সান নিউজ ডেস্ক: রাজধানীতে অভিনব কৌশলে প্রতারণার ফাঁদ পেতে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে চক্রের মূল হোতাসহ ৫ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শনিবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে বিএনপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
আরও পড়ুন: সচিবকে সতর্ক করলেন সেতুমন্ত্রী
শুক্রবার (১১ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর মিরপুর ও উত্তর থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্তরা হলেন, মো. কবির প্রকাশ মিজান উকিল (৪৭), মো. পিন্টু খান (৫৪), মো. সাইফুল ইসলাম (২৭), কেয়া রহমান (৩০) ও সাদিয়া ইসলাম মৌ (৩০)।
মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম থানায় দায়ের করা একটি প্রতারণার মামলার তদন্তকালে এ চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়। পরে অভিযুক্তদের অবস্থান শনাক্ত করে শুক্রবার রাতে রাজধানীর মিরপুর ও উত্তর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চক্রের মূল হোতাসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে ডিবি। এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৩টি ব্রিফকেস, একটি বড় লাগেজ, আকাশী রংয়ের মোটা কাগজ কেটে তৈরি (টাকা সদৃশ) বান্ডিল ৩৬টি, মোবাইল সেট ১২টি ও ২০টি সিম উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: ঢাকায় আসছেন সৌদি উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, ৬৪ জেলায় এ চক্রের ৬৪ জন প্রতারক রয়েছে। তারা প্রতারণার কৌশল হিসেবে, শিল্পপতি সমাজসেবকসহ নানা পরিচয় দিত। চক্রটি নারীদের দিয়ে টার্গেট করা ব্যক্তিকে অভ্যর্থনা প্রদান, বিভিন্ন দামি রেস্টুরেন্টে খাবার পরিবেশন করাত। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে টার্গেট করা ব্যক্তির বিশ্বাস অর্জন করত চক্রটি।
ডিবি প্রধান বলেন, প্রতারক চক্রটি প্রতারিত ব্যক্তিদের সামনে একটি নাটক মঞ্চস্থ করত। সেখানে তিন মাসের মধ্যে জুয়া খেলে ৫ থেকে ১০ কোটি টাকা জেতার প্রতারণা করে। অভিযুক্তরা বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করত। মো. কবির প্রকাশ মিজান উকিল নিজেকে শিল্পপতি ও সমাজসেবক হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় কারখানা স্থাপন, ক্লিনিক, মোবাইল কোম্পানির টাওয়ার বানানোর জন্য লোভ দেখিয়ে আগত ব্যক্তিদের আকৃষ্ট করত।
আরও পড়ুন: সরকার এক টাকাও অপচয় করেনি
মো. পিন্টু খান নিজেকে শিল্পপতির পিএস হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রতারিত ব্যক্তিদের রিসিভ করত এবং কবির প্রকাশের অফিসে নিয়ে আসত। মো. সাইফুল ইসলাম জেলা পর্যায়ে দালাল এজেন্ট নিয়োগ করে স্থানীয় ধনী ব্যক্তিদের টার্গেট করে ঢাকায় নিয়ে আসত। কেয়া রহমান প্রতারণার পরিকল্পনা ও ক্লিনিক ব্যবসার নাটক সাজিয়ে কবির প্রকাশকে সহায়তা করত। সাদিয়া ইসলাম মৌ অফিস স্টাফ হিসেবে প্রতারিত ব্যক্তিদের আপ্যায়ন ও খাবার পরিবেশন করত। তারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে মানুষকে টার্গেট করে হাতিয়ে নিত লাখ লাখ টাকা।
তিনি আরও বলেন, আপনারা অতি লোভে বা বেশি মুনাফার আশায় পরিচিত বা অপরিচিত কাউকে বিশ্বাস করে অর্থ প্রতারক চক্রের হাতে তুলে দেবেন না। প্রতারক চক্র সর্বদাই সাধারণ মানুষকে ঠকানোর জন্য নিত্য নতুন বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে।
সান নিউজ/কেএমএল