সান নিউজ ডেস্ক : অবশেষে বহুল প্রত্যাশিত স্বপ্নের মেট্রোরেল রাজধানীতে সাধারণ যাত্রী নিয়ে শুরু করেছে তার পথচলা । বৃহস্পতিবার সকালে উত্তরার দিয়াবাড়ী ও আগারগাঁও স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ে।
আরও পড়ুন : অভিনন্দন জানাল মার্কিন দূতাবাস
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দিয়াবাড়ী থেকে সকাল ৮টায় যাত্রী নিয়ে প্রথম ট্রেন আগারগাঁওয়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। অপরদিকে আগারগাঁও থেকে দিয়াবাড়ীর উদ্দেশে প্রথম ট্রেনটি ছাড়ে সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে।
বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৪ মিনিটে মেট্রোরেলের উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পরদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার থেকে সীমিত পরিসরে সাধারণ যাত্রীরা মেট্রোরেলে যাতায়াত করছেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মেট্রোরেল বাংলাদেশের মুকুটে আরেকটি পালক যোগ করেছে এবং এটি উন্নয়নের আরও একটি মাইলফলক।’ এদিন শেখ হাসিনা নিজেই প্রথম যাত্রী হিসেবে ট্রেনে ভ্রমণ করেন।
আরও পড়ুন : স্মার্ট বাংলাদেশের সংযোজন মেট্রোরেল
মেট্রোরেলে ভ্রমণের জন্য বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার মানুষ আগারগাঁও মেট্রোরেল স্টেশনে পৌঁছান।
এদিন সকালে আগারগাঁও মেট্রো স্টেশনে দেখা যায়, মেট্রোরেলে চড়তে ভোর থেকেই লাইনে দাঁড়িয়েছেন যাত্রীরা, এমনকি অনেকেই রাত থেকেও সেখানে অপেক্ষা করেছেন।
দিয়াবাড়ী থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার পথে মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। বুধবার উদ্বোধন হয় উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের, যার দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। প্রাথমিকভাবে এই রুটে মেট্রোরেল চলবে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত।
আরও পড়ুন : মেট্রোরেল উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের জুলাই মাসে ঢাকার মেট্রোরেল প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এটি বাস্তবায়নের প্রাথমিক মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ছিল। পরে সেটি ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
কিন্তু মেয়াদ শেষের আগেই প্রকল্পের একটি অংশ উদ্বোধন করা হল। পুরোদমে চালু হলে মেট্রোরেল ঘণ্টায় ৬০ হাজার ও দৈনিক পাঁচ লাখ যাত্রী পরিবহন করতে পারবে বলে জানা যায়।
মেট্রোরেল বা এমআরটি লাইন-৬ এর উত্তরা উত্তর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত দৈর্ঘ্য প্রায় ২২ কিলোমিটার (২১,২৬ কিলোমিটার)। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা-জাইকার ঋণ থেকে ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয় হচ্ছে।
আরও পড়ুন : স্বপ্নের মেট্রোরেল উদ্বোধন
ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। সংস্থাটি জানিয়েছে, শুরুতে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল। পৌনে ১২ কিলোমিটারের এই পথ মেট্রোরেলে পাড়ি দিতে সময় লাগবে ১০ মিনিট ১০ সেকেন্ড।
উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলার সময় ট্রেনগুলো মাঝপথে কোথাও থামবে না। ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটারের এই পথে ৯টি স্টেশন থাকলেও উত্তরা ও আগারগাঁওয়ের যাত্রী ছাড়া অন্যরা এ সুবিধা পাবেন না।
এদিকে মেট্রোরেলের টিকিট ব্যবস্থাতেও আধুনিকতার ছোঁয়া থাকছে। মেট্রোরেলে যাতায়াতে কোনো কাগজের টিকিট থাকবে না। মেট্রোরেল স্টেশন থেকেই কার্ড কিনে যাতায়াত করতে হবে।
আরও পড়ুন : দুর্নীতিতে জড়িত বিচারকদের ছাড় নয়
প্রথমদিকে স্টেশনে দুই ধরনের কার্ড পাওয়া যাবে। স্থায়ী ও এক যাত্রার (সিঙ্গেল জার্নি) কার্ড। শুরুতে উত্তরা ও আগারগাঁও স্টেশন থেকে কার্ড সংগ্রহ করা যাবে। এ পথের ভাড়া ৬০ টাকা।
তবে ১০ বছর মেয়াদি স্থায়ী কার্ড কিনতে হবে ২০০ টাকা দিয়ে। এই কার্ড দিয়ে যাতায়াতের জন্য প্রয়োজনমতো টাকা রিচার্জ করা যাবে। স্থায়ী কার্ড পেতে নিবন্ধন করতে হবে।
আরও পড়ুন : সীমান্তে গুলিতে ২ বাংলাদেশি নিহত
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) ডিএমটিসিএলের ওয়েবসাইটে নিবন্ধনের লিংক দেওয়া হবে। এদিন থেকে নিবন্ধন করা যাবে। নিবন্ধন করতে নিজের নাম, মা-বাবার নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা পাসপোর্ট নম্বর, মুঠোফোন নম্বর, ই-মেইল আইডি লাগবে।
স্টেশনের টিকিট অফিস মেশিন (টিওএম) থেকে বিক্রয়কর্মীর সহায়তায় কার্ড কেনা যাবে। এছাড়া ভেন্ডিং মেশিন থেকে যাত্রীরা নিজেরাই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।
সান নিউজ/এইচএন