইচ্ছা পোষণ করেছে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছিলেন, নিশ্চয় দ্বীন সহজ। দ্বীন নিয়ে যে বাড়াবাড়ি করে সে কখনো জয়ী হতে পারে না। কাজেই তোমরা মধ্যপন্থা অবলম্বন করো, মধ্যপন্থার নিকটে থাকো। কিন্তু সারাবিশ্বে অনেকেই ধর্মের অপব্যাখায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মধ্যপন্থা থেকে সরে এসে উগ্রবাদী চিন্তা-চেতনায় উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। তারা অরাজকতা, বিশৃঙ্খলার মতো কাজ করছে। আমরা এ ধরনের অরাজকতা এড়ানোর জন্য কাজ করছি। র্যাব বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠী, তাদের নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্যদের গ্রেফতারে করে আইনের আওতায় নিয়ে আসছে।
আরও পড়ুন: কারাগারে সশস্ত্র হামলায় নিহত ১৪
এ র্যাব কর্মকর্তা বলেন, এই ধারাকে বেগবান করতে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী র্যাব ডি-রেডিক্যালাইজেশন শুরু করে। আমরা এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ২০ জনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। তাদের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখি, যেন তারা কোনোভাবে পূর্বের যে ভ্রান্ত ধারণা ছিল, সেটিকে পুনরুজ্জীবিত করতে না পারে।
র্যাবের এডিজি আরও বলেন, ২০১৬ সালে হলি আর্টিসান হামলার পর আমরা জঙ্গিদের আইনের আওতায় আনতে পেরেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণে জঙ্গিবাদ স্থবির হয়ে যায়। অভিযানের পাশাপাশি যারা বিভিন্নভাবে বিভ্রান্ত হয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে তাদের ডি-রেডিক্যালাইজেশনের মাধ্যমে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করি। যেন তারা স্বাভাবিক জীবনে ফেরত আসতে পারে।
আরও পড়ুন: এলপিজির দাম কমল
অভিযান আমাদের সামগ্রিক কার্যক্রমের একটি ক্ষুদ্র অংশ উল্লেখ করে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, যাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিচ্ছি তাদের উদ্দেশে বলবো- ব্যক্তিগতভাবে আমরা একজন ব্যক্তি হতে পারি, কিন্তু পরিবারের কাছে আমরা কিন্তু গোটা পৃথিবী। পিতার কাছে একজন সন্তান, স্বামীর কাছে স্ত্রী বা স্ত্রীর কাছে স্বামী অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়গুলো মাথায় রেখে আমরা যদি পরিবারের কাছে থাকতাম তাহলে কখনো ভুল ধারণা থেকে বিপদগামী হতাম না।
সান নিউজ/এসআই