নিজস্ব প্রতিনিধি:
চুয়াডাঙ্গা: সড়ক দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনির নিহতের ঘটনায় মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি বাসচালক জামির হোসেন মারা গেছেন।
আজ শনিবার (১ আগস্ট) ঈদের দিন বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এর আগে শুক্রবার (৩১ জুলাই) হৃদরোগে আক্রান্ত হলে কাশিমপুর কারাগার থেকে হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে ।
জামির হোসেন চুয়াডাঙ্গার শহরতলি দৌলতদিয়াড় স্কুলপাড়ার মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে। তিনি চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স পরিবহনের চালক ছিলেন।
চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্সের স্বত্বাধিকারী মজিবুল হক খোকন জানান, যাবজ্জীবন হওয়ার পর থেকেই জামির কাশিমপুর কারাগারে সাজাভোগ করছিলেন। শুক্রবার কারাগারেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। শনিবার সকালে তার একমাত্র জামাতা মোবাইল ফোনে জানান, জামির মৃত্যুবরণ করেছেন। তার মরদেহ নিজ বাড়িতে ফেরত আনার জন্য প্রক্রিয়া চলছে।
২০১১ সালের ১৩ আগস্ট দুপুর সাড়ে ১২টায় দুর্ঘটনাটি ঘটে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঘিওর উপজেলার পুকুরিয়া এলাকায়। তারেক মাসুদদের বহনকারী মাইক্রোবাসের সঙ্গে চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্সের পরিবহনের ওই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ ও প্রখ্যাত সাংবাদিক মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহত হন। ওই দিনই ঘিওর থানার এসআই লুৎফর রহমান দুর্ঘটনাজনিত কারণে মৃত্যুর মামলাটি করেন। পরে মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান ঘিওর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফ উল ইসলাম। দুর্ঘটনার পরদিন চালক জামির হোসেনকে ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করে মেহেরপুর জেলার চৌগাছা গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে। একই বছরের ১৭ নভেম্বর জামিনে মুক্ত হন তিনি।
২০১২ সালের ২১ মার্চ মানিকগঞ্জ জেলা দায়রা জজ আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। অভিযোগপত্রে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, সাধারণ জখম, গুরুতর জখম, অবহেলার কারণে মৃত্যু ঘটানো ও মালামাল ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগ আনা হয়। ২০১২ সালের ১০ অক্টোবর আদালতে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচারকাজ শুরু হয়। ২০১৩ সালের ১৩ জানুয়ারি মামলাটি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তরিত হয়।
দুর্ঘটনার প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর পর ২০১৭ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয় জামির হোসেনকে। এরপর থেকে তিনি কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে সাজাভোগ করছিলেন।
সান নিউজ/ এআর