সান নিউজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীন করেছিলেন একটি আদর্শ নিয়ে, স্বপ্ন নিয়ে। দেশের প্রতিটি মানুষের অন্ন জোগাবে, তাদের উন্নত জীবন দেবে। এদেশের শিশুরা উন্নত শিক্ষা নিয়ে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলবে। ভবিষ্যত বংশধররা যেন একটা উন্নত জীবন পায় সেটাই ছিল জাতির পিতার একমাত্র লক্ষ্য। কিন্তু সেটা শুরুতেই যেন চরম আঘাত পেল।
আরও পড়ুন: বিএনপি রাজনীতির জন্য বিষফোঁড়া
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) শেখ রাসেল দিবস-২০২২ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ রাসেলকে নিয়ে বলতে গিয়ে বড় বোন শেখ হাসিনা বলেন, আজকে শেখ রাসেলের বয়স হতো ৫৯ বছর। হয়ত সে জীবনে অনেক বড় হতে পারত। তার জীবনের একটা স্বপ্ন ছিল। ছোটো বেলা থেকে বলত সেনা অফিসার হবে। বেঁচে থাকলে হয়ত আমরা দেখতাম, কিন্তু তাকে বাঁচতে দেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুন: ধর্ষণের পর হত্যা, ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
শেখ হাসিনা বলেন, একটা ছোট্ট শিশু, একটা ফুল না ফুটতেই ঝরে গেল। ঝরে গেল চরম নির্মমতার মধ্য দিয়ে, ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে।
শেখ রাসেলের জন্মের সেই দিনের আনন্দঘন স্মৃতি রোমন্থন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাসেল জন্মের পর আমিই প্রথম তাকে কোলে নিয়েছিলাম। আমাদের সেই আনন্দ খুব বেশিদিন টেকেনি। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রচারণা চালানোর সময় চট্টগ্রাম থেকে আব্বা ঢাকায় ফিরলেন। রাসেলকে দেখলেনও। তার পরপরই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন শেষ হওয়ার পরই তাকে মুুক্তি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত, নিহত ৬
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৬৬ সালে জাতির পিতা যখন ছয় দফা ঘোষণা দিলেন, সেই ছয় দফা নিয়ে সারা বাংলাদেশ ঘুরে বেড়ালেন, প্রচার-প্রচারণার জন্য। ফেব্রুয়ারি মাসে ঘোষণা দিলেন, মে মাসেই তাকে গ্রেফতার করা হলো। তখন ছোট্ট রাসেল কিছুই বুঝতো না, সে এতোটাই ছোট ছিল। বাবার সঙ্গে দেখা হতো কারাগারে, সেখানে গেলে সে আসতে চাইতো না। তাকে অনেক কষ্ট করে ভুলিয়ে-ভালিয়ে নিয়ে আসতে হতো।
শেখ হাসিনা বলেন, তারপর যখন আস্তে আস্তে কথা বলতে শুরু করলো, বাবাকে বাবা বলে ডাকবে...। আমার মা বলতো আমাকেই আব্বা বলে ডাক। আবার কারাগারে গেলে আব্বাকে আব্বা বলতো, সঙ্গে সঙ্গে মাকেও আব্বা বলতো। আমরা মাসে দুইবার কারাগারে যাওয়ার সুযোগ পেতাম। যেদিন কারাগার থেকে আসতাম সেদিন রাতে সে ঘুমাতো না, কিছু বলতেও পারতো না, শুধু কান্নাকাটি করতো। আমরা ভাই-বোনরা তার কাছে ছুটে আসতাম। এমনই পিতৃস্নেহ বঞ্চিত হয়ে সে বড় হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাসের ধাক্কায় ২ যুবক নিহত
এর আগে প্রযুক্তিনির্ভর গুণগত শিক্ষার মানোন্নয়নে সারা দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বা সমমানের সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫ হাজারটি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে প্রতিটি সংসদীয় আসনে একটি করে মোট ৩০০টি শেখ রাসেল স্কুল অব ফিউচারেরও উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হয় শেখ রাসেলের জীবন নিয়ে নির্মিত ত্রিমাত্রিক অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র ‘আমাদের ছোট রাসেল সোনা’-এর ট্রেলার। যার চিত্রনাট্য রচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই। এটি শিগগিরই মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ৫০তম প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়
তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ প্রবর্তিত ‘শেখ রাসেল পদক ২০২২’ দেওয়া হয় অনুষ্ঠান থেকে। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বিজয়ীদের হাতে পদক তুলে দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, ক্রীড়া, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু-কিশোর, শিল্পকলা ও সংস্কৃতি, ক্ষুদে প্রোগ্রামার, ক্ষুদে উদ্ভাবক, ক্ষুদে লেখক, শিক্ষা, ডিজিটাল স্কুল, এবং ডিজিটাল এক্সিলেন্স ১০ ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে পদক দেওয়া হয়।
সান নিউজ/এনকে