সান নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার রায় ঘোষণা এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যের মাধ্যমে বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি শুরু হয়েছিল সেটা দূর হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন : সোমবার কোথায় কখন লোডশেডিং
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস এ্যাসোসিয়েশনের ৫৯তম বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, উচ্চ আদালতে বিচাপতি খায়রুল হক এবং বিচারপতি তোফাজ্জল সাহেব রায় দিয়েছিলেন বলেই আমরা সেই রায় কার্যকর করতে সক্ষম হয়েছিলাম। আদালতের রায়ের মধ্য দিয়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার ধারাটা প্রবর্তন করা সম্ভব হয়েছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, আমরা আইনের শাসন নিশ্চিত করব। মানুষের বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করব। কারণ, আমরাই ভুক্তভোগী। সুষ্ঠ বিচার পাওয়ার অধিকার আমরা হারিয়েছিলাম।
আরও পড়ুন : দৌলতদিয়ায় ফেরি চলাচল ব্যাহত
আমরা যখন ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছিলাম অনেক বাধা এসেছিল জানিয়ে তিনি বলেন, সেই বাধা অতিক্রম করে সেই অর্ডিনেন্স বাতিল করে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের হত্যার বিচারের কাজ শুরু করি।
তিনি আরও বলেন, বিচারের রায় যেদিন দেওয়ার কথা সেদিন বিএনপি-জামায়াত হরতাল ডেকে ছিল। যাতে জজ সাহেব কোর্টে যেতে না পারেন, রায় দিতে না পারেন।
তাছাড়া তার ওপরে অনেক জুলুম অত্যাচার করা হয়েছিল। তিনি অত্যন্ত সাহসী একজন ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি কোনো কিছু মানেননি। সেই রায় গোলাম রসুল সাহেব দিয়ে যান।
আরও পড়ুন : মেট্রোরেলের চালু হচ্ছে দুই স্টেশন
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ২০০৯ সালে যখন সরকার গঠন করি। বিচার কার্যক্রম আবার শুরু হয় তখনও অনেক বাধা ছিল। আল্লাহর রহমতে বিচার করে সেই রায় আমরা পেয়েছি, এবং রায় কার্যকর করা হয়েছে। কিছু এখনও ফিউজিটিভ আছে। অনেকের খবর আমরা জানি।
সরকারপ্রধান বলেন, ডিসেম্বর মাস বিজয়ের মাস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা এদেশের বিজয় পেয়েছি, স্বাধীনতা পেয়েছি, স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছিলাম।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়েও অনেক বাধা-বিঘ্ন হয়। শুধু দেশে না, অনেক বড় বড় দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা এই বিচারের অনেক বাধা দেওয়ার চেষ্ট করে।
আরও পড়ুন : সব সম্প্রদায়ের জনগণের উন্নয়নই প্রধান লক্ষ্য
আবার কেউ কেউ তো সরাসরি আমার সঙ্গে টেলিফোনে কথাও বলে। এই ধরনের চাপ কিন্তু সব সময় ছিল, এসব কিছু ছাড়িয়ে আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে পেরেছি। এটা আমদের জন্য বড় সৌভাগ্যের বিষয়।
তিনি আরও বলেন, সারা বিশ্ব যখন সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদে একেবারে বিধ্বস্ত, বাংলাদেশে কিন্তু একটাই ঘটেছে। সেই হোলি আর্টিসান।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, যারা বিচার করবে তাদের নিরাপত্তা, তাদের কাজ করার সুবিধা যাতে হয় সেদিকে আমাদের বিশেষ দৃষ্টি আছে। সুপ্রিম কোর্টে বিজয় ৭১ ভবন, সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামসহ অন্যান্য অবকাঠামো করে দিয়েছি। আমরা সেটাই চাই যে, যারা বিচার করবেন এবং যারা বিচার চাইতে আসবে, সকলে যেন একটা নিরাপদ ও সুষ্ঠ পরিবেশ পায়।
আরও পড়ুন : ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে
সুন্দর পরিবেশ পেলে নিজস্ব চিন্তা করারও একটা সুযোগ থাকে। সঠিক চিন্তা করেই বিচার করতে হয়। সুষ্ঠ বিচার কার্য্য সম্পন্ন করা কঠিন কাজ। সেই কাজটা যেন সহজ হয় সেই ব্যবস্থা করা আমাদের দায়িত্ব।’
সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার।
সান নিউজ/এমএ/এইচএন