সান নিউজ ডেস্ক : সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ইরশাদ হোসেন রাশেদকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন : শেখ হাসিনাকে পরাজিত করা সম্ভব নয়
এ ঘটনায় রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ইরশাদ হোসেন রাশেদ।
মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার সংবাদ মাধ্যমকে জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ওসি মওদুত হাওলাদার বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ইরশাদ হোসেন রাশেদ আজ শাহবাগ থানায় একটি জিডি করেছেন।
আরও পড়ুন : মিয়ানমারের সাংগাইয়ে ৩০ সেনা নিহত
সেখানে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সংবাদ মাধ্যমকে আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ইরশাদ বলেন, ‘নোটিশ পাঠানোর পর ওইদিন রাত থেকেই বিভিন্ন দেশি-বিদেশি নম্বর থেকে কল আসছে। রিসিভ করলে বিভিন্ন গালিগালাজ করা হচ্ছে।
এরপর থেকে অপরিচিত নম্বর থেকে আসা ফোন রিসিভ করছি না। গতকাল সোমবার (২২ আগস্ট) রাত ২টা পর্যন্ত কল আসে।’
আরও পড়ুন : নির্বাচনে ১৫০ আসনে ইভিএম
তিনি আরও বলেন, আজকে আদালতে আসার সঙ্গে সঙ্গে একটি নম্বর থেকে কল আসে। রিসিভ করার সঙ্গে সঙ্গে ফোনের ওপাশ থেকে বলে- ‘সমস্যাটা দ্রুত সমাধান করবি কি না? গুলি করে মেরে ফেলবো তোরে।’
আমি তাকে জিজ্ঞেস করি, কে আপনি? উত্তরে ওপাশ থেকে বলা হয়- ‘গুলি করে মাইরা ফেলাই’ এটাই তার নাম।
এরপর দুপুরের দিকে শাহবাগ থানায় গিয়ে তিনি নিরাপত্তার স্বার্থে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন বলে জানান এ আইনজীবী।
আরও পড়ুন : দেশে এলো ফাইজারের ১ কোটি টিকা
প্রসঙ্গত, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের দেওয়া বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়। এ অবস্থায় বক্তব্যের বিষয়ে মন্ত্রীকে গত ২১ আগস্ট লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশ পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়। অন্যথায় আইনি প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হবে বলে জানানো হয়।
ডাক ও রেজিস্ট্রারযোগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে এ নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ইরশাদ হোসেন রাশেদ।
নোটিশে বলা হয়েছে, মন্ত্রী হিসেবে শপথ ভঙ্গ হয়েছে আপনার। পাশাপাশি এটা বাংলাদেশের সংবিধানের ওপর আঘাত, তথা সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত। এ অবস্থায় পদে থাকার বৈধতা হারিয়েছেন আপনি।
আরও পড়ুন : মার্কিনিদের ইউক্রেন ত্যাগের নির্দেশ
এতে আরও বলা হয়েছে, গত ১৮ আগস্ট চট্টগ্রামে এক অনুষ্ঠানে আপনি বলেছেন, ভারতের কাছে অনুরোধ করেছেন, যে কোনো মূল্যে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখা দরকার। আপনার এ বক্তব্যের মাধ্যমে শপথ ভঙ্গ করেছেন। আপনি সংবিধানকে লঙ্ঘন করেছেন।
দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত করেছেন। এ অবস্থায় নোটিস পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আপনাকে পদত্যাগ করতে হবে, অন্যথায় আপনার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবো।
গত ১৮ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শহরের জে এম সেন হলে এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুই দেশেরই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। এটি সম্ভব যদি শেখ হাসিনার সরকারকে সমর্থন দেয় ভারত।
আরও পড়ুন : আদালতের নতুন সময়সূচি
ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারতবর্ষের সরকারকে সেটা করতে অনুরোধ করেছি।
এদিকে দেশজুড়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্যে সমালোচনার ঝড় ওঠে। খোদ আওয়ামী লীগও এ বক্তব্যের কারনে বিব্রত।
অপরদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কূটনীতিকরা বলছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী যা বলেছেন তা দেশের জন্য অসম্মানজনক।
সান নিউজ/এইচএন