রিজার্ভ মানুষের কল্যাণে খরচ করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
জাতীয়

রিজার্ভ মানুষের কল্যাণে খরচ করতে হবে

সান নিউজ ডেস্ক : রিজার্ভের টাকা সব সময় খরচ হতে থাকে এবং এটা রোলিং করে। টাকা নিয়ে বসে থাকলে হবে না, দেশের মানুষের কল্যাণে খরচ করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আরও পড়ুন : ৩০০০ গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন

সরকার প্রধান বলেন, বর্তমানে একটা কথা আসছে যে রিজার্ভ নাই। রিজার্ভের টাকা নাকি সব চুরি হয়ে গেছে। আমরা ’৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় আসি তার আগে সরকারে ছিল বিএনপি। তখন রিজার্ভ ছিল মাত্র ২ দশমিক ৬ বা ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

তিনি আরও বলেন, ২০০৯ সালে যখন সরকার গঠন করি তখন রিজার্ভ ছিল ৫ বিলিয়ন ডলার। এটাকে আমরা প্রায় ৪৮ বিলিয়নের কাছাকাছি নিতে সক্ষম হই। এরপর করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়।

সোমবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে প্রধানমন্ত্রী দেশের ৫৯টি জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠানের পর দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুন : ফরিদপুরে ৫ জনের যাবজ্জীবন

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এ শপথ অনুষ্ঠান হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, করোনাকালীন যোগাযোগ ও আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ছিল। ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমেছিল। এ অবস্থায় কোনো আমদানি না হওয়ার কারণেই কিন্তু রিজার্ভ জমা হয়।

করোনা-পরবর্তী আমদানির ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়ে। শিল্প-কারখানা থেকে শুরু করে চাষাবাদের বিভিন্ন যন্ত্রপাতিও কিনে আনতে হয়। সে কারণে আমাদের টাকা খরচ করতে হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে বড় কথা ভ্যাকসিন কেনার ক্ষেত্রে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ। ভ্যাকসিন তৈরির শুরুতেই বারোশো কোটি টাকা জমা দিই, যেন আমরা আগে ভ্যাকসিন পেতে পারি। আমি চেয়েছি আগে ভ্যাকসিন কিনে এনে দেশের মানুষকে বাঁচাতে।

আরও পড়ুন : মন্ত্রিসভার ৬ নির্দেশনা

শুধু ভ্যাকসিন কিনে আনলেই তো হয় না, তা প্রয়োগে অন্যান্য সরঞ্জামাদিও লাগে, অনেক কিছুই লাগে। সেগুলো আমরা প্লেন পাঠিয়ে পাঠিয়ে বিদেশ থেকে আনিয়েছি। তাতে টাকা খরচ হয়নি! টাকা তো খরচ করতে হয়েছে। এভাবে কিন্তু আমরা মানুষের কল্যাণে রিজার্ভের টাকা ব্যবহার করেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, করোনা যেতে পারেনি- শুরু হলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। তারপর নিষেধাজ্ঞা পাল্টা নিষেধাজ্ঞা। বিশ্বজুড়ে প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেল। চাল, গম, জ্বালানি ও ভোজ্যতেলের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে।

শুধু দাম বেড়েছে তা নয়, পরিবহন খরচও অনেক বেড়ে গেছে। ২০০ ডলারে আমরা যে গম কিনতাম সেটা এখন ৫০০ ডলারে কিনতে হয়। কিন্তু আমরা তো আমাদের দেশের মানুষকে কষ্ট দিতে পারি না। যেখানে যত দামই লাগুক আমরা কিন্তু কিনে নিয়ে আসছি, মানুষকে দিচ্ছি।

আরও পড়ুন : শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড দিতে হাইকোর্টের রুল

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৫০ লাখ মানুষকে আমরা মাত্র ১৫ টাকা কেজিতে চাল দিচ্ছি। আর যারা একেবারেই অপারগ তাদের তো বিনা পয়সায়ও খাবার দিচ্ছি। বিনামূল্যে ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছি। ৮ বিলিয়ন ডলার আমরা আলাদাভাবে বিনিয়োগ করেছি।

আমাদের বিমানের অবস্থা কী ছিল, আমরা সব থেকে আধুনিক বিমান কিনে এনেছি। এগুলো কিন্তু আমাদের টাকায় রিজার্ভের টাকা দিয়েই করেছি, অন্যের টাকা কিন্তু ধার নিইনি।

আমরা জানতাম, ধার নিলে সুদসহ শোধ দিতে হতো। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নিয়েই কিনেছি। এখন বিমান আমাদের টাকা শোধ দিচ্ছে। দুই পার্সেন্ট ইন্টারেস্টসহ আমরা টাকা ফেরত পাচ্ছি।

আরও পড়ুন : নতুন সময়সূচিতে চলবে অফিস

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রফতানি খাতেও আমরা প্রণোদনা দিচ্ছি, সেখানেও টাকার দরকার হচ্ছে। রপ্তানি থেকে কিন্তু আমাদের লোকেরাই লাভবান হচ্ছে। এভাবে আমরা ৮ বিলিয়ন খরচ করেছি। এখন চড়া দামে খাদ্য, গ্যাসসহ সব পণ্য কিনতে হচ্ছে। টাকা নিয়ে বসে থাকলে তো হবে না। টাকা দেশের মানুষের কল্যাণে খরচ করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে যারা কথায় কথায় বলে রিজার্ভ গেল কোথায় তাদের জন্য একটু বলতে চাই, বিএনপির নেতা তারেক জিয়ার সাজা হয়েছে কেন, অর্থপাচার মামলায় তার সাজা হয়েছে। এই অর্থপাচার মামলা কিন্তু আমাদের আবিষ্কার না, এটা করেছে আমেরিকা এবং আমেরিকার লোকজন (এফবিআই) বাংলাদেশে এসে তার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিয়ে গেছে।

সেই মানিলন্ডারিং মামলায় তার সাত বছরের সাজা এবং ২০ কোটি টাকা জরিমানা হয়। এছাড়া দশ ট্রাক অস্ত্র চোরা চালান মামলা ও একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলারও সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক জিয়া।

আরও পড়ুন : ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়তা অব্যাহত

সাজাপ্রাপ্ত আসামি একটি দলের নেতা হয় কী করে। এ গ্রেড হামলা নিয়েও বিএনপি অপপ্রচার চালিয়েছে। এদের চরিত্রই অপপ্রচার চালানো। এদের কথায় মানুষ যেন বিভ্রান্ত না হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট এবং জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট নামে ট্রাস্ট করে বিদেশি ফান্ড পেয়েছে, বিদেশ থেকে টাকা এসেছে। একটা টাকাও কোনো এতিম পায়নি। কেউ পায়নি। সব টাকা তার ব্যাংকে জমা। সে কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। সেসব মামলায় সে সাজাপ্রাপ্ত।

তারপর তার ভাই, বোন ও ভগ্নিপতি আমার কাছে এসে সাজা স্থগিত করার অনুরোধ করেন। আমি খালেদা জিয়াকে বাসায় থাকতে দিয়েছি।

কিন্তু এখানেও আপনাদের মনে রাখতে হবে আমার মা-বাবা-ভাই হত্যার সঙ্গে জিয়া জড়িত, এটা স্পষ্ট। গ্রেনেড হামলায় আইভী রহমানসহ আমাদের নেতাকর্মী হত্যায় খালেদা-তারেক জড়িত।

আরও পড়ুন : ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে সংসদ নির্বাচন

সরকারপ্রধান বলেন, আমরা কিন্তু মানুষের ওপর প্রতিশোধ নিতে যাইনি। ২০০১ সালের পর আমাদের নেতাকর্মীরা যেভাবে নির্যাতিত হয়েছে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আমরা কিন্তু কারও ওপর নির্যাতন করিনি।

আমি তাকে (খালেদা জিয়া) যেখানে এভাবে সুযোগ দিয়েছি অথচ সে কী আচরণ করেছে আমার সঙ্গে। তার ছেলে কোকো যে টাকা পাচার করেছিল, সে টাকাও কিন্তু আমরা কিছু অংশ ফেরত আনতে পেরেছি। কোকো মারা গেছে আর তারেক জিয়ার সাজা হয়েছে। সেই তারাই আবার অর্থপাচারের কথা বলে কোন মুখে।

শেখ হাসিনা বলেন, কোকো মারা যাওয়ার পর আমি সান্ত্বনা দিতে গিয়েছিলাম। দুঃখের কথা বলে যাই, সবকিছু ভুলে সন্তানহারা মা ঠিক আছে আমি যাই, একটু সান্ত্বনা দিয়ে আসি। আমাকে ঢুকতে দেওয়া হলো না, দরজা বন্ধ।

আরও পড়ুন : ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে সংসদ নির্বাচন

আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কন্যা, আমাকে কত অপমান করেছে আপনারা ভেবে দেখেন। তারপরও আমি খালেদার প্রতি দয়া দেখিয়েছি, তাকে বাড়িতে থাকতে দিয়েছি। কারণ, আমরা তো তাদের মতো এতো ছোট মন নিয়ে আসিনি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন স্থানীর সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম প্রমুখ।

সান নিউজ/এইচএন

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

টিভিতে আজকের খেলা

প্রতিদিনের মতো আজ শনিবার (১২ এপ্রিল) বেশ কিছু খেলা প্রচারিত হবে টেলিভিশনের পর...

মার্চ ফর গাজা: সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কানায় কানায় পূর্ণ

ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের বর্বর হামলার প্রতিবাদে...

চারুকলায় আগুনে পুড়ল ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’

নববর্ষ শোভাযাত্রা উদযাপনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে বানানো দু...

বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ৩০২৮ জন

বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকা প্রকাশ করেছে ফোর্বস ম্যাগাজিন। এ তালিকায় এ বছর স্...

ফেনীর দাগনভূঞায় চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য শাহ...

কারাগারে বসে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন এক শিক্ষার্থী

জয়পুরহাট জেলা কারাগার থেকে সিরাজুল ইসলাম (১৮) নামে...

সরকার কোন মেডিক্যাল কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়নি-মহাপরিচালক

সরকার দেশের কোন মেডিকেল কলেজ বন্ধ করতে চায় না বা ব...

অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারে সেলিম এর নগদ অর্থ, খাবার প্রদান

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ৫নং বালার হাট ইউনিয়নের ক...

ফেনীর দাগনভূঞায় চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য শাহ...

বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ৩০২৮ জন

বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকা প্রকাশ করেছে ফোর্বস ম্যাগাজিন। এ তালিকায় এ বছর স্...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা