আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
চীনে রহস্যময় করোনাভাইরাস নামে নতুন ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। গত দুইদিনে ১৩৯ জন চীনা নাগরিক এই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে চীন।
গত ডিসেম্বরে ইউহান শহরে প্রথম যে সংক্রমণের ঘটনা ঘটে, স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ তাকে করোনাভাইরাস বলে শনাক্ত করেন। তার পরই এটা চীনে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ছে।
বাংলাদেশেও এর প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন কতৃপক্ষ। বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছেন।
ঢাকার রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট বা আইইডিসিআর বলছে, তারা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করেছে, কারণ চীন থেকে আসা সব বিমান এই বিমানবন্দর দিয়েই ওঠানামা করে।এছাড়া অন্যান্য বিমান বন্দরেও চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানায় সংস্থাটি।
গত সপ্তাহে সিঙ্গাপুর, হংকং, সান ফ্রান্সিসকো, লস এঞ্জেলস এবং নিউইয়র্কে চীন থেকে আগত ফ্লাইটগুলোর যাত্রীদের স্ক্রিনিং করা হয়। বাংলাদেশেও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্ক্রিনিং শুরু করার কথা জানান কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, থাইল্যান্ড এবং জাপানের পর দক্ষিণ কোরিয়ায়ও একই ভাইরাসে সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। এখন পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা দু’শো ছাড়িয়ে গেছে। মারা গেছে অন্তত তিন জন।
বাংলাদেশে এখনো করোনাভাইরাসে কেউ আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করেন আইইডিসিআর এর পরিচালক ডাঃ সেবরিনা। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য-কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
বিমানবন্দরে স্থাপিত হেলথ ডেস্কে এসব কর্মীদের পাঠানো হচ্ছে। যেসব ফ্লাইট চীন থেকে আসছে সেসব ফ্লাইটের যাত্রীদের স্ক্যানিং করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, যারা শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা, জ্বর,কাশি, গলাবাথ্যা এসব নিয়ে দেশে ঢুকছেন তাদের চেক করা হচ্ছে।
এরই মধ্যে আইইডিসিআর চারটি হটলাইনও খুলেছে। তারা বলছে, উল্লেখিত লক্ষ্মণগুলো কারো মধ্যে দেখা গেলে এসব হটলাইনে ফোন করে জানানোর জন্য।
নম্বরগুলো হলো: ০১৯৩৭১১০০১১ - ০১৯৩৭০০০০১১ - ০১৯২৭৭১১৭৮৪ - ০১৯২৭৭১১৭৮৫
আইইডিসিআর বলছে, কারো শরীরে এর কোন লক্ষণ দেখা গেলে তারা নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে দেখবেন। এছাড়া বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন, এয়ারলাইন্সগুলো এবং এভিয়েশনে কাজ করা সবাইকে সচেতনও করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
বিমানবন্দরে যে এলইডি মনিটর রয়েছে সেখানে রোগের লক্ষণগুলো জানানো হচ্ছে প্রতিনিয়ত। কারো যদি এই লক্ষণগুলো দেখা যায় সঙ্গে সঙ্গে হেলথ ডেস্কে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে।
ভাইরাসের জিনগত বৈশিষ্ট্য (জেনেটিক কোড) বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে, মানুষকে আক্রান্ত করা অন্য করোনাভাইরাসের তুলনায় সার্সের সাথে এর বেশি মিল রয়েছে।
এ নিয়ে ডা. সেবরিনা ফ্লোরা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আমাদের সাঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। তারা আশঙ্কা করছে এ ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে পারে।
তিনি আরো বলেন, যখন শ্বাসতন্ত্রের অসুখ হয় তখন হাঁচি, কাশি থেকে আরেক জন সংক্রমিত হতে পারে এটা ভেবে নিয়েই আমরা আমাদের প্রস্তুতি নিচ্ছি। কারণ যদি একজন থেকে আরেকজনের মধ্যে ছড়ায় তাহলে অতি দ্রুত সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। সুত্র:বিবিসি
সান নিউজ/সালি